বিশ্বকাপে আসার আগে ২১ ম্যাচে মাত্র একটি হার ব্রাজিলের। ৪৭ গোল দিয়েছে, আর খেয়েছে মাত্র ৫টি। যদিও রাশিয়াতে দুই ম্যাচে ৪ পয়েন্ট পেয়েছে তারা। তারপরও ষষ্ঠ শিরোপার মিশনে গ্রুপের শেষ ম্যাচে সার্বিয়ার বিপক্ষে ফেভারিট হিসেবে মাঠে নামছে তিতের দল।
বুধবার রাত ১২টায় মস্কোর স্পার্তাক স্টেডিয়ামে সার্বিয়ার মুখোমুখি হবে ব্রাজিল। ম্যাচটি সরাসরি সম্প্রচার করবে চ্যানেল নাগরিক, মাছারাঙা, সনি টেন ২ ও টেন ৩।
আগের ম্যাচের উজ্জীবিত দল নিয়ে সার্বিয়াকে মোকাবিলা করবে ব্রাজিল। কোস্টারিকার বিপক্ষে ২-০ গোলে জেতা দলকেই মাঠে নামাবেন তিতে। দলে আছে দুটি ইনজুরির ধাক্কা। ঊরুর সমস্যা নিয়ে এই ম্যাচে খেলবেন না দানিলো, হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটে বাদ পড়েছেন দগলাস কোস্তা।
এদিকে দল নিয়ে খানিকটা দোলাচলে সার্বিয়া। কারণ আবার হলুদ কার্ড দেখলে শেষ ষোলোতে বাদ পড়ার শঙ্কায় দলের ৬ জন খেলোয়াড়। কিন্তু কোচ ম্লাদেন ক্রাস্তাজিচ দূরের ভাবনায় নেই। অন্য ম্যাচের ওপর নির্ভর করতে না চাইলে শেষ ষোলোতে যেতে জিততেই হবে তাদের।
দুই দলের জন্যই ‘ই’ গ্রুপের শীর্ষে ওঠার কিংবা দ্বিতীয় স্থানে থাকার সুযোগ আছে, শঙ্কা আছে বাদ পড়ারও।
পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে ১-১ গোলের ড্রয়ে বিশ্বকাপ শুরু করেছিল। তবে কোস্টারিকার বিপক্ষে গোলরক্ষক কেইলর নাভাস কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছিল তাদের টিকে থাকার আশা। শেষ পর্যন্ত দ্বিতীয়ার্ধের ইনজুরি সময়ে ফিলিপে কৌতিনিয়ো ও নেইমারের গোলে জিতে শীর্ষে উঠেছে ব্রাজিল।
অন্যদিকে আলেক্সান্দার কোলারোভের ফ্রি কিকে কোস্টারিকাকে ১-০ গোলে হারিয়ে বিশ্বকাপে দারুণ সূচনা করেছিল সার্বিয়া। স্বাধীন দেশ হিসেবে প্রথমবার শেষ ষোলোতে ওঠার দ্বারপ্রান্তে ছিল তারা সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচে। আলেক্সান্দার মিত্রোভিচের গোলে এগিয়ে গিয়েছিল তারা। কিন্তু গ্রানিত ঝাকা ও জারদান শাকিরির গোলে হেরে সেই স্বপ্ন পূরণ হয়নি সার্বদের।
গ্রুপের শেষ ম্যাচে সার্বিয়ার বিপক্ষে ব্রাজিল অপেক্ষাকৃত কম চাপে। কারণ একটি ড্রই তাদের জন্য যথেষ্ট। ৪ পয়েন্ট নিয়ে তারা সবার উপরে। এক পয়েন্ট পেলেই নকআউট পর্বের টিকিট পাবে পাঁচবারের চ্যাম্পিয়নরা। তারা যদি জেতে এবং দ্বিতীয় স্থানে থাকা সুইজারল্যান্ড কোস্টারিকাকে হারায়, তাহলে দুই দলই পাবে সমান ৭ পয়েন্ট করে। ব্রাজিল এক গোলের ব্যবধানে এগিয়ে। তখন তারাই হবে গ্রুপসেরা। অবশ্য ব্রাজিল ও সুইজারল্যান্ড সমান ব্যবধানে নিজেদের ম্যাচ জিতলে গ্রুপ সেরা নির্ধারণ হবে ডিসিপ্লিনারি রেকর্ডে। ব্রাজিলের হলুদ কার্ড তিনটি, আর সুইজারল্যান্ডের চারটি। যদি দুই দল একই ব্যবধানে হারে তখনও দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান নির্ধারণ করা হবে কার্ডের হিসাবে।
আর শেষ ষোলোতে যেতে সার্বিয়ার জন্য সহজ সমীকরণ তাদের জিততে হবে ব্রাজিলের বিপক্ষে। তবে ড্রও যথেষ্ট হবে যদি আরেক ম্যাচে কোস্টারিকার কাছে এক গোলের বেশি ব্যবধানে হারে সুইজারল্যান্ড। সার্বিয়াও গ্রুপসেরা হতে পারে, কিন্তু ব্রাজিলকে হারাতে হবে এবং আশা করতে হবে সুইজারল্যান্ড যেন কোস্টারিকার কাছে হারে।
নোভগোরদে একই সময়ে গ্রুপের অন্য ম্যাচে সুইজারল্যান্ড মুখোমুখি হবে আগেই বিদায় নেওয়া কোস্টারিকার। সুইসদের জন্যও ড্র যথেষ্ট হতে পারে, যদি ব্রাজিল হারায় সার্বদের। কোস্টারিকার কাছে হারলেও সুইজারল্যান্ডের সুযোগ থাকছে নকআউটে ওঠার। এক্ষেত্রে তাদের হারতে হবে কেবল এক গোলে, আর প্রার্থনা করতে হবে যেন সার্বিয়া ড্র করে। তখন দুই দলের পয়েন্ট হবে সমান ৪। দ্বিতীয় স্থানে থেকে সুইস ও সার্বদের মধ্যে কে যাবে শেষ ষোলোতে, সেটা নির্ধারণ হবে কার গোল বেশি। সেই হিসেব সমান হলে রানার্সআপ হয়ে সুইজারল্যান্ড যাবে পরের পর্বে, কারণ তারা গ্রুপে হারিয়েছে সার্বদের।