রোপা আমন ধানের মাজরা, পাতা মোড়ানো, লেদা পোকার মথ সহ ক্ষতিকর পোকা মাকড় দমনে কৃষকদের উদ্ধুদ্ধকরণের জন্য জয়পুরহাট সদর উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের প্রতিটি গ্রামে মঙ্গলবার থেকে ডাল, কুঞ্চি, বাশ দিয়ে টি আকৃতি বানিয়ে জমিতে স্থাপণের মাধ্যমে পার্চিং উৎসব শুরু করা হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, জয়পুরহাট সদর উপজেলার আয়োজনে নিরাপদ ফসল উৎপাদন প্রযুক্তির সম্প্রসারণে বিশেষ কর্মসূচির আওতায় জয়পুরহাট সদর উপজেলার বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পদকপ্রাপ্ত উপজেলা কৃষি অফিসার-কৃষিবিদ মো. সেরাজুল ইসলামের দোগাছী ইউনিয়নের থিয়ট ও শ্যামপুর গ্রামের মাঠে পার্চিং উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। এক বিঘা জমিতে ১০/১২টি ডাল, কুঞ্চি, বাশ দিয়ে টি আকৃতি বানিয়ে জমিতে স্থাপণের মাধ্যমে পাখি বসার ব্যবস্থা করা যায়।
সদর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. সেরাজুল ইসলাম সাজু জানান, জেলায় চলতি ২০১৮-২০১৯ মৌসুমে ৭২ হাজার ১২০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে উচ্চ ফলনশীল জাতের ৬৬ হাজার ৯২০ হেক্টর জমি, হাইব্রিড জাতের ৪ হাজার ১৭৯ হেক্টর ও স্থানিয় জাতের রয়েছে এক হাজার ২১ হেক্টর জমি। এতে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ৫ হাজার মেট্রিক টন চাল। নির্বিঘেœ রোপা আমন চাষ সফল ভাবে সম্পন্ন করতে কৃষকদের মাটির সুস্বাস্থ্য সুরক্ষায় জৈব সার, সুষম সার, গুটি ইউরিয়া সার ব্যবহার, এলসিসি, এডব্লিউডি প্রযুক্তি ব্যবহার, সারিতে রোপা আমন ধানের চারা রোপণ, ৮/১০ লাইন পর পর গ্যাপ দেয়া বা লোগো প্রযুক্তি ব্যবহারের পাশাপাশি উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধি, আইপিএম, এফএমএম কৃষক মাঠ স্কুলের কৃষক-কৃষাণী, কৃষক সংগঠণের সদস্যদের নিয়ে পরিবেশ সুরক্ষায় ও রোপা আমনের ক্ষতিকর পোকা-মাকড় দমণে আইপিএম পদ্ধতির আলোকে বালাইনাশক ব্যবহারের পরিবর্তে ধানের চারা রোপণের ৭-১০ দিন পর পরই জমিতে ডাল বা কুঞ্চি পুতে পার্চিং উৎসব পালন করা হচ্ছে। ধানের জমিতে ডাল বা কুঞ্চি পুতে বা ধৈঞ্চার গাছ লাগিয়ে পাখি বসার ব্যবস্থা করে দেয়ার নাম হলো পার্চিং। পার্চিং ব্যবহারে ফিঙ্গে, দোয়েল, ময়না, শালিক,বক সহ পতঙ্গভোজী পাখিরা ধানের জমিতে বসে ক্ষতিকারক পোকার মথ, কীড়া খায়, জৈবিকভাবে পোকা দমন হয়। এ জন্য ওই ধানের জমিতে বালাইনাশক ব্যবহারের প্রয়োজন হয় না, ফলে কৃষকদের উৎপাদন খরচ কমার পাশাপাশি পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হয় না। থিয়ট ও চকশ্যাম গ্রামের পৃথক পার্চিং উৎসবে সংশ্লিষ্ট ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাগণ এবং শতাধিক কৃষক-কৃষাণী উপস্থিত ছিলেন।