প্রথম দল হিসেবে ২১তম ফুটবল বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উঠলো ফ্রান্স। শেষ আটে আজ ফ্রান্স ২-০ গোলে হারায় দু’বারের চ্যাম্পিয়ন উরুগুয়েকে। ফলে ২০০৬ সালের পর আবারো বিশ্বকাপের সেমিতে উঠলো ১৯৯৮ সালের চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স।
আর্জেন্টিনাকে ৪-৩ গোলে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করেছিলো ফ্রান্স। অন্যদিকে পর্তুগালকে ২-১ গোলে হারিয়ে শেষ আটে ওঠে উরুগুয়ে। এছাড়া মুখোমুখি লড়াইয়েও সমান-সমান ফ্রান্স ও উরুগুয়ে। তবে বিশ্বকাপ আসরে আগের তিন দেখায় দু’টিতে ড্র ও একটিতে জয় পায় উরুগুয়ে। ১৯৬৬ সালে ২-১ গোলে জয় পেয়েছিলো উরুগুয়ে। তারপরও এবারের আসরে দু’দলের পারফরমেন্সে কেউ কারও চেয়ে এগিয়ে ছিলো না।
নিজনি নভগোরোদ সমান অবস্থানে থেকে কোয়ার্টার ফাইনালে লড়াই শুরু করে ফ্রান্স ও উরুগুয়ে। তবে ম্যাচের ৫ মিনিটে প্রথম আক্রমণে যায় উরুগুয়েই। স্ট্রাইকার লুইস সুয়ারেজের পাস থেকে ফ্রান্সের গোলমুখে শট নিয়েছিলেন আক্রমণভাগের আরেক খেলোয়াড় ক্রিস্টিয়ান স্টুয়ানি। কিন্তু স্টুয়ানির বল বাড়ের বাইরে দিয়ে চলে যায়।
উরুগুয়ের আক্রমণের পর পাল্টা আক্রমণে যায় ফ্রান্স। ৭ মিনিটে স্ট্রাইকার আঁতোয়োন গ্রিজম্যানের যোগান দেয়া বলে শট নিয়েছিলেন ডিফেন্ডার লুকাস হার্নান্দেজ। কিন্তু ঐ শট থেকে গোল আদায় করে নিতে পারেননি হার্নান্দেজ।
এরপর আক্রমণ পাল্টা আক্রমণে চলে দু’দলের লড়াই। তবে এতে সফল হয় ফ্রান্স। ৪০ মিনিটে ডিফেন্ডার রাফায়েল ভারানের গোলে ম্যাচে প্রথম গোলের স্বাদ নেয় ফরাসির (১-০)। গ্রিজম্যানের ক্রস থেকে হেডে বলকে উরুগুয়ের জালে পাঠান ভারান।
গোল হজম করে দমে যায়নি উরুগুয়ে। ৪৩ মিনিটে ফরাসি সীমানায় আক্রমণ করে তারা। মিডফিল্ডার লুকাস টোরেইরা ক্রস থেকে ফ্রান্সের বক্সের ভেতর থেকে হেড নিয়েছিলেন ডিফেন্ডার মার্টিন ক্যারোস। ক্যারোসের হেড ডান দিকে ঝাঁপিয়ে এক হাতে বলকে ফিরিয়ে দেন ফরাসি গোলরক্ষক হুগো লরিস। ফলে গোল বঞ্চিত হয় উরুগুয়ে। তাই ১-০ গোলে এগিয়ে থেকে ম্যাচের বিরতিতে যায় ফ্রান্স।
ম্যাচে লিড নিয়ে দ্বিতীয়ার্ধেও আধিপত্য বিস্তার করে খেলে ৪-২-৩-১ ফরমেশনে ম্যাচ শুরু করা ফ্রান্স। প্রথমার্ধে ৬০ শতাংশ বল দখলে রাখা ফরাসিরা ৫৩ মিনিটেই ব্যবধান দ্বিগুণ করার দারুণ এক সুযোগ পেয়েছিল। কিন্তু ডিফেন্ডার বেঞ্জামিন পাভার্ডের শট উরুগুয়ের গোলবারের উপর দিয়ে চলে যায়।
৫৩ মিনিটে গোলের ব্যবধান দ্বিগুণ করতে না পারলেও ৬১ মিনিটে ম্যাচে দ্বিতীয় গোল করে ফ্রান্স। মিডফিল্ডার কোরেনটিন তোলিসোর পাস থেকে উরুগুয়ের বক্সের বাইরে বল পেয়ে যান গ্রিজম্যান। বল পেয়েই উরুগুয়ের গোলমুখে শট নেন গ্রিজম্যান। তার শট রুখতে পারেননি উরুগুয়ের গোলরক্ষক ফার্নান্দো মুসলেরা। তার হাত ফসকে বল প্রবেশ করে উরুগুয়ের জালে। ফলে ম্যাচে ২-০ লিড নেয় ফ্রান্স।
৬৪ মিনিটে গোলের ব্যবধান কমানোর সুযোগ পেয়েছিলো উরুগুয়ে। ডিফেন্ডার হোসে গিমেনেজের যোগান দেয়া বল বক্সের ভেতর পেয়ে গিয়েছিলেন মিডফিল্ডার ক্রিস্টিয়ান রডরিগুয়েজ। কিন্তু তার দুর্বল শট ফ্রান্সের বারের পাশ দিয়ে চলে যায়।
এরপর আরও দু’টি আক্রমণ করেছিলো উরুগুয়ে। কিন্তু ঐ দু’টি ফ্রান্সের জাল স্পর্শ করতে পারেনি। তবে ম্যাচের শেষ মূর্হুতে আরও একটি গোল পেয়ে যেত পারতো ফ্রান্স। ৮৯ মিনিটে ফ্রান্সের দ্বিতীয় গোলের মালিক গ্রিজম্যানের শট উরুগুয়ের গোলবারের উপর দিয়ে চলে যায়। ফলে গোল বঞ্চিত হয় ফ্রান্স। তবে ২-০ গোলে ম্যাচ জিতে ঠিকই মাঠ ছাড়ে ফ্রান্স।
খেলা