দ্বিতীয় ওয়ানডে জিতেই সিরিজ নিশ্চিত করার লক্ষ্য নিয়ে আগামীকাল ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে মাঠে নামবে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল।তামিম ইকবাল-সাকিব আল হাসান ও অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজার দুর্দান্ত নৈপুণ্যে প্রথম ওয়ানডেতে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৪৮ রানে হারিয়ে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে মাশরাফির দল। তাই দ্বিতীয় ওয়ানডে জিতে সিরিজ জয় নিশ্চিত করতে চায় টাইগাররা। সেই লক্ষ্য নিয়েই আগামীকাল ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডে খেলতে গায়নার প্রোভিডেন্স স্টেডিয়ামে নামছে বাংলাদেশ। ম্যাচ শুরু হবে রাত সাড়ে বারটায়।
টেস্ট সিরিজে যাচ্ছেতাইভাবে হারের স্বাদ নেয় বাংলাদেশ। নিজেদের ক্রিকেট ইতিহাসে সর্বনি¤œ রানের লজ্জার রেকর্ড গড়ে তারা। দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশও হয় বাংলাদেশ। দু’টি ম্যাচের কোনটিতেই লড়াইয়ে ছিটেফোটাও দেখাতে পারেনি বাংলাদেশ।
এ্যান্টিগা টেস্টে ইনিংস ও ২১৯ রানে এবং কিংস্টন ম্যাচে ১৬৬ রানে হার মানে বাংলাদেশ। তাই খাদের মধ্যে পড়ে গিয়ে ওয়ানডে সিরিজ শুরু করতে হয় বাংলাদেশকে। কিন্তু খাদের মধ্যে থেকে কিভাবে উঠে দাঁড়াতে হয় সেটি জানে মাশরাফির দল। সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে করেও দেখিয়েছে বাংলাদেশ।
প্রথম ওয়ানডেতে এক সাথে জ্বলে ওঠেন তামিম-সাকিব ও মাশরাফি। ব্যাট হাতে তামিম-সাকিব ও বল হাতে মাশরাফির পারফরমেন্সে ৪৮ রানের জয় নিয়ে ওয়ানডে সিরিজ শুরু করে বাংলাদেশ। নিজেদের পয়মন্ত ভেন্যু গায়ানার প্রোভিডেন্স স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করে ৪ উইকেটে ২৭৯ রান করে বাংলাদেশ। ওপেনার হিসেবে পুরো ৫০ ওভার ব্যাট করেছেন তামিম। করেছেন অপরাজিত ১৩০ রান। ১৬০ বলে নিজের ইনিংসটি সাজান তিনি। ধীরলয়ে সেঞ্চুরি করে রেকর্ডও করেছেন তামিম। কিন্তু সেটি ম্যাচ শেষে আসল বিষয় ছিলো না। কারন বাংলাদেশ যে খাদের মধ্য থেকে উঠে দাঁড়িয়ে ম্যাচ জিততে পেরেছে।
বাংলাদেশের ম্যাচ জয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন সাকিব মাশরাফিও। ব্যাট হাতে তামিমের সাথে দ্বিতীয় উইকেটে ২৫৮ বলে ২০৭ রানের জুটি গড়েন সাকিব। বাংলাদেশকে বড় স্কোরের ভিত গড়ে দিয়েও হতাশাগ্রস্থ হয়েছেন সাকিব। কারন সেঞ্চুরির দোড়গোড়ায় পৌঁছে ৯৭ রানে থামেন সাকিব। তার ১২১ বলের ইনিংসে মাত্র ৬টি চার ছিলো।
ম্যাচ জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিমেরও। মন্থর উইকেটে তামিম-সাকিবের কষ্টের পর শেষদিকে মুশফিকুর রহিমের ১১ বলে ৩০ রানের টর্নেডোতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে বড় ধরণের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে পারে বাংলাদেশ। সেই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে পারেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ। কারণ অধিনায়ক মাশরাফির আগুন ঝড়ানো বোলিং-এ মুখ থুবড়ে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ৩৭ রানে ৪ উইকেট নেন ম্যাশ। ফলে ১৭২ রানে ৯ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শেষ উইকেটে শেষ দুই ব্যাটসম্যানের দৃঢ়তায় ৯ উইকেটে ২৩১ রান করে ক্যারিবীয়রা। এতে হারের ব্যবধান কমে স্বাগতিকদের।
টেস্ট সিরিজ হারের পর ওয়ানডেতে বাংলাদেশের এমন রোমাঞ্চিত জয় অবাক করার মত। কিন্তু অবাক হচ্ছেন না বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। ম্যাচ শুরুর আগে দলের সকলকে দেশের কথা চিন্তা করে খেলার অনুরোধ করেন ম্যাশ। এটিই ছিলো মাশরাফির আসল টনিক, ‘ম্যাচের আগে বিশেষ কিছু বলা হয়নি। শুধু বলেছিলাম, দেশের জন্য সব কিছু উজাড় করে খেলতে। টেস্ট সিরিজের কথা ভুলে গিয়ে নতুনভাবে সবকিছু শুরু করতে। শুরুটা ভালো হলে আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায় এবং পরবর্তীতে কাজও সহজ হয়ে যায়। নিজেদের পরিকল্পনাগুলো কাজে লেগেছে। আশা করি, এখান থেকে ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে সক্ষম হবো।’
ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে পারলে ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরের পর আবারো ওয়ানডে সিরিজ জয়ের স্বাদ নিতে পারবে বাংলাদেশ। সেই অপেক্ষাতেই বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমিরা।
দ্বিতীয় ওয়ানডে জিতেই সিরিজ নিশ্চিত করতে চায় বাংলাদেশ
ক্রীড়া ডেস্ক