স্থানীয় সময় সকাল ১১টা। উদ্ধারকারী দলের প্রধান নারোঙ্গসাক ওসোত্তানাকর্ন ঘোষণা করলেন, ‘‘অক্সিজেন ট্যাঙ্ক তৈরি’। আগামী কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ভাল খবর আসবে।’’ বিকেল পাঁচটার কিছু আগেই এল ভাল খবর।
দ্বিতীয় দিনের অভিযান শুরুর ছ’ঘণ্টার মধ্যে থাম লুয়াং ন্যাং গুহা থেকে উদ্ধার করা হল ১২ জনের ফুটবল দলটির পঞ্চম জনকে। এর ঘণ্টা দেড়েকের মধ্যে উদ্ধারকারীদের সাহায্যে একে একে বেরিয়ে আসে আরও তিন জন। সন্ধ্যা ৭টা ৪০-এ বার করা হয় অষ্টম জনকে। অর্থাৎ, কাল ও আজ মিলিয়ে থাইল্যান্ডের গুহাটি থেকে উদ্ধার হল মোট আট জন। এখনও ‘বন্দি’ চার কিশোর ও কোচ। কাল ফের শুরু হবে অভিযান।
সোমবার সকালে নির্ধারিত সময়ের চার ঘণ্টা আগে শুরু হয় অভিযান। মূল অভিযান চালান ১৮ জন দক্ষ ডুবুরি। তাঁদের ১৩ জন বিদেশি ও পাঁচ জন থাইল্যান্ড সেনার সিল ইউনিটের সদস্য। প্রত্যেকেরই গুহার মধ্যে সাঁতার কাটার প্রশিক্ষণ রয়েছে। সাহায্যের জন্য ছিলেন ৭০ জন। সারা রাত বৃষ্টি হলেও আর জল বাড়েনি গুহায়। পাম্প করে বার করে দেওয়া হয়েছে প্রচুর জল। গত কাল রাতেই ভরে ফেলা হয় অক্সিজেন সিলিন্ডার। সকাল থেকেই বাইরের অপেক্ষা করছিলেন চিকিৎসকেরা।
বিকেল পাঁচটা নাগাদ বেরিয়ে আসে প্রথম জন। সাঁতারুর মুখোশে ঢাকা পুরো মুখ। সঙ্গে সঙ্গে স্ট্রেচারে করে অ্যাম্বুল্যান্সে তোলা হয় তাকে। প্রাথমিক চিকিৎসার পর আকাশ পথে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। উদ্ধারকারীরা জানাচ্ছেন, মূলত হেঁটে, দড়ি বেয়ে ও ডুব সাঁতার দিয়ে গুহার বাইরে আসছে ওই কিশোররা। পথ দেখাতে গুহার দেওয়ালে বাঁধা রয়েছে দড়ি। মাঝরাস্তায় চলে আসার পরই পেরোতে হচ্ছে সবচেয়ে কঠিন অংশ। অত্যন্ত সংকীর্ণ সেই অংশটুকু পেরোতে গিয়ে অক্সিজেন ট্যাঙ্ক খুলে ফেলতে হচ্ছে ডুবুরিদের।
প্রথমে ঠিক হয়, যাদের শারীরিক অবস্থা ভাল, তাদের আগে উদ্ধার করা হবে। বাকিরা সাঁতার কাটার শক্তি সঞ্চয়ের পর উদ্ধার করা হবে তাদের। কিন্তু দলের সদস্য অস্ট্রেলিয় ডুবুরি ও চিকিৎসক রিচার্ড হ্যারিসের কথায় সেই পরিকল্পনা বাতিল হয়। বেশি দিন অপেক্ষা করতে হলে দুর্বল কিশোরদের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে এই আশঙ্কায় প্রথমে উদ্ধার করা হয় তাদেরই। প্রথম দফা উদ্ধার কাজের পর অভিনন্দন জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। দু’সপ্তাহ গুহায় কাটিয়েছে। ফলে ট্রমা কাটানোর জন্য কিশোরদের মানসিক চিকিৎসা চলছে। সোমবার সকালে উঠেই পর্ক ফ্রাই ও ভাত খেতে চায় তারা। যদিও দীর্ঘদিন না খেয়ে থাকায় তাদের আপাতত হাল্কা খাবার দেওয়া হচ্ছে।