বঙ্গবন্ধু দেশের মানুষকে প্রাধান্য দিয়ে ডায়রি লিখেছেন : আনিসুজ্জামান

জাতীয় অধ্যাপক ও বাংলা একাডেমীর সভাপতি আনিসুজ্জামান বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর ‘কারাগারের রোজনামচা’ ও ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ বই দুটি পাঠ করলে তাঁরই কন্ঠ শোনা যায় পাতায় পাতায়। তিনি যেভাবে কথা বলতেন, যে সব শব্দ ব্যবহার করতেন, ঠিক সেভাবেই তিনি ডায়রি লিখেছেন। বাঙালি জাতির স্বাধীনতা আনার জন্যে কিভাবে সংগ্রাম করেছেন চব্বিশটি বছর সে সবই লিখেছেন।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শুধু রাজনীতিক নন, তিনি যে কত বড় লেখক ছিলেন তা বই দুটি পাঠ করলে আরও পরিস্কার হয়ে যায়। জেলখানায় বসে তার কর্মজীবন ও আন্দোলনের ঘটনাপ্রবাহ লেখার ক্ষেত্রে নিজেকে কখনও বড় করে তুলে ধরেননি। দেশের মানুষ ও দলের কর্মীদের প্রাধান্য দিয়ে ডায়রি লিখেছেন। এখানেও তিনি অত্যন্ত মহান ব্যক্তিত্বের পরিচয় রেখেছেন। অধ্যাপক আনিসুজ্জামান আজ সন্ধ্যায় জাতীয় জাদুঘরে কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে ‘বঙ্গবন্ধুর : কারাগারের রোজনামচা ও অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির ভাষণে এসব কথা বলেন।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় জাদুঘর আয়োজিত এই সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন জাদুঘরের ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতি শিল্পী হাসেম খান। বই দুটির ওপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ড. মুহম্মদ সামাদ। আলোচনায় অংশ নেন বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান ও রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. বিশ্বজিৎ ঘোষ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক আবদুল মান্নান ইলিয়াস।

শামসুজ্জামান খান বঙ্গবন্ধুর বই দুটি প্রকাশের ঘটনাপ্রবাহ উল্লেখ করে বলেন, বঙ্গবন্ধুর লেখা ডায়রি থেকে বই দুটি প্রকাশ করা হয়েছে। তিনি কারাগারে থাকাকালে তার সাথে বেগম মুজিব সাক্ষাৎ করতে গেলেই খাতা নিয়ে যেতেন। এই খাতায়ই বঙ্গবন্ধু জেলখানায় ডায়েরি লিখেন। ডায়েরিগুলো একাত্তরের যুদ্ধের সময় বেগম মুজিব তাঁর তাৎক্ষণিক বুদ্ধির জন্যে রক্ষা করতে পেরেছিলেন।

ড. মুহম্মদ সামাদ বই দুটির বিভিন্ন অংশে বঙ্গবন্ধুর নানা বিষয় তুলে ধরে বলেন, ছাত্র জীবন থেকে বঙ্গবন্ধু রাজনীতিতে যেসব কাজ করেছেন তা দিয়ে শুরু করেন ডায়রি লেখা। বাঙালি জাতির স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধে তিনি কতটা পরিশ্রম করেছেন, তা বই দুটি পাঠ করলেই জানা যায়।

শিল্পী হাসেম খান বঙ্গবন্ধুর বই দুটি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্তির অনুরোধ করে বলেন, আমাদের ভবিষ্যত শিক্ষার্থীদের বই দুটি পড়া ও জানা প্রয়োজন। পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত হলে বই দুটি সম্পর্কে লাখ লাখ ছেলেমেয়ে জানতে পারবে যে, দেশের স্বাধীনতা কত ত্যাগের বিনিময়ে এসেছে।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে