গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে অনিয়ম, জাল ভোট, কারচুপির অভিযোগ আনায় বিএনপির সমালোচনা করেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, “দুর্ভাগ্যজনক বিষয় হলো, বিএনপি তাদের পুরোনো কৌশল ‘জিতলে আছি, হারলে নাই’- এই নীতি থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি।”
আজ বুধবার সকালে ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগের সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।
গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। ‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি’ হওয়ায় নয়টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হয়। পরে আজ বুধবার সকালে এ সিটির ৪২৫টির মধ্যে ৪১৬টি কেন্দ্রের ফল নিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা রকিব উদ্দিন মণ্ডল জাহাঙ্গীর আলমকে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করেন।
ফলাফল ঘোষণার কিছু পরেই বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলের নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন, ‘গাজীপুরে নির্বাচনের নামে তামাশা করেছে সরকার ও নির্বাচন কমিশন। নতুন নতুন রূপে ভোট ডাকাতির ফর্মুলা আবিষ্কার করছে, যাতে ফলাফল নিজেদের পক্ষে নিয়ে ক্ষমতা পাকাপোক্ত করতে পারে। আমরা গাজীপুরের ভোটের ফলাফল ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছি। এবং নির্বাচন বাতিল করে পুনরায় নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছি।’
অন্যদিকে গাজীপুর সিটি করপোরেশনে বিএনপির প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার দাবি করেছেন, ‘একজন উচ্চ আদালতের বিচারক দিয়ে একটি গণশুনানি হোক। এই গণশুনানিতে কী বেরিয়ে আসে, গোটা জাতি তথা বিশ্ববাসী দেখুক।’
হাসান উদ্দিন সরকারের এই দাবিকে ‘আজগুবি’ বলে মন্তব্য করেছেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘বিএনপি মহাসচিব ও অন্য দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ, জনগণের রায়কে গ্রহণ না করে ও নির্বাচনের ফলাফলকে প্রত্যাখ্যান করে, মিথ্যা, বানোয়াট ও আজগুবি তথ্য জাতির সামনে উত্থাপন করছে। আজকে আবার শুনলাম, তারা আদালতকে বলেছে গণশুনানি করার জন্য। সব আজগুবি বিষয়গুলো, উদ্ভট বিষয়গুলো, আজকে বিএনপি আবিষ্কার করছে।’
গাজীপুর নির্বাচন স্বাধীন, অবাধ ও নিরপেক্ষ হয়েছে দাবি করে আওয়ামী লীগের এই নেতা আবারও বলেন, ‘গাজীপুরে একটা সম্প্রীতির পরিবেশ উপস্থিত ছিল, সবাই দেখেছে। গাজীপুর নগরীতে একটা উৎসবমুখর পরিবেশ ছিল। প্রার্থীরা স্বাধীনভাবে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পেরেছে। বিভিন্ন কেন্দ্রে বিপুলসংখ্যক ভোটারের উপস্থিতি প্রমাণ করে, এই নির্বাচন কতটা অবাধ হয়েছে, ফ্রি এবং ফেয়ার হয়েছে।’
ওবায়দুল কাদের আরো বলেন, ‘নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য তারা দেউলিয়া হয়ে মাঠে নেমেছে। এবং আজকে এটাও বলে দিতে পারি, অচিরেই দেশের জনগণের আস্থা না পেয়ে, জনগণের সমর্থন পেতে ব্যর্থ হয়ে, এখন শুধু আদালত নয়, অচিরেই তারা বিদেশিদের দ্বারে ধরনা দেবে। নালিশ করার জন্য, জনগণের কাছে নালিশ করতে গিয়ে সাড়া না পেয়ে, তারা এখন বিদেশিদের দ্বারস্থ হবে। এ বিষয়ে সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই। আমরা আগেই বলেছি, যাদের এ দেশের জনগণের প্রতি আস্থা নেই, তারাই বিদেশিদের কাছে নালিশ করতে যায়। এবং যেটা তারা বারবার করেছে, এটাই আবার করবে, এটাই আমরা মনে করি। এটা সবাই জানে।’
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে লিখিত বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘গাজীপুরে একটা সম্প্রীতির পরিবেশ উপস্থিত ছিল, সবাই দেখেছে। গাজীপুর নগরীতে একটা উৎসবমুখর পরিবেশ ছিল। প্রার্থীরা স্বাধীনভাবে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পেরেছে। বিভিন্ন কেন্দ্রে বিপুল সংখ্যক ভোটারের উপস্থিতি প্রমাণ করে, এই নির্বাচন কতটা অবাধ হয়েছে, ফ্রি এবং ফেয়ার হয়েছে।’