দুর্দান্ত জয়ে ওয়ানডে সিরিজে এগিয়ে বাংলাদেশ

ক্রীড়া প্রতিবেদক

তামিম-সাকিব-মুশফিবের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ের পর মাশরাফি-মোস্তাফিজের দাপুটে বোলিংয়ে জয় পেলো বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে কোনঠাসা করে প্রথম ওয়ানডেতে ৪৮ রানের জয় ছিনিয়ে নেয় টাইগাররা। এই দাপুটে জয়ের ফলে তিন ম্যাচের সিরিজে এগিয়ে গেল টাইগাররা। মাশরাফি বাহিনীর ছুঁড়ে দেয়া ২৭৯ রানের জবাবে খেলতে নেমে নির্ধারিত ওভার শেষে ৯ উইকেটে ২৩১ রান করে স্বাগতিকরা।

শুরু থেকে মাশরাফি-মিরাজের হিসেবি বোলিং বেকায়দায় ফেলে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। নিজের চতুর্থ ওভারে মোস্তাফিজের জোড়া আঘাতের পর মাশরাফির টানা ৩ ওভারে তিনটি উইকেট বাংলাদেশের জয়কে সহজ করে দেয়। ১০ ওভারে ১ মেডেনসহ ৩৭ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন বাংলাদেশের অধিনায়ক। এছাড়া মোস্তাফিজ ২ এবং রুবেল ও মিরাজ ১টি করে উইকেট নেন। হেট্রিকের আশা জাগিয়েও সুযোগ হাতছাড়া হয় মোস্তাফিজের।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে সর্বোচ্চ রান সংগ্রহ করেন হেটম। মোস্তাফিজের বলে ফিরে যাবার আগে হেটম ৭৮ বলে ৫২ রান করেন। আর গেইলের ৬০ বলে ৪০ রান করে রান আউট হন। ই লিয়েস ১৭ রান করে মাশরাফির বলে আউট হন। রুবেলের এলবি ডাব্লিউর ফাদে পড়ে মাত্র ৬ রানে আউট হন হোপ। জেএন ১০ রান করে আউট হন মিরাজের বলে। হোল্ডার ১৭ রান করে মাশরাফির বলে মাঠ ছাড়েন। পাওলকে শূণ্য রানে ফেরান মোস্তাফিজ।

টস জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরুতে এনামুল হক বিজয়ের উইকেট হারালেও তামিম-সাকিবের জুটি এবং মুশফিকের জড়ো ইনিংসে ৪ উইকেট হারিয়ে ২৭৯ রান তুলে বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে এটাই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ ওয়ানডে ইনিংস। সাকিবের ৯৭ আর তামিমের অসাধারণ সেঞ্চুরি বাংলাদেশকে চ্যালেঞ্জিং স্কোর এনে দেয়।

শূন্য রানে বিজয়ের বিদায়ের পর ওয়ানডাউনে ব্যাট করতে নামেন সাকিব আল হাসান। তামিমের সঙ্গে জুটি বেধে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সঙ্গে নিজের ক্যারিয়ারের ৮ম সেঞ্চুরির দিকেও এগিয়ে যাচ্ছিলেন সাকিব আল হাসান। কিন্তু মাত্র ৩ রানের আক্ষেপ নিয়ে আউট হয়ে যেতে হলো সাকিবকে।

সাকিব ৯৭ রান করে আউট হয়ে গেলেও তামিম ছিলেন অপরাজিত। দারুণ ধৈয্যশীল ইনিংস খেললেন তামিম ইকবাল। তার উইকেট নিতে পারেনি কোনো ক্যারিবীয় বোলার। ১৩০ রানে অপরাজিত থাকলেন বাংলাদেশের এই ড্যাশিং ওপেনার। তার অসাধারণ সেঞ্চুরি এবং শেষ মুহূর্তে মাঠে নেমে মুশফিকুর রহীমের ছোট্ট ঝড়- সব মিলিয়ে গায়ানার প্রোভিডেন্স স্টেডিয়ামে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজের সামনে ২৮০ রানের বিশাল লক্ষ্য বেঁধে দিয়েছে বাংলাদেশ।

দেবেন্দ্র বিশুর করা ৪৫তম ওভারের তৃতীয় বলে সুইপ করতে গিয়ে ব্যাটের উপরের কানায় লাগিয়ে ফেলেন। বল উঠে যাওয়ার পর হেটমায়ার দারুণ দক্ষতায় বলটি তালুবন্দী করে নেন। ৮ম সেঞ্চুরি করতে না পারলেও ওয়ানডেতে ৩৮তম হাফ সেঞ্চুরি করেন সাকিব আল হাসান।

হার্ডহিটিংয়ের জন্য নামানো হয় সাব্বির রহমানকে। তবে ৪ বলে মাত্র ৩ রান করে আম্পায়ারের ভুলে আউট হয়ে যান সাব্বির। তাকে স্ট্যাম্পিংয়ের আউট ঘোষণা করা হলেও স্ট্যাম্প ভাঙার সময় তার পা ছিল ক্রিজের মধ্যেই। দেবেন্দ্র বিশুর বলে আউট হন সাব্বির। এরপর মাঠে নামেন মুশফিকুর রহীম।

ছোট্ট অথচ অসাধারণ এক ঝড় তোলেন মুশফিকুর রহীম। মাত্র ১১ বলে ৩০ রান করেন তিনি। ছক্কার মার মারেন ২টি এবং বাউন্ডারি মারেন ৩টি। ইনিংসের ১ বল বাকি থাকতে রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে দেবেন্দ্র বিশুর অসাধারণ এক ক্যাচে পরিণত হন মুশফিক। তবে আউট হওয়ার আড়ে এক ঝড়ে বাংলাদেশের রানকে নিয়ে যান ক্যারিবীয়দের জন্য দারুণ চ্যালেঞ্জিং এক পর্যায়ে।

শেষ বল মোকাবেলা করেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। আন্দ্রে রাসেলকে দারুণ এক বাউন্ডারি মেরে ইনিংস শেষ করেন তিনি। তামিম অপরাজিত থাকেন ১৬০ বলে ১৩০ রান করে। ১০টি বাউন্ডারির সঙ্গে ৩টি ছক্কার মার মারেন তিনি। ক্যারিয়ারে ১০ম সেঞ্চুরি করে অপরাজিত থেকে যান তামিম ইকবাল। দেবেন্দ্র বিশু ২টি এবং আন্দ্রে রাসেল ও জ্যাসন হোল্ডার নেন ১টি করে উইকেট।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে