আন্তর্জাতিক ডেস্ক
মিয়ানমারের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে নতুন করে শুরু হওয়া টানা বর্ষণে বাঁধ ভেঙ্গে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ওই অঞ্চলে ইতোমধ্যেই বন্যায় প্রায় দেড় লাখ লোক গৃহহীন এবং বেশ কয়েকজন মারা গেছে।
চারটি প্রদেশের বিস্তীর্ণ আবাদী জমি কাদাপানিতে তলিয়ে গেছে। উদ্ধারকর্মীরা নৌকায় করে আটকেপড়া গ্রামবাসীদের কাছে খাবার পৌঁছে দেয়ার চেষ্টা করছে।
বাগো অঞ্চলের মাদাউক শহর রক্ষা বাঁধ থেকে বন্যার পানি মাত্র কয়েক ইঞ্চি নিচে রয়েছে। যে কোন সময় বাঁধটি ভেঙ্গে পড়তে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে।
স্থানীয়দের আশঙ্কা নতুন করে শুরু হওয়া মৌসুমী বৃষ্টিপাত বড় ধরনের বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।
উদ্ধারকারী দলের নেতা হেইং মিন উ বলেন, ‘বন্যায় যদি বাঁধটি টিকে থাকতে না পারে, তবে আরো অনেক গ্রাম ঝুঁকির মুখে পড়বে।’
তবে তিনি এও বলেন, ‘এই মুহূর্তে পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’
বাগো, কারেন মোন ও তানিনথারি প্রদেশে লোকজনকে এখনো সরিয়ে নেয়ার নির্দেশ বহাল রয়েছে। টানা বর্ষণের কারণে এই অঞ্চলের ৩৬টি বাঁধ ও জলাধার থেকে পানি উপচে পড়ছে বলে রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম আরো জানায়, ১ লাখ ৪৮ হাজার ৩৮৬ লোক এখন ৩২৭টি অস্থায়ী আশ্রয় শিবিরে অবস্থান করছে।
এদিকে মিয়ানমা আলিন পত্রিকা জানায়, প্রায় ২৮ হাজার মানুষ এখনো তাদের বাড়িতে অবস্থান করছে। চারদিকে বন্যার পানি থাকায় তারা পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তারা এখন আশ্রয় শিবিরেও যেতে পারছে না, আবার পানি বেড়ে যাওয়ায় বাড়িতে থাকাও তাদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না।
বুধবার ত্রাণবাহী নৌকায় করে শোয়ে কিন জেলায় যেতে সাংবাদিকদের কয়েকঘন্টা লেগেছে।
এ সময় পথের দুধারে বেশ কিছু ডুবে যাওয়া বাড়ি দেখা গেছে। বাড়িগুলোর বাসিন্দারা ভেতরে আটকা পড়েছে।
মাউবিনে একটি মঠে দুর্গতদের জন্য চাল, নুডলস, বিস্কুট সংগ্রহ করা হচ্ছে। পাঁচ জন ভিক্ষু মঠটি পরিচালনা করেন।
এই বর্ষা মৌসুমে মিয়ানমার শুধু একাই বিপর্যয়ের শিকার হচ্ছে না। গত সপ্তাহে পার্শ্ববর্তী দেশ মেকং ও লাওসেও ব্যাপক বৃষ্টিপাত দেখা দিয়েছে। বৃষ্টি ও বন্যায় লাওসের একটি বাঁধ ভেঙ্গে গেছে।
এতে বেশ কয়েকটি গ্রাম ধ্বংস হয়েছে ও বহু গ্রামবাসী নিখোঁজ রয়েছে।