জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি একনেক পদ্মানদীর ড্রেজিং এবং ভাঙ্গন রোধ প্রকল্পসহ ৭,৮৬৬ কোটি টাকার ১২টি উন্নয়ন প্রকল্প আজ অনুমোদন করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে আজ রাজধানীর শেরে বাংলানগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত ২০১৮-১৯ অর্থ বছরের চতুর্থ বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়।
পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের জানান, মোট প্রকল্প ব্যয়ের মধ্যে জাতীয় কোষাগার থেকে পাওয়া যাবে ৭,০৭৫ কোটি টাকা এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর নিজস্ব তহবিল থেকে পাওয়া যাবে ৭ দশমিক ৯৮ কোটি টাকা এবং বাকি অর্থ পাওয়া যাবে প্রকল্প সহায়তা হিসাবে। তিনি জানান, ২০২২ সালের জুনের মধ্যে নড়িশাবাজার থেকে মোকসেদপুর পর্যন্ত দোহার উপজেলার মাঝিরচরে পদ্মা নদীর ড্রেজিং ও ভাঙ্গনরোধে ১ দশমিক ৪৮৩ কোটি টাকা ব্যয়ের একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে।
পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে পদ্মার ভঙ্গনে এলাকার বহু সম্পত্তি ও মূল্যবান সম্পদ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। অবিলম্বে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে নদী ভাঙ্গনে আরো অনেক প্রতিষ্ঠান নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। একনেক পাশাপাশি স্বর্ণদ্বীপে পর্যটন বাড়াতে সোনাপুর-চরমঙ্গহাট সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন করেছে। পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, সন্দ্বীপ, নিঝুমদ্বীপ, হাতিয়া এবং ভাষানচরের পর্যটনের গুরুত্ব অনুধাবন করে ১৬৮ দশমিক ৬৯ কোটি টাকা ব্যয়ে সোনাপুর-চরমঙ্গহাট প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে।
পরিকল্পনা মন্ত্রী কামাল নোয়াখালী সড়ক বিভাগের অধীন দুটি আঞ্চলিক মহাসড়কের অংশ হিসাবে সোনাপুর- চরমঙ্গহাট সড়ক উল্লেখ করে বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে শুধু এই এলাকায় পর্যটন উন্নয়ন হবে না, বিভিন্ন ধরনের পণ্য পরিবহনের একটি সহজ পথ তৈরি হবে। একনেক এ ছাড়া ডেস্কো এলাকার জন্য ১৮৬ কোটি টাকার স্মার্ট প্রি-পেইড মিটার সরবরাহ ও স্থাপনের একটি প্রস্তাবও অনুমোদন করেছে। তিনি বলেন, এই প্রকল্পের অধীন ২০২০ সালের মধ্যে দুই লাখের অধিক স্মার্ট প্রি পেইড মিটার সরবরাহ ও অনলাইন সংযোগ দেয়া হবে।
সভায় ৩,১৯৫ কোটি টাকা ব্যায়ে অর্থনৈতিক জোনের জন্য (নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে ও নরসিংদীতে) ভূমি অধিগ্রহণের একটি প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে। সভায় অনুমোদন দেয়া অপর প্রকল্পগুলো হচ্ছে, ১১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে বাংলাদেশ হ্যান্ডলুম বোর্ডের অধীন পাঁচটি বেসিক ট্রেনিং সেন্টারে পাঁচটি ট্রেনিং সেন্টার প্রতিষ্ঠা, একটি ফ্যাশন ডিজাইন ইনিস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা, পীরগঞ্জে ১৭৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ প্রতিষ্ঠা এবং ২৯৬ কোটি টাকা ব্যয়ে শিশু পরিবার ও ছোট মনি নিবাস প্রতিষ্ঠা করা।
সিলেটে ২৯০ কোটি টাকা ব্যয়ে হাইটেক পার্কের প্রাথমিক অবকাঠামো নির্মাণ করা, ২৯২ কোটি টাকা ব্যয়ে ফরিদপুর জেলার চরভদ্রাসনে পদ্মা নদী ভাঙ্গন রোধ ও ড্রেজিং প্রকল্প, ১৪৩ কোটি টাকা ব্যয়ে বীরগঞ্জ-খানসমা-দারোয়ারি, খানসমা-রাণীবন্দর এবং চিরির বন্দর মহাসড়ক প্রশস্তকরণ প্রকল্প অনুমোদন করা হয়। এ ছাড়া ৯৯ কোটি টাকার খুলনা-প্রিথিমপাশা-হাজিপুর-শরিফপুর সড়কে পিসি গিরদার সড়ক নির্মাণ ও ৭ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক নির্মাণ প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়।