নাইজেরিয়ার সঙ্গে ২-১ গোলের জয়ে ’ডি’ গ্রুপের রানার্স-আপ হয়ে পরের রাউন্ডে গেল আর্জেন্টিনা । শেষ ষোলোতে যেতে জিততেই হবে, তাকিয়ে থাকতে হবে ক্রোয়েশিয়া-আইসল্যান্ডের ম্যাচের দিকেও। এই জটিল সমীকরণ মাথায় রেখে ‘ডি’ গ্রুপের শেষ ম্যাচে নাইজেরিয়ার বিপক্ষে চাপে নয়, আর্জেন্টিনার শুরুটা হয়েছিল উজ্জীবিত। লিওনেল মেসির ১৪ মিনিটের গোলে ১-০ তে এগিয়ে থেকে প্রথমার্ধ শেষ করে তারা। তবে বিরতির পর পেনাল্টি থেকে গোল করে তাদের হতাশ করে নাইজেরিয়া। খেলা শেষ হওয়ার ৪ মিনিট আগে রোহোর দুর্দান্ত গোলে ২-১ গোলে জিতে শেষ ষোলোতে গেল আর্জেন্টিনা।
সেন্ট পিটার্সবার্গে প্রথম আক্রমণ চালায় নাইজেরিয়া। কিন্তু সুবিধা করতে পারেনি। ৯ মিনিটে আহমেদ মুসার শটটি গোলবারের উপর দিয়ে চলে যায়। চার মিনিট পর হাভিয়ের মাসচেরানো পা থেকে বল হারালে কেলেচি আইহিনাচো আর্জেন্টিনার রক্ষণকে একটু চাপে ফেলেছিলেন। তবে মাসচেরানোই ভুল শুধরে নেন তাকে প্রতিহত করে।
পরের মিনিটে আকাশি-নীল উদযাপনে মেতে ওঠে গ্যালারি। এভার বানেগার লম্বা ক্রস বক্সের কিছুটা দূর থেকে পেয়ে ঊরু দিয়ে বল নিয়ন্ত্রণে নেন লিওনেল মেসি। তারপর ডান পায়ের চমত্কার কোনাকুনি শট নেন তিনি, নাইজেরিয়ার গোলরক্ষক ফ্রাঙ্কিস উজোহার ধরাছোঁয়ার বাইরে দিয়ে বল দূরের পোস্ট দিয়ে জড়ায় জালে।
বিশ্বকাপে এটি ছিল মেসির ষষ্ঠ গোল, আর রাশিয়ার এই আসরে শততম গোল।
২৭ মিনিটে আরেকটি গোলের সুযোগ পায় আর্জেন্টিনা। মেসির বাড়িয়ে দেওয়া বল নিয়ে হিগুয়েইন ঢুকে পড়েছিলেন প্রতিপক্ষের বক্সে। কিন্তু সামনে এগিয়ে এসে তাকে বাধা দেন উজোহা। ৩২ মিনিটে দারুণ মুহূর্ত তৈরি করেছিলেন আনহেল দি মারিয়া। দ্রুত গতিতে তিনি বক্সে ঢোকার আগে বালোগান তাকে ফাউল করে হলুদ কার্ড দেখেন।
এই ফ্রি কিক থেকে মেসির শট বাঁ দিকে ঝাপিয়ে পড়ে ঠেকান। বল উজোহার হাত ছুঁয়ে পোস্টে আলতো স্পর্শ করে লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। প্রথমার্ধ আর্জেন্টিনা শেষ করেছে ১-০ গোলে এগিয়ে থেকে।
কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে নাইজেরিয়া সমতা ফেরায়। ৪৯ মিনিটে এতেবোর কর্নার কিক বক্সে ঢোকার মুহূর্তে মাসচেরানো ফাউল করেন বোলোগানকে। ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি দেন পেনাল্টির সিদ্ধান্ত, মাসচেরানো দেখেন হলুদ কার্ড। ১২ গজ দূর থেকে লক্ষ্যে শট নেন ভিক্টর মোসেস। ৫১ মিনিটে তার ধীর গতির নিচু শটের বিপরীত দিকে ঝাপিয়ে পড়েন আরমানি, বল জড়ায় জালে। সমতা ফেরানো আনন্দে মাতে আফ্রিকানরা।
নাইজেরিয়া দারুণ সুযোগ পায় ৭২ মিনিটে। আর্জেন্টিনার রক্ষণের ফাঁক থাকার সুযোগ নিয়ে বক্সের বেশ দূর থেকে শট নেন এনদিদি। তার জোরালো শট ক্রসবারের উপর দিয়ে চলে যায়। চার মিনিট পর আরেকটি পেনাল্টির শঙ্কায় পড়ে আর্জেন্টিনা। মার্কোস রোহো ডিবক্সের মধ্যে বল বিপদমুক্ত করেন, কিন্তু তার মাথা ছুঁয়ে হাতে লাগে। ভিএআর দেখে রেফারি সিদ্ধান্তে পৌঁছান, ইচ্ছা করে বল হাত দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করেননি রোহো।
৮১ মিনিটে রোহোর পাস বক্সের মধ্যে পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি হিগুয়েইন। তার শট অনেক উঁচু দিয়ে চলে যায় মাঠের বাইরে। দুই মিনিট পর আরমানি দারুণ সেভে নাইজেরিয়াকে এগিয়ে যেতে দেননি।
৮৬ মিনিটে মেরকাদোর নিখুঁত ক্রস বক্সের মাঝখান থেকে প্রথম শটেই জালে পাঠান রোহো।