রাশিয়া বিশ্বকাপের শেষ ১৬’র শেষ দিনে আজ সেন্ট পিটার্সবার্গে সুইজারল্যান্ডের মুখোমুখি হচ্ছে সুইডেন। আগের যেকোন বারের তুলনায় এবারের সুইস দলটিকে নিয়ে সংশ্লিষ্টরা দারুন আশাবাদী। কিন্তু ইতোমধ্যেই ‘সোনালী প্রজন্মের’ তকমা পাওয়া দলটিকে সুইডেন যে মোটেই ছেড়ে কথা বলবে না তা সহজেই অনুমেয়।
আক্রমণভাগে সুইস দলটির যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন থাকতে পারে। কিন্তু দারুণ সংঘবদ্ধ দল হিসেবে নিজেদের যোগ্যতা দিয়েই তারা সেই অভাব পুষিয়ে নিয়েছে। যদিও তারা অধিনায়ক স্টিফান লিচেস্টেইনার ও ফাবিয়ান শারের অনুপস্থিতি দারুণভাবে অনুভব করবে। রক্ষণভাগের এই দুই খেলোয়াড়ই দুটি হলুদ কার্ডের কারণে কালকের ম্যাচে খেলতে পারছেন না। এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারলে প্রথমবারের মত এই দুই তারকাকে ছাড়াই টুর্নামেন্টে এগিয়ে যাবার প্রমাণ দিবে সুইজারল্যান্ড। তবে ইউরোপের শীর্ষ লিগে খেলা রিকার্ডো রডরিগুয়েজ, জিহার্দান শাকিরি ও গ্রানিট জাকাদের মত তারকাদের নিয়ে সুইজারল্যান্ড ১৯৫৪ সালের পরে প্রথমবারের মত কোয়ার্টার ফাইনালে খেলার স্বপ্ন দেখতেই পারে। ওই আসরের স্বাগতিক হিসেবে কোয়ার্টার ফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছিল সুইসরা।
গ্রুপ পর্বে ব্রাজিল ও কোস্টা রিকার সাথে ড্র এবং সার্বিয়ার বিপক্ষে জয় নিয়ে ই-গ্রুপের রানার্স-আপ হিসেবে নক আউট পর্বে উঠেছে সুইজারল্যান্ড। জার্মানীর হতাশাজনক বিদায়ে ভ্লাদিমির পেটকোভিচের দল দ্বিতীয় রাউন্ডে প্রতিপক্ষ হিসেবে সুইডেনকে পেয়েছে।
সুইজারল্যান্ডের ফরোয়ার্ড ব্রিল এম্বোলো আশা করেন যোগ্যতার ভিত্তিতেই তার দল কোয়ার্টারের টিকিট পাবে। কোস্টারিকার সাথে ২-২ গোলের ড্র হওয়া গ্রুপের শেষ ম্যাচটির পরপরই এম্বোলো তার নবজাতক সন্তানকে দেখতে বাড়ি ফিরে গিয়েছিলেন। কন্যা সন্তানের বাবা হওয়ায় দারুণ উচ্ছ্বসিত শালকের এই তরুণ বলেছেন, ‘সময়টা দারুণ ছিল। বিমানবন্দর থেকে সরাসরি আমি হাসপাতালে একেবারে সঠিক সময়ে গিয়ে উপস্থিত হয়েছি। আমি দারুণ খুশী। নালিয়ার জন্ম এখন পর্যন্ত আমার জীবনে সেরা উপহার। দ্বিতীয়বারের মত এত দ্রুত আমি আবারো সুইজারল্যান্ডে আসতে চাই না। এখনো রাশিয়ায় আমাদের আরো কিছু পাবার আছে।’
দু’টি ম্যাচে বদলী হিসেবে খেলতে নামা এম্বোলো এখনও মূল একাদশে খেলার সুযোগ পাননি। কোচ পেটকোভিচ আক্রমণভাগে হ্যারিস সেভারোভিজ ও মারিও গাভরানোভিচের ওপর আস্থা রাখলেও তারা খুব একটা কাজে আসেননি। কোস্টা রিকার বিপক্ষে গোল করেছিলেন আরেক ফরোয়ার্ড জোসিপ ড্রিমিচ।
২১ বছর বয়সী এম্বোলো বলেছেন, ‘সুইডেন বেশ শক্তিশালী দল। কিন্তু আমাদের প্রস্তুতিও বেশ ভাল। কোয়ার্টার ফাইনালে যাবার জন্য আমরা সেরাটাই দিতে চেষ্টা করবো। দুই বছর আগে ইউরোতে আমরা শেষ ১৬’তে পোল্যান্ডের কাছে পরাজিত হয়েছিলাম। আমরা সেখান থেকে শিক্ষা নিয়েছি। দুইবার পিছিয়ে থেকেও রাশিয়ায় আমরা এটাই প্রমাণ করেছি শেষ মিনিট পর্যন্ত আমরা ম্যাচ ছাড়বো না।’
বহিষ্কারাদেশের কারণে সুইডিশ দলে থাকছেন না সেবাস্টিয়ান লারসন। যে কারণে মধ্যমাঠে মূল একাদশে আসতে পারেন গুস্তাভ সেভেনসন। সুইডিশ কোচ জাসে এন্ডারসন বিশ্বাস করেন তার দল পিছন থেকে আক্রমণভাগের নেতৃত্বে থাকবে। ম্যাচ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, মাঠে সব খেলোয়াড়েরই শুরুর পয়েন্ট হলো ডিফেন্ডার হিসেবে। এরপর আমরা একে অপরের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে খেলবো। প্রতিপক্ষকে সুযোগ দিয়ে খেলবো না।
বিশ্বকাপে সুইজারল্যান্ডের শেষ ১৪টি গোলের ১১টিই হয়েছে দ্বিতীয়ার্ধে। এবারের বিশ্বকাপে পাঁচটির মধ্যে চারটি হয়েছে বিরতির পরে। এই নিয়ে বিশ্বকাপে ৫০তম ম্যাচ খেলতে মাঠে নামছে সুইডেন। ১১তম দেশ হিসেবে সুইডেন এই কৃতিত্ব অর্জন করতে যাচ্ছে।
খেলা