রাশিয়ায় ফরাসি বিপ্লবের ফসল কিলিয়ান এমবাপে৷ বিশ্বকাপের মাঝপথে ফুটবল সম্রাট পেলের কীর্তি ছুঁয়েছিলেন ফ্রান্সের এই তরুণ ফরোয়ার্ড। রবিবার লুজনিকি স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপে ফাইনালেও কিংবদন্তি ব্রাজিলীয় তারকার সঙ্গে উচ্চারিত হল টিনেজার ফরাসি খেলোয়াড়ের নাম।
১৯৫৮ বিশ্বকাপে ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তির পর কনিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে ফাইনালে গোল করার কৃতিত্ব অর্জন করলেন এমবাপে। লুজনিকি স্টেডিয়ামে ক্রোয়েশিয়াকে ৪-২ ব্যবধানে হারিয়ে ফ্রান্সের দ্বিতীয়বার বিশ্বকাপ জেতে ফ্রান্স৷ ম্যাচের ৬৫ মিনিটে ফ্রান্সের হয়ে চতুর্থ গোলটি করেন ১৯ বছর ২০৭ দিন বয়সি এমবাপে। বাঁ-দিক থেকে লুকা হার্নান্ডেজের পাশ ধরে প্রায় ২২ গজ দূর থেকে বিশ্বকাপে তাঁর চতুর্থ গোলটি করেন এই ফরাসি ফরোয়ার্ড।
বিশ্বকাপ ফাইনালে সবচেয়ে কমবয়সি খেলোয়াড় হিসেবে গোল করার রেকর্ড অবশ্য এখনও পেলের দখলেই। ১৯৫৮ বিশ্বকাপের ফাইনালে সুইডেনের বিপক্ষে ৫-২ ব্রাজিলের জয়ে ১৭ বছর ২৪৯ দিন বয়সে জোড়া গোল করেছিলেন পেলে। দ্বিতীয় টিনেজার হিসেবে বিশ্বকাপ ফাইনালে গোল করা এমবাপেকে টুইটারে অভিনন্দন জানান ব্রাজিলের হয়ে তিনটি বিশ্বকাপ জয়ী পেলে।
শেষ ষোলোয় আর্জেন্টিনাকে ৪-৩ হারানোর ম্যাচে জোড়া গোল করেছিলেন এমবাপে। সেটা ছিল পেলের পর প্রথম টিনএজার হিসেবে বিশ্বকাপের এক ম্যাচে একাধিক গোল করার কীর্তি। দলের সাফল্যে অবদান রাখতে পারার আনন্দে আত্মহারা এমবাপে। ম্যাচের পর ফরাসি ফরোয়ার্ড বলেন, ‘
আমি খুব খুশি। লম্বা পথ চলা ছিল৷ দেশবাসিকে খুশি করতে পেরে আমরা গর্বিত। তাদের সব সমস্যা ভুলিয়ে দেওয়ার দায়িত্বটা আমাদের ছিল। এ জন্যই আমরা খেলি। আমি স্রেফ ফুটবল খেলতে চাই না, বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হতে চাই৷ আমি আরও ভালো করতে চাই৷ তবে এরই মধ্যে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়াটা দারুণ অনুভূতি।’
এমবাপের মতো টুর্নামেন্টটা দুর্দান্ত কেটেছে অঁতোয়ান গ্রিজমানের। ফাইনালে দু’জনেই গোল করেছেন৷ টুর্নামেন্টে দু’জনেরই গোল সংখ্যা চারটি।
ইতিহাস গড়ার পর যেন বিশ্বাসই হচ্ছিল না ফরাসি ফরোয়ার্ড গ্রিজমানের। তিনি বলেন, ‘জানি না আমি ঠিক কোথায় দাঁড়িয়ে রয়েছি! আমি সত্যিই খুশি। ম্যাচটা খুব কঠিন ছিল৷ ক্রোয়েশিয়া দারুণ খেলেছে। বিশ্বকাপটা ফ্রান্সে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে আমরা আর অপেক্ষা করতে পারছি না।’
ম্যাচ শেষে একই রকম উচ্ছ্বাস ফরাসি অধিনায়ক উগো লরিসের। দেশকে দ্বিতীয় বিশ্বকাপ জেতানোয় সতীর্থদের ধন্যবাদ জানান তিনি। লরিস বলেন, ‘ দেশবাসিকে খুশি করতে পেরে আমি আনন্দিত৷ তাদেরকে হাসতে দেখতে ভালো লাগে৷ আমরা এভাবেই আমাদের দেশকে দেখতে পছন্দ করি৷ আর ফুটবলের সে শক্তি রয়েছে। আমরা নিজেদের নিয়ে গর্বিত হতে পারি। অধিনায়ক হিসেবে ট্রফিটা উঁচিয়ে ধরা দারুণ এক দারুণ অনুভূতি।’