ভোটের দিন আজ সকালে ভোট দিয়েই বড় ব্যবধানে জয়ের আশা প্রকাশ করেছিলেন লিটন। হলোও তাই। প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের ৭৮ হাজার ৪৯২ ভোটের বিপরীতে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী পান এক লাখ ৬৬ হাজার ৩৯৪। রাতে জয় নিশ্চিত হওয়ার পর নগরীর লক্ষ্মীপুর মোড়ে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন লিটন।
বলেন, ‘আজকের এ মুহূর্তটির জন্য রাজশাহীবাসীর সকল মানুষকে দীর্ঘ পাঁচটি বছর করতে হয়েছে। ২০১৩ –২০১৮ পর্যন্ত দীর্ঘ পাঁচটি বছর উন্নয়নের কথা বলে যিনি দায়িত্ব নিয়েছিলেন, তার কাছ থেকে না পাওয়ার বেদনা, দুঃখ ও জ্বালা যন্ত্রণা নিয়ে নগরবাসীকে প্রহর কাটাতে হয়েছে।’
২০০৮ সালে প্রথম মেয়র হন লিটন। পাঁচ বছরে তিনি যে কাজ করেছেন, সেটি আরও মানুষের মুখে মুখে। তবে কাজ ভালো করেও জাতীয় রাজনীতির নানা মারপ্যাঁচসহ নানা ইস্যুতে ২০১৩ সালে হেরে যান লিটন। জিতেন বুলবুল।
বুলবুলের পাঁচ বছর একেবারেই ম্রিয়মান। কাজ করতে পারেননি–সেটা স্বীকার করেন নিজেই। সরকারের অসহযোগিতার কথা বলে দায় দিচ্ছেন আওয়ামী লীগের ওপর। তবে লিটন বলছেন, নগরবাসী কেন ঠকবেন। আর তিনি মনে করেন, এই বিষয়টিই নগরবাসীকে আবার তার ওপর আস্থা রাখতে উদ্বুদ্ধ করেছে।
নবনির্বাচিত মেয়র বলেন, ‘আজকে অনেকদিন পরে নগরবাসী একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারা উন্নয়নের পক্ষে, নৌকার পক্ষে এবং আওয়ামী লীগের পক্ষে তাদের রায় দিয়েছে।’
‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। দেশ দুর্বার গতিতে উন্নয়নের পথযাত্রায় চলছে। তাই রাজশাহীর মানুষ পিছিয়ে থাকতে পারে না। পারে না বলেই, আজকে তারা সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
আগেরবারের চেয়ে এবার আরও বেশি কাজ করবেন–এমন অঙ্গীকার করে আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ‘এর আগে আমি পৌনে পাঁচ বছর মেয়র ছিলাম। কিছু কাজ করে রাজশাহীর মানুষকে দেখিয়েছিলাম। যে কাজ সর্বস্তরের মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়েছিল। আমি সেই কাজের ধারাবাহিকতা ধরে রেখে আরও অনেক কাজ করব।’পাইপলাইনে গ্যাস সংযোগ নিয়ে এসে, কর্মসংস্থান ও শিল্পায়নের মাধ্যমে রাজশাহীকে গড়ে তোলার ইচ্ছার কথাও বলেন নবনির্বাচিত মেয়র।
তার ওপর আস্থা রাখায় রাজশাহীবাসীকে ধন্যবাদও জানান লিটন। বলেন, ‘এ ঋণ পরিশোধ করাও যাবে না। আমি আপনাদের কথা মনে রেখেই আগামী দিনে রাজশাহী সিটি বিনির্মাণে রাজশাহী সিটি বিনির্মাণে পাশে চাই আপনাদের পাশে চাই। আপনাদের বুদ্ধি, পরামর্শ ও সহযোগিতা চাই। আমার ভুলত্রুটি হলে আপনার সেটি ধরিয়ে দিবেন। আমি কিচ্ছু মনে করব না।’
রাজশাহীর এই জয় আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে ইতিবাচক সাড়া ফেলবে বলেও আত্মবিশ্বাসী ক্ষমতাসীন দলের নেতার।
তিনি বলেন,‘আমি বিশ্বাস করি নেত্রী শেখ হাসিনা যেভাবে দেশের যে উন্নয়ন করে চলেছেন ইনশাআল্লাহ এ বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট আবারও ক্ষমতায় আসবে।’
দুই দিন পর শোকের মাস আগস্ট শুরু হচ্ছে জানিয়ে আমরা কোন বিজয় মিছিল না করারও ঘোষণা দেন লিটন।