রাজধানীতে কোরবানির পশুর চাহিদা মেটাতে ২৩টি অস্থায়ী পশুর হাট বসানোর পরিকল্পনা করলেও ৮টি পশুর হাট নিয়ে বিপাকে রয়েছে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন।
জানা গেছে, দফায় দফায় টেন্ডার আহ্ববান করেও শক্তিশালী সিন্ডিকেটের কারণে পশুর হাট নিয়ে অনিশ্চিয়তায় পড়েছে সিটি করপোরেশন। এতে করপোরেশনের অস্থায়ী হাট থেকে রাজস্ব আদায় লক্ষ্যমাত্রা পূরণের শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে ঢাকায় ২৩টি অস্থায়ী পশুর হাট বসানোর সিদ্ধান্ত নেয় ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন। এর মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে (ডিএসসিসি) ১৩টি এবং ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে (ডিএনসিসি) ১০টি। যার মধ্যে ডিএসসিসি এলাকায় অস্থায়ী ৭টি পশুর হাট চুড়ান্ত হয়েছে। আর ডিএনসিসি এলাকায় ৮টি। এর মধ্যে ডিএসসিসি এলাকার অস্থায়ী ৬টি পশুর হাটে কোনো দরপত্র পড়েনি। অন্যদিকে ডিএনসিসি এলাকায় অস্থায়ী ২টি পশুর হাটের জন্য দরপত্র পড়লেও তা কাঙ্ক্ষিত দর না আশায় চুড়ান্ত হয়নি।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, অস্থায়ী পশুর হাট ইজারার জন্য তিন দফা দরপত্র আহ্বান করার নিয়ম রয়েছে। তিন দফায় যদি কোনো হাট ইজারা না হয়, তবে সর্বোচ্চ দর দাতাকে হাট ইজারা দেয়া হবে। তবে মন্ত্রণালয় ইচ্ছে করলে ওই হাটের ইজারা বাতিল করে দিতে পারে। আবার কোনো হাটে কোনো ধরনের দরপত্র না পড়লে তখন জনস্বার্থে সিটি করপোরেশনকে খাস আদায়ের মাধ্যমে হাট বসানোর সিদ্ধান্ত দেয়া হয়।
ডিএসসিসিতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ডিএসসিসি ৬টি হাট বসানোর প্রস্তুতি শুরু করলেও টেন্ডারে অংশ নেয়নি কেউ। এমন কি তারা দরপত্র ক্রয় করলেও জমা দেননি। এক্ষেত্রে স্থানীয়রা দায়িত্ব পাবেন হাটের। ফলে কোনো ধরনের অর্থ খরচ ছাড়া হাট থেকে টাকা আদায় করতে পারবেন। আর আদায় হওয়া টাকার সামান্য কিছু সিটি করপোরেশনকে দিলে হয়। এ জন্য একদল সিন্ডিকেট দরপত্র জমা দেয়নি।
এ বিষয়ে ডিএসসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা আব্দুল মালেক বলেন, সিন্ডিকেট হচ্ছে কিনা আমরা জানি না। ৭টি চুড়ান্ত হয়েছে ৬টি চুড়ান্ত হয়নি। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নিবে।
এদিকে ডিএনসিসিতে ২টির হাটের মধ্যে কাঙ্ক্ষিত অর্থ না আশায় স্থগিত হয়েছে।
চুড়ান্ত না হওয়ার পেছনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিন্ডিকেটের কারণে দুই হাটের কাঙ্ক্ষিত দর আসেনি। আশিয়ান সিটির হাটে একাধিক সিন্ডিকেট থাকায় হাটটির টেন্ডার ঝুলে আছে।
এ বিষয়ে ডিএনসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে টেন্ডার হয় অনলাইনে ও প্রকাশ্যে। আমরা রাজস্ব পাচ্ছি। এরপরও কেউ সিন্ডিকেট কিংবা দুর্নীতির অভিযোগ করলে কিছু করার নেই। ২টি হাটের বিষয়ে মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নিবে।
ডিএনসিসির চুড়ান্ত হওয়া হাটগুলো হলো— উত্তরা ১৫নং সেক্টরের ২নং ব্রিজের পশ্চিমে গোলচত্বর পর্যন্ত সড়কের উভয় পাশের ফাঁকা জায়গা, খিলক্ষেত বনরুপা আবাসিক প্রকল্পের খালি জায়গা, ভাটারা (সাঈদ নগর) পশুর হাট, মোহাম্মদপুর বুদ্ধিজীবী সড়ক সংলগ্ন (বছিলা) পুলিশ লাইনের খালি জায়গা, মিরপুর সেকশন ২ (ইস্টার্ন হাউজিং) খালি জায়গা, মিরপুর ডিওএইচ’র উত্তর পাশের সেতু প্রোপার্টি ও সংলগ্ন খালি জায়গা, তেজগাঁও পলিটেকনিক মাঠ ও কুড়িল ৩০০ ফিটে খালি জায়গা। আর উত্তরখানের ময়নারটেক মাঠ ও আশিয়ান সিটির হাটের জন্য এখনো কাঙ্ক্ষিত দর পাওয়া যায়নি।
এদিকে ডিএসসিসিতে চুড়ান্ত হওয়া হাটগুলো হলো— মেররাদিয়া বাজার সংলগ্ন খালি জায়গা, ঝিগাতলা হাজারীবাগ মাঠ সংলগ্ন খালি জায়গা, রহমতগঞ্জ খেলার মাঠ সংলগ্ন খালি জায়গা, পোস্তখোলার শশ্মানঘাট সংলগ্ন খালি জায়গা, শ্যামপুর বালুর মাঠ সংলগ্ন খালি জায়গা, ধুপখোলার ইস্ট এন্ড ক্লাব মাঠ সংলগ্ন খালি জায়গা ও কমলাপুর ব্রাদার্স ইউনিয়নের বালুর মাঠ সংলগ্ন খালি জায়গা।