স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ছাত্র বিক্ষোভের উস্কানিদাতাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন এবং বিক্ষোভকারীদেরও ‘সীমা লংঘন না করতে’ সতর্ক করে দিয়েছেন। ঢাকার জিরো পয়েন্টে বিক্ষোভকারীদের দেয়া বেপরোয়া গাড়ি চালকদের বিচারের সম্মুখীন করার এবং ট্রাফিক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণের আশ্বাসের অংশ হিসেবে দেশব্যাপী ট্রাফিক সপ্তাহ উদ্বোধনকালে তিনি বলেন, ‘বিক্ষোভরত ছাত্রদের উত্তেজিত করতে যারা প্রচারণা চালাচ্ছে তাদের জন্য কঠোর পদক্ষেপ অপেক্ষা করছে।’
উস্কানিদাতাদের বিরুদ্ধে সতর্ক বাণী উচ্চারণ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আইন-শৃংখলা বাহিনী এতোদিন তাদের ধৈর্য দেখিয়েছে, কিন্তু উস্কানিদাতারা যদি সীমা লংঘন করে তাহলে তারা (পুলিশ) তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেবে।’ মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের ধৈর্যের একটি সীমা আছে। এর মানে এই নয় যে, আমরা বিশৃংখলা সহ্য করবো। সেই সীমা ছাড়িয়ে গেলে আমরা ব্যবস্থা নেবো।’
আসাদুজ্জামান খান কামাল গতকাল রাতে ফেসবুকে আওয়ামী লীগের ধানমন্ডি কার্যালয়ে চার ছাত্রীকে আটকে রাখা এবং এক ছাত্রের চোখ তুলে নেয়ার প্রচারণাকে ‘সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন’ গুজব উল্লেখ করে গুজব রটনাকারী ও সহিংসতার উস্কানিদাতাদের সম্পর্কে তথ্য দিয়ে পুলিশকে সহযোগিতা করার জন্য সকলের প্রতি আহবান জানান। মন্ত্রী বলেন, ‘একটি কুচক্রী মহল সহজ-সরল শিক্ষার্থীদের মাঝে গুজব ও মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে।’ তিনি বলেন, অভিনেত্রী কাজী নওশাবা ফেসবুকে ভুয়া ভিডিও পোস্ট করে শিক্ষার্থীদের উস্কানি দিয়েছে এবং একজন ‘দৃশ্যত দায়িত্বশীল’ রাজনীতিবিদ তার দলের লোকদের কুমিল্লা থেকে ঢাকায় এসে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে যোগ দিতে বলেছেন। গত কয়েক দিনে হাজার হাজার স্কুল ড্রেস এবং ভুয়া আইডি কার্ড বিক্রি হয়েছে। অনুপ্রবেশকারীরা এসব ব্যবহার করে বিশৃংখলা সৃষ্টি করতে ছাত্র বিক্ষোভে যোগ দিয়েছে।
আসাদুজ্জামান খান কামাল সরকার বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীদের সকল দাবি-দাওয়া মেনে নিয়েছে উল্লেখ করে ছাত্র-ছাত্রীদের ঘরে ফিরে গিয়ে শ্রেণীকক্ষে যোগ দেয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আগামীকাল সড়ক নিরাপত্তা আইন মন্ত্রিসভায় বৈঠকে পেশ করা করা হবে।’
মন্ত্রী সকল সড়ক ব্যবহারকারীদের ট্রাফিক আইন মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে বলেন, নিয়ম-কানুন মেনে না চলার প্রবণতা ঘন ঘন সড়ক দুর্ঘটনা ও যানজট সৃষ্টি করে। পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)’র কমিশনার আছাদুজ্জামান মিঞা উপস্থিত ছিলেন।
শহিদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী দিয়া খানম মিম ও আবদুল করিম রাজীব গত ২৯ জুলাই রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে এক দুর্ঘটনায় নিহত হওয়ার পর থেকে শিক্ষার্থীরা সারাদেশে বিক্ষোভ করছে।