আবহাওয়া স্বাভাবিক থাকার পরে গতকাল দুপুরে চাক্তাই–খাতুনগঞ্জে আকস্মিক জোয়ারের পানিতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এমনকি কয়েকটি সড়ক হাঁটু পানিতে তলিয়ে গেছে। এসময় ব্যবসায়ীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, সকাল থেকে রৌদ্রৌজ্জ্বল আবহাওয়া, তারপরেও হঠাৎ জোয়ারের পানিতে চাক্তাই–খাতুনগঞ্জের ব্যবসা বাণিজ্য এক প্রকার থমকে গেছে। জোয়ারের পানি থেকে বাঁচতে ব্যবসায়ীরা দোকান–গুদামের তলা উঁচু ও প্রবেশ পথে দুই ফুট পর্যন্ত দেয়াল তৈরি করেছে। কিন্তু জোয়ারের পানির উচ্চতা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই ব্যবসায়ীদেরও ভুগতে হচ্ছে। তারা আরো বলেন, সম্প্রতি চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) স্লুইচ গেট নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করেছে। কিন্তু চলতি বর্ষাতে এর সুফল পাওয়া যাবে না, তা একপ্রকার ধরে নেয়া যায়। তারপরেও যতদ্রুত সম্ভব চাক্তাই খালের কর্ণফুলী মোহনায় জোয়ার প্রতিরোধক স্লুইচ গেট নির্মাণ কাজ দ্রুত শেষ করার দাবি জানান ব্যবসায়ীরা।
চাক্তাই–খাতুনগঞ্জে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জোয়ারের পানিতে গতকাল মধ্যম চাক্তাই, নতুন চাক্তাই, চর চাক্তাই, পুরনো চাক্তাই,মকবুল সওদাগর রোড ও আসাদগঞ্জে নিম্নাঞ্চলে হাঁটু পানি ছিল। এছাড়া জোয়ারের পানি ছিল খাতুনগঞ্জের চান্দমিয়া গলি, ইলিয়াছ মার্কেট, বাদশা মার্কেট, সোনা মিয়া মার্কেট, আমির মার্কেট, নবী মার্কেট, চাক্তাই মসজিদ গলি, ড্রামপট্টি, চালপট্টি ও এজাজ মার্কেট সড়কে।
জানতে চাইলে চাক্তাই–খাতুনগঞ্জ আড়তদার সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি সোলায়মান বাদশা বলেন, দেশের মোট ভোগ্যপণ্যের ৪০–৫০ শতাংশ খাতুনগঞ্জে বিকিকিনি হয়। প্রতিদিন গড়ে হাজার কোটি টাকার লেনদেন হয় এ বাজারে। কিন্তু চাক্তাই–রাজাখালী খাল কার্যত ভরাট হয়ে যাওয়ায় জোয়ারের পানিতেও জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। জলাবদ্ধতায় ব্যবসায়ীদের কোটি কোটি টাকার পণ্য নষ্ট হচ্ছে। লোকসানের মুখে পড়ে ব্যাংকের দেনা শোধ করতে পারছেন না অনেক ব্যবসায়ী। এতে কেউ কেউ দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছেন। সম্প্রতি সিডিএ স্লুইচ গেট নির্মাণ কাজ শুরু করেছে। আমরা জানি চলতি বর্ষায় এটির সুফল পাওয়া সম্ভব না। কিন্তু আমাদের দাবি, কর্ণফুলী নদীর ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে পানির ধারণ ক্ষমতা বাড়াতে হবে। একইসাথে চাক্তাই খালের দুই পাড়ের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে খাল পুনরুদ্ধার করতে হবে।