ইন্দোনেশিয়ার লম্বক দ্বীপে শক্তিশালী ভূমিকম্পে প্রায় ১শ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। ৬ দশমিক ৯ মাত্রার ওই ভূমিকম্পে কমপক্ষে ২০ হাজার মানুষ নিজেদের বাড়ি-ঘর হারিয়ে পথে বসেছে।
রোববার রাতে শক্তিশালী ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে ইন্দোনেশিয়ার বেশ কয়েকটি দ্বীপ। ভূমিকম্পে লম্বকের একটি মসজিদ ভেঙে পড়েছে। উদ্ধার কর্মীরা মসজিদের ধ্বংসাবশেষে উদ্ধার ও তল্লাশি অভিযান চালিয়ে যাচ্ছেন। ধারণা করা হচ্ছে, ধ্বংসস্তুপের নিচে কেউ হয়তো চাপা পড়ে থাকতে পারেন।
উত্তরাঞ্চলীয় লম্বকে কয়েক হাজার ভবন ধসে পড়েছে। জাতীয় তল্লাশি ও উদ্ধার সংস্থা জানিয়েছে, ইতোমধ্যেই ধ্বংসস্তুপের নিচ থেকে দু’জনকে উদ্ধার করা হয়েছে।
জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপণা সংস্থার এক মুখপাত্র ভূমিকম্পে উদ্ধারকাজের ছবি প্রকাশ করেছেন। সেখানে এক ব্যক্তিকে ভেঙে পড়া ভবনের নিচ থেকে বের করে আনতে দেখা গেছে।
গত সপ্তাহে লম্বকে আরও একটি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছিল। এতে ১৬ জনের মৃত্যু হয়। তবে রোববারের ভূমিকম্পে আগের সপ্তাহের ভূমিকম্পের চেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
আনুষ্ঠানিকভাবে ভূমিকম্প থেকে নিহতের সংখ্যা ৯৮ বলে জানানো হয়েছে। এদের মধ্যে অধিকাংশই ধ্বংসস্তুপের নিচে চাপা পড়ে মারা গেছেন। তবে কর্তৃপক্ষ বলছে, নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
সাহায্য সংস্থাগুলো বলছে, ভূমিকম্পে বাড়ি-ঘর হারানো বাস্তুচ্যুত মানুষদের আশ্রয়ের ব্যবস্থা করাকেই এখন তারা সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে। ভূমিকম্পের কেন্দ্র ছিল ভূগর্ভের ১০ কিলোমিটার গভীরে। ভূমিকম্পের পরপরই সুনামি সতর্কতা জারি করা হলেও কয়েক ঘণ্টা পর তা তুলে নেয়া হয়।
লম্বকের মাতারাম শহরের বেশ কিছু হাসপাতাল ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে আহতদের চিকিৎসাসেবা দিতে রীতিমত লড়াই করে যাচ্ছেন হাসপাতালের কর্মীরা। অনেক হাসপাতালের রোগীদের খোলা আকাশের নিচে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
একটি ভিডিওতে দেখা গেছে রোববার রাতে ভূমিকম্প শুরু হলে পার্শ্ববর্তী দ্বীপের লোকজন আতঙ্কে বাড়িঘর থেকে বেরিয়ে ছুটোছুটি শুরু করে। পর্যটকদের কাছে লম্বক দ্বীপটি বেশ জনপ্রিয়। ভূমিকম্পের সময় লম্বকে বহু পর্যটক ছিলেন। ভূমিকম্পের পর পরই সেখান থেকে তাদের নিরাপদে সরিয়ে নেয়া হয়।
ইন্দোনেশিয়ার দুর্যোগ প্রশমন সংস্থার মুখপাত্র এএফপিকে বলেন, লম্বকের প্রধান শহর মাতারামে বহু ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব ভবনের অধিকাংশই দুর্বল নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে তৈরি করা হয়েছে।