ক্রীড়া ডেস্ক
ক্যাপ্টেন ইনিংস! সহযোদ্ধারা লড়াইয়ের আগেই মাঠ ছাড়লেও হার মানেনি অধিনায়ক৷ বিরাট একাগ্রতায় ইংরেজদের বিরুদ্ধে লড়াই করলে ভারতের মান বাঁচান কোহলি৷ এজবাস্টনে সেঞ্চুরি করে জবাব দিলেন সমালোচকদের৷ ইংল্যান্ডের মাটিতে প্রথম সেঞ্চুরি কোহলি৷ ২০১৪ ভারতের ইংল্যান্ড সফরের ব্যাট হাতে চূড়ান্ত ব্যর্থ হয়েছিলেন বিরাট৷ কিন্তু এবার প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি করে তাঁর জাত চেনালেন ভারত অধিনায়ক৷
সেঞ্চুরি করেই হেলমেট খুলে আকাশের দিকে হাত ছুঁড়ে দেওয়াার পাশাপাশি হার্টথ্রব অনুষ্কার দেওয়া ওয়েডিং রিং-এ চুম্বন করেন কোহলি৷ এ নিয়ে টেস্ট ক্রিকেটে ২২টি শতরানের মালিক হলেন বিরাট৷ ইংল্যান্ডে কাউন্টি খেলার জন্য আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে একমাত্র টেস্ট খেলেননি ভারত অধিনায়ক৷ কিন্তু চোটের জন্য কাউন্টি খেলাও হয়নি বিরাটের৷ টি-২০ ও ওয়ান ডে সিরিজে চেনা ছন্দে দেখা না-গেলেও টেস্ট সিরিজের প্রথম ইনিংসেই জ্বলে উঠল কোহলির ব্যাট৷
চার নম্বরে ব্যাটিং করতে নেমে একা কুম্ভের মতো লড়াই করে ক্যাপ্টেন কোহলি৷ ৫৯ রানে লাঞ্চের আগে তিন উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকা ভারতীয় ইনিংসকে এগিয়ে নিয়ে যান তিনি৷ দিনের সায়াহ্নে একনম্বর ব্যাটসম্যানকে সঙ্গে নিয়ে সেঞ্চুরি করেন কিং কোহলি৷ অধিনাখোচিত ইনিংস খেলে ইংল্যান্ডের ২৮৭ রানের কাছাকাছি ভারতের স্কোরকে ২৭৪ রানে পৌঁছে দেন বিরাট৷ শেষ পর্যন্ত ১৪৯ রানে ইনিংসের শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন ক্যাপ্টেন কোহলি৷ ২২৫ বল খেলে ২২টি বাউন্ডারি ও একটি ওভার বাউন্ডারি মারেন বিরাট৷ মাত্র ১৩ রানে পিছিয়ে ভারত৷ অর্থাৎ এজবাস্টন টেস্টের ফয়সালা হতে দ্বিতীয় ইনিংসের হাত ধরেই৷
তবে এদিন ভারত অধিনায়কের সঙ্গে ছিল বিরাট ভাগ্য! ব্যক্তিগত ২১ ও ৫১ রানে জীবনদান পান কোহলি৷ জেমস অ্যান্ডারসনের বলে দ্বিতীয় স্লিপে বিরাটের সহজ ক্যাচ ফেলেন ডাউড মালান৷ আর হাফ-সেঞ্চুরির ঠিক পরেই স্যাম কুরানের বলে প্রথম স্লিপে ক্যাচ ফেলেন জো রুটের দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ ক্রিকেটের অ্যালেস্টার কুক৷ দু-দু’বার জীবন পেয়ে আর পিছনে তাকাননি ভারত অধিনায়ক৷ ১১ নম্বর ব্যাটসম্যান উমেশ যাদবকে সঙ্গে নিয়ে ইনিংসের সেরা পার্টনারশিপ (৫৭ রান) গড়েন কোহলি৷ বিরাট ইনিংসের প্রশংসায় প্রাক্তনরা৷
এজবাস্টন টেস্টে দ্বিতীয় দিনের শুরুটা মন্দ হয়নি টিম কোহলির৷ দিনের দ্বিতীয় ওভারেই ইংল্যান্ড ইনিংসের যবনিকা টানে ভারত৷ ২৮৭ রানে শেষ হয়ে যায় ইংরেজ ইনিংস৷ নিজের প্রথম ওভারেই স্যাম কুরানকে তুলে নিয়ে ইংল্যান্ড ইনিংস শেষ করে দেন মুহাম্মদ শামি৷
ভারতীয় ইনিংসের শুরুটা মন্দ হয়নি৷ ওপেনিং জুটিতে ৫০ রান তোলেন দুই ওপেনার শিখর ধাওয়ান ও মুরলী বিজয়৷ কিন্তু বাঁ-হাতি তরুণ পেসার স্যাম কুরানের সুইংয়ে কুপোকাত ভারতের টপ-অর্ডার৷ লাঞ্চ-ব্রেকের আগেই প্যাভিলয়নের পথ ধরেন বিজয়, লোকেশ রাহুল ও ধাওয়ান৷ তিনজনকেই প্যাভিলিয়নের রাস্তা দেখান বছর কুড়ির ইংরেজ পেসার৷ মাত্র দু’ মাস আগে টেস্ট অভিষেক হওয়া কুরান এদিন শুরু থেকেই ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের সমস্যায় ফেলেন৷ জুনে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে হেডিংলিতে টেস্ট অভিষেক হওয়া কুরান এদিন ৭৪ রান দিয়ে ভারতীয় ইনিংসের চারটি উইকেট তুলে নেন৷ দু’টি করে উইকেট নিয়েছেন জিমি অ্যান্ডারসন, বেন স্টোকস এবং লেগ-স্পিনার আদিল রশিদ৷ দ্বিতীয় দিনের শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে অ্যালেস্টার কুকের উইকেট হারিয়ে ৯ রান তুলেছে ইংল্যান্ড৷ অর্থাৎ ২২ রানের লিড ভারতের সামনে৷