বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এমপি বলেছেন, বাংলাদেশ সার্বজনীন রোম সনদের গুরুত্বকে স্বীকার করে এবং আন্তর্জাতিক ফৌজদারী আদালতের সকল লক্ষ্য অর্জনে অব্যাহতভাবে সমর্থন করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, অন্যায়, অবিচার ও বৈষম্যহীন বিশ্ব গড়তে বাংলাদেশ দৃঢ় প্রত্যয়ী। অপরাধীদের বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে বিশ্ববাসীর সাথে বাংলাদেশ সহযাত্রী হবে।
তিনি গতকাল নেদারল্যান্ডের হেগে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্টে ”এনডিউরিং ভেল্যু অব দ্যা রোম স্ট্যাটিউট টু হিউম্যানিটি“ শীর্ষক সিম্পোজিয়ামে বক্তৃতাকালে এসব কথা বলেন।
স্পীকার বলেন, এই সিম্পোজিয়াম কেবলই উৎসব নয়—বরং মানবতা লংঘনীয় অপরাধের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্লাটফরম। তিনি বলেন, বাংলাদেশ গর্বিত- – কারণ আন্তর্জাতিক ফৌজদারী আদালত সৃষ্টিতে এবং রোম সনদ গ্রহণের সূচনা লগ্নে প্রচার-প্রচারণায় বাংলাদেশ অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। বাংলাদেশ সকল প্রকার বিচারহীনতা, যুদ্ধাপরাধ, গণহত্যা এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে অঙ্গীকারাবদ্ধ বলে তিনি উল্লেখ করেন।
স্পীকার বলেন, সম্প্রতি বিশ্ববাসী মিয়ানমার কর্তৃক একটি সমৃদ্ধ ও ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতিকে ধ্বংস করে দেওয়ার মত হ্নদয় বিদারক ঘটনা প্রত্যক্ষ করল। গত ২৫ আগস্টের পর থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত প্রায় ১০লাখ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠিকে বাংলাদেশ আশ্রয় দিয়েছে- যার বেশির ভাগই শিশু ও নারী। জাতিসংঘ ও জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশন এ ঘটনাটিকে জাতিগত নিধন ও গণহত্যা হিসেবে চিহ্নিত করে বাংলাদেশের পাশে থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করে। তিনি বলেন, এখন বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের শান্তিপূর্ণ ও স্থায়ী প্রত্যাবাসনে প্রয়োজন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অব্যাহত ও কার্যকর ভূমিকা।
তিনি আরও বলেন, সক্রিয় সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ আইসিসি’র কাছে বলপূর্বক রোহিংগাদের বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করানোর কারণে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রুলিং প্রত্যাশা করে। মিয়ানমার আইসিসি’র সদস্যভূক্ত নয় কিন্তু বাংলাদেশ ইতোমধ্যেই এ সংক্রান্ত প্রাসঙ্গিক তথ্যাদি আইসিসি’র প্রি- ট্রায়াল চেম্বার -১ এ উপস্থাপন করেছে। আইসিসি’র ২০তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে রোম সনদের বাস্তবায়নে বাংলাদেশ সবসময় পাশে থেকে সমর্থন অব্যাহত রাখবে বলেও তিনি অভিপ্রায় ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানে রোম সনদ এর প্রেসিডেন্ট মি. ও-গোঁ কোয়ান ( Mr. O-Gon Kwon), আইসিসি’র প্রেসিডেন্ট চিলি ইবো ওসুজি (Chile Eboe-Osuji) এবং আইসিসি’র প্রসিকিউটর মিজ. ফাতো বেনসৌদা ( Ms. Fatou Bensouda) বক্তব্য রাখেন।