বিদেশের মাটিতে দ্বিতীয়বারের টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতল বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ১৯ রানে হারিয়ে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জয়ের স্বাদ পেল টাইগাররা। এর আগে ওয়ানডে সিরিজও বাংলাদেশ জিতেছিল একই ব্যবধানে। ফ্লোরিডার লডারহিলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টি-টুয়েন্টিতে নির্ধরিত ওভার শেষে ১৮৪ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। জয়ের জন্য ১৮৫ রানের লক্ষ্য নিয়ে ব্যাট করতে নেমে ১৭১ ওভারে ৭ হারিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সংগ্রহ করে ১৩৫ রান। ফলে বৃষ্টি আইনে ১৯ রানে জিতেছেন সাকিব আল হাসানরা। ২০১২ সালের জুলাইয়ে আয়ারল্যান্ডেই আইরিশদের তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে ধবলধোলাই করেছিল বাংলাদেশ। বাংলাদেশ একের অধিক ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলেছে ১১টি। এর মধ্যে দেশে ৪টি, বিদেশে ৭টি। আয়ারল্যান্ডের সাথে একমাত্র জয় ছাড়া বকি সবকটি সিরিজে হারে বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজে এই জয় নতুন পালক যুক্ত করলো বাংলাদেশের সাফল্য।
টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ। শুরুটা ভালোও হয়েছিল টাইগারদের। মাত্র ৪.৪ ওভারে দলকে ৬১ রান এনে দেন দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও লিটন দাস। এর আগে ২২ বলে (৩.৪ ওভারে) দলকে ৫০ রান এনে দেন এই উদ্বোধনী জুটি। যা টি-টুয়েন্টিতে বাংলাদেশের ইতিহাসের দ্রুততম অর্ধশত রান। তবে তামিমের ১৩ বলে ২১ রানের ঝড়ো ইনিংসটি থামিয়ে দেন কার্লোস ব্র্যাথহোয়াইট। সৌম্য সরকার ফেরেন ৫ রানে এবং ব্যক্তিগত ১২ রানে বিদিয় নেন মুশফিক। মুশির বিদায়ের পর মাঠে নামে অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। অধিনায়ককে নিয়ে দলীয় শত রানের কোঠা পার করেন লিটন। তার আগে মাত্র ২৪ বলে টি-টুয়েন্টি ক্যারিয়ারের প্রথম হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন তিনি। তবে ব্যক্তিগত ৬১ রানে থেমে যায় তার বিস্ফোরক ইনিংসটি। অ্যাসলি নার্সে বলে আউট হয়ে সাজ ঘরে ফেরেন তিনি। ৩২ বল খেলে ৩টি ছক্কা ও ৬টি চারে সাজিয়েছেন তিনি নিজের ইনিংসটি।
এরপর সাকিবের সাথে এসে যোগ দেন মাহমুদউল্লাহ। ৩১ বলে দলকে ৪৪ রান এনে দেন তারা। কিন্তু কেমো পলের বলে সাকিব আউট হলে ভেঙে যায় জুটিটি। দলীয় রান তখন ১৪৬, দলের পঞ্চম উইকেট হিসেবে আউট হওয়ার আগে সাকিব করেন ২৪ রান। সাকিবের বিদায়ের পর আরিফুল হককে নিয়ে দলকে বড় রানের দিকে নিয়ে যান মাহমুদউল্লাহ। ২৫ বলে দুইজনের জুটিতে আসে ৩৮ রান। ২০ বলে অপরাজিত ৩২ রান করেন মাহমুদউল্লাহ। যেখানে ছিল একটি ছক্কা ও ৪টি চারের মার। অন্যদিকে আরিফুল হক ১৬ বলে করেছেন ১৮ রান। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে ২টি করে উইকেট নিয়েছেন ব্র্যাথহোয়াইট ও কেমো পল।
উইন্ডিজকে ১৮৫ রানের টার্গেট দিয়ে ২৬ রানে উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন মোস্তাফিজ। নিজের প্রথম ওভারে আন্দ্রে ফ্লেচারকে ৬ রানে ফিরিয়ে দেন। তারপর নাজমুলের ইনজুরিতে পঞ্চম ওভারের মাঝে বল হাতে নেওয়া সৌম্য সরকার ১৯ রানে ফেরান চ্যাডউইক ওয়ালটনকে। পরের ওভারে সাকিব আল হাসান নিজের প্রথম ওভারের শেষ বলে মারলন স্যামুয়েলসকে মাত্র ২ রানে বোল্ড করেন। ৩২ রানে ক্যারিবিয়ানরা হারায় তৃতীয় উইকেট।
রামদিন ও পাওয়েল প্রায় পঞ্চাশ রানের জুটি গড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে পথে ফেরাচ্ছিলেন। তাদের জুটিটা ৪৫ রানের বেশি হতে দেননি রুবেল। নিজের তৃতীয় ওভারে রামদিনকে ২১ রানে বোল্ড করেন তিনি। এর ঠিক ৬ বল পর আবু হায়দারের হাতে ক্যাচ দিয়ে মোস্তাফিজের শিকার হন পাওয়েল। ২০ বলে ২৩ রান করেন তিনি। এই দুই ব্যাটসম্যান আউট হলেও কার্লোস ব্র্যাথওয়েটকে নিয়ে ঝড় তোলেন আন্দ্রে রাসেল। ২০ বলে ৩২ রানের জুটি গড়েন তারা। ব্র্যাথওয়েটকে মাত্র ৫ রানে লং অনে সাব্বিরের ক্যাচ বানিয়ে স্বস্তি ফেরান আবু হায়দার। পরের ওভারে বাংলাদেশ তাদের বড় বাধা দূর করেন। মোস্তাফিজ তার শেষ ওভারের প্রথম বলে রাসেলকে আউট করেন। ২১ বলে ৬টি ছয় ও একটি চারে সাজানো তার ৪৭ রানের ইনিংস থামে আরিফুলকে ক্যাচ দিয়ে। মোস্তাফিজ ৩.১ ওভারে ৩১ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়ে সবচেয়ে সফল বোলার। একটি করে উইকেট পান সাকিব, সৌম্য, রুবেল ও আবু হায়দার।