আগামীকাল গ্রুপ-সি’তে নিজেদের শেষ ম্যাচে মুখোমুখি হবে গ্রুপের দুই শীর্ষ দল ফ্রান্স ও ডেনমার্ক। ইতোমধ্যেই প্রথম দুই ম্যাচে শতভাগ জয় নিয়ে নক আউট পর্ব নিশ্চিত করেছে লেস ব্লুজরা। অন্যদিকে দুই ম্যাচে এক জয় ও এক ড্র নিয়ে টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে থাকা ডেনমার্কের পরবর্তী রাউন্ড নিশ্চিত করতে হলে এক পয়েন্টই যথেষ্ঠ।
ফ্রান্সের বায়ার্ন মিউনিখ মিডফিল্ডার কোরেনটিন টলিসো মনে করেন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচের ভুল থেকে তার শিক্ষা নেয়া উচিত। আর সেটা কাটিয়ে ডেনমার্কের বিপক্ষে আরেকটি সুযোগ তিনি আশা করছেন। সকারুজদের বিপক্ষে ফ্রান্সের ২-১ গোলে জয়ের প্রথম ম্যাচটিতে ৭৮ মিনিট পর্যন্ত মাঠে ছিলেন টোলিসো। কিন্তু পেরুর বিপক্ষে ১-০ গোলের জয়ের পরের ম্যাচটিতেই ব্লেইস মাতোদির কাছে তাকে মূল একাদশের জায়গা ছেড়ে দিতে হয়েছে। তবে এই দুই ম্যাচে জয়ী হয়ে দিদিয়ের দেশ্যমের দল ইতোমধ্যেই শেষ ১৬ নিশ্চিত করে ফেলেছে। মস্কোতে অনুষ্ঠিত গ্রুপের শেষ ম্যাচে অবশ্য আবারো দলে ফিরে আসার ব্যপারে আশাবাদী টোলিসো। এ সম্পর্কে তিনি বলেছেন, ‘অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে নিজের পারফরমেন্স আমি পর্যবেক্ষন করেছি। ব্লেইস আসার পরে যে পার্থক্য হয়েছে সেটাও আমি ধরতে পেরেছি। তাকে খেলানোর যৌক্তিকতা আছে। যে কারনে পেরুর বিপক্ষে আমি খেলতে পারিনি। কিন্তু এখনো সব কিছু শেষ হয়ে যায়নি। এখনো আমার বিশ^কাপে খেলার আশা আছে। আবারো সুযোগ পেলে কোচকে দেখাতে পারবো আমি কি করতে পারি।’
দেশ্যম যদি আবারো তার মধ্যমাঠ নতুন করে সাজানোর পরিকল্পনা করেন তবে টোলিসোর ফিরে আসার সম্ভাবনা রয়েছে বলেই ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। তবে কাজানের মত তাকে স্বাধীনভাবে খেলার সুযোগ দিতে হবে। টোলিসো বলেছেন, ফ্রান্স দলে আর আগেও আমি যেভাবে খেলেছি তেমনই আমাকে খেলার স্বাধীনতা দিতে হবে। বিশ^কাপ একটি গুরুত্বপূর্ণ টুর্নামেন্ট। আমি গুরুত্বের সাথে আমার খেলা খেলতে চাই। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচের পরে আমি বুঝতে পেরেছি কি করা উচিত, কি উচিত নয়।
মঙ্গলবারের ম্যাচে আরো একজন খেলোয়াড় সুযোগের অপেক্ষায় আছেন, ড্যানিশ স্ট্রাইকার কাসপার ডলবার্গ। রাশিয়ায় এখন পর্যন্ত মাঠে নামতে পারেননি আয়াক্সের এই স্ট্রাইকার। কিন্তু ড্যানিশ সমর্থকদের প্রত্যাশা ফ্রান্সের বিপক্ষে অন্তত তরুন এই স্ট্রাইকার যেন মাঠে নামার সুযোগ পায়। ২০ বছর বয়সী ডলবার্গও খেলতে না পারার জন্য হতাশা প্রকাশ করেছেন। তবে এজন্য তিনি বেশ চালাকির সাথেই কোচ আজে হারেইদির সমালোচনা করা থেকে বিরত থেকেছেন। ড্যানিশ গণমাধ্যমে তিনি বলেছেন, ‘ম্যাচ খেলতে সুযোগ না পেলে অবশ্যই সকলে হতাশ হবে। বিষয়টা এমন নয় যে আন্দ্রেস করনেলিয়াসের থেকে মূল একাদশে সুযোগ পাওয়াটা আমার প্রাপ্য ছিল। অবশ্যই আমি সুযোগের অপেক্ষায় আছি।’
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দারুন এক গোল করার পাশাপাশি পেরুর বিপক্ষে একমাত্র গোলে এসিস্ট করে ক্রিস্টিয়ান এরিকসেন আবারো ডেনমার্কের হয়ে জ¦লে ওঠার অপেক্ষায় আছে। ফ্রান্সের শক্তিশালী মধ্যমাঠ এরিকসেনকে কিভাবে প্রতিহত করে সেটাই এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। টটেনহ্যামের এই তারকা ডেনমার্কের হয়ে শেষ ২০ ম্যাচে ১৭ গোল করেছেন।
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে ফ্রেঞ্চ মূল একাদশে ছিলেন না চেলসি তারকা অলিভার জিরুদ। কিন্তু পেরুর বিপক্ষে দেশ্যমের আক্রমনভাগের মূল দায়িত্বে ছিলেন তিনি। ডেনসের বিপক্ষে ফ্রান্সের সর্বশেষ তিনটি গোলের তিনটিই করেছেন জিরুদ।
এর আগে বিশ^কাপে দুইবার মুখোমুখি হয়েছেন ডেনমার্ক ও ফ্রান্স। ১৯৯৮ সালে ফ্রান্স ২-১ ব্যবধানে জিতলেও ২০০২ সালে ডেনমার্ক জিতেছিল ২-০ গোলে। ১৯৮৪ ইউরো, ১৯৯২ ইউরো, ১৯৯৮ বিশ^কাপ, ২০০০ ইউরো ও ২০০২ বিশ^কাপের পওে এই নিয়ে ষষ্ঠ বড় কোন টুর্নামেন্টে এই দুই দেশ একে অপরের মোকাবেলা করছে। এর আগে পাঁচটি টুর্নামেন্টের তিনটিতেই জয়ী হয়েছিল ফ্রান্স। ডেনমার্কেও বিপক্ষে শেষ সাতটি ম্যাচের মধ্যে ৬টিতেই জয়ী হয়েছে ফ্রান্স। ২০০২ সালের বিশ^কাপে একমাত্র জয়টা আসে ডেনমার্কের। এই ম্যাচে ডেনমার্ক যদি কোন পেনাল্টি পায় তবে প্রথম দল হিসেবে ১৯৯৮ সালের পরে একটি গ্রুপের সবকটি দল গ্রুপ পর্বে পেনাল্টি উপহার পাবে।
এর আগে একবারই ফ্রান্স তাদের গ্রুপ পর্বের তিনটি ম্যাচেই জয়লাভ করেছিল। ১৯৯৮ সালের ঐ টুর্নামেন্টে ফ্রান্স শিরোপাও দখল করে।
সূত্র: বাসস