চীন ও ভারতের পরেই আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মাছ রপ্তানিতে বাংলাদেশের অবস্থান এবং ২০১৮ সালে অভ্যন্তরীণ মৎস্য উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বে তৃতীয় অবস্থানে উন্নীত হয়েছে। জাতিসংঘের সংস্থা এফএও-এর সর্বশেষ প্রতিবেদন এ তথ্য উঠে এসেছে। উল্লেখ্য যে ২০১৭ সাল পর্যন্ত এই অবস্থান ছিল পঞ্চম।
‘জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ-২০১৮’ উপলক্ষে মৎস্য ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আজ মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, বাংলাদেশ ইকোনমিক রিভিউয়ের তথ্য মতে, বাংলাদেশের জিডিপিতে মৎস্য খাতের অবদান এখন ৩.৫৭ শতাংশ এবং কৃষিজ জিডিপিতে এ খাতের অবদান ২৫.৩০ শতাংশ। আর দেশের মোট জনগোষ্ঠীর ১১ শতাংশের অধিক লোক মৎস্য আহরণে জড়িত।
মন্ত্রী আরও জানান, বাংলাদেশ মৎস্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ায় দেশের জনগণ এখন জনপ্রতি গড়ে ৬২.৫৮ গ্রাম মৎস্য গ্রহণ করছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য মতে, জনপ্রতি দরকার মাত্র ৬০ গ্রাম।
জাটকা নিধন রোধের কার্যকারিতার দরুণ ব্যাপক ইলিশ উৎপাদনের কারণে ২০১৭-১৮ সালে প্রায় ৫ লক্ষ টন ইলিশ উৎপাদিত হয়েছে, ২০০৮-০৯ সালে যা ছিল প্রায় ৩ লাখ টন। বাংলাদেশ ২০১৭-১৮ সালে প্রায় ৬৯ হাজার মেট্রিক টন মৎস্য ও মৎস্যজাত পণ্য রফতানি করে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকার বৈদেশিক মূদ্রা অর্জন করেছে।
উল্লেখ্য জাটকা নিধন রোধে সহায়তা করায় ২০১৭-১৮ সালে প্রায় আড়াই লাখ জেলে পরিবারকে ৪০ কেজি হারে ৪ মাসে প্রায় ৪০ হাজার টন খাদ্যসহায়তা এবং ২২দিন পর্যন্ত মা-ইলিশ আহরণ বন্ধ রাখায় বিগত ২ বছরে প্রায় ৪ লাখ জেলে পরিবারকে প্রায় ১৫ হাজার টন ভিজিএফ দেয়া হয়েছে ।
সংবাদ সম্মেলনে জরিপ জাহাজ ‘আরভি-মীন সন্ধানী’র দ্বারা সমুদ্র জরিপ প্রসঙ্গে তিনি জানান, ইতোমধ্যে আমাদের সমুদ্রসীমায় ২৯৮ প্রজাতির মাছ, ২৩ প্রজাতির চিংড়িমাছ, ১৬ প্রজাতির ক্রাস্টেপিয়ান ও ১২ প্রজাতির মলাস্কা চিহ্নিত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ২০১৬-১৭ সালে প্রায় ৪২ লক্ষ মেট্রিক টন মাছ উৎপাদনের মাধ্যমে দেশ মাছে স্ব-নির্ভরতা অর্জন করেছে, যা আমাদের ধরে রাখতে হবে।
ইলিশ মাছের জিআই সনদপ্রাপ্তির কথা উল্লেখ করে তিনি মৎস্য খাতের জন্য যথাযথ অবদান রাখায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারী, জেলেসহ মিডিয়াকর্মীদের ভূয়সী প্রশংসা করেন।