ডেস্ক রিপোর্ট
শিক্ষার্থীদের দাবি দাওয়া মেনে নেয়ার লক্ষ্যে সরকার ও পুলিশ একযোগে কাজ করছে উল্লেখ করে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)-র অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম অপপ্রচারে কান না দিয়ে শিক্ষার্থীদের ঘরে ফিরে যাওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন।
একই সাথে এ আন্দোলন থেকে শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে সরিয়ে আনার জন্য প্রত্যেক অভিভাবক ও শিক্ষকের সহযোগিতা কামনা করেছেন তিনি।
মনিরুল ইসলাম আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ অনুরোধ জানান। এসময় ট্রাফিকের অতিরিক্ত কমিশনার মীর রেজাউল আলম ও গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মো. আবদুল বাতেন উপস্থিত ছিলেন।
মনিরুল ইসলাম বলেন, আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে একটি স্বার্থান্বেষী মহল ২০১২ ও ২০১৩ সালের অনেক পুরনো ছবি ফেসবুকে দিয়ে এই আন্দোলনের নামে ছড়িয়ে দিচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘এই আন্দোলনের নামে ফেসবুকে বেশকিছু গ্রুপ বা পেজ খুলে উস্কানি ছড়ানো হচ্ছে। এই সুযোগ সন্ধানীদের খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে। তারা ধরা পড়লে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে। তারপরও তাদের বলব, এসব বন্ধ করুন। এসব অপকর্ম করে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের বিভ্রান্ত না করার জন্য সংশ্লিষ্টদের আহবান জানান তিনি।
ডিএমপি’র অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, বিভিন্ন সড়কে গাড়ীর লাইসেন্স চেকিংয়ের কারণে জনদুর্ভোগের সৃষ্টি হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা গাড়ী চেকিংয়ের নামে যা করছে তা কাম্য নয়। সড়ক অবরোধের কারণে হজ্ব যাত্রী এবং রোগীদের বেশি দুর্ভোগ হচ্ছে ।
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করবে সরকার উল্ল্খে করে মনিরুল ইসলাম তাদেরকে স্ব-স্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানান।
মনিরুল ইসলাম বলেন, কয়েকদিনের আন্দোলনে সড়কে বিভিন্ন ধরনের ৩০০ গাড়ী ভাংচুর করা হয়েছে। এছাড়াও ৮ টি গাড়ীতে আগুন দেওয়া হয়েছে। এসবের পাশাপাশি পুলিশের ৮টি গাড়ীতে ভাংচুর ও ৫ টি ভারী যানে আগুন দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, গাড়ী ভাংচুর যারা করছেন তারা ছাত্র হতে পারে না। এ কারণে তাদেও থেকে শিক্ষার্থীদের সতর্ক থাকার অনুরোধ করবো। পরিবহণে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে। তবে এই সমস্যা তো রাতারাতি সমাধান হবে না, সময় লাগবে।
তিনি বলেন, বুধবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, পুলিশ ও পরিবহন মালিকদের নিয়ে যে মিটিং হয়েছে তাতে যেসব সিদ্ধান্ত হয়েছে সেগুলো পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়নের চেষ্টা চলছে। এজন্য তিনি আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদেও কোনো ধরনের অপ্রচারে কান না দেওয়ার অনুরোধ করেন।
নিহত দুই শিক্ষার্থীর পরিবারকে প্রধানমন্ত্রী ২০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র দিয়েছেন বলে জানান তিনি।
মনিরুল আরো বলেন, আগামী মন্ত্রিসভায় নিরাপদ সড়ক আইন দ্রুত উত্থাপন করে তা পাস ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। আইনে ড্রাইভারদের কঠোর শাস্তির বিধান রাখা হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে সেগুলো আরো দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে।
গত রোববার রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে জাবালে নূর পরিবহনের একটি বাসের চাপায় দুই কলেজ শিক্ষার্থী নিহত এবং অন্তত ১২জন গুরুতর আহত হয়। এই ঘটনার পর শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ করে।