শিগগিরই দেশে আনা হবে বোমারু মিজানকে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

ডেস্ক রিপোর্ট

জঙ্গি বোমারু মিজানকে ভারত থেকে শিগগিরই দেশে ফিরিয়ে আনা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। সকালে, রাজধানীর মনিপুরীপাড়ার বাসভবনে হিজরা সম্প্রদায়ের নেতাদের সাথে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।

universel cardiac hospital

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে আমাদের আইন রয়েছে। আমাদের মধ্যে বন্দী বিনিময় চুক্তি রয়েছে। আমরা সময় মতো তাকে (মিজান) নিয়ে আসবো।’

২০১৪ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি ময়মনসিংহের ত্রিশালে প্রিজন ভ্যানে হামলা চালিয়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জঙ্গি সালাউদ্দিন সালেহীন ওরফে সানি ও রাকিবুল হাসান ওরফে হাফেজ মাহমুদের পাশাপাশি যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত মিজানকেও ছিনিয়ে নেয় জঙ্গিরা। পরে রাকিবুল হাসান ধরা পড়লে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন তিনি। আর বাকিদের খোঁজ পাওয়া যায়নি। এরা ভারতে পালিয়ে গেছেন বলে সে সময়ই গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। আর গত সোমবার ব্যাঙ্গালুরুর এক গোপন আস্তানা থেকে মিজানকে গ্রেপ্তার করে দেশটির জাতীয় তদন্ত সংস্থা-এনআইএ।

২০০৫ সালে সারাদেশে জেএমবির একযোগে বোমা হামলা চালানোর সময় চট্টগ্রামে হামলাগুলোতে নেতৃত্ব দেন মিজান। একটি মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ছাড়াও তিনি ১৮ মামলার আসামি।

মিজান তেজগাঁও পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ছাত্র ছিল। তার বাড়ি জামালপুরের মেলান্দহে।

মিজান ভারতে পালিয়ে গিয়ে সে দেশের জঙ্গিদের সঙ্গে মিশে অপতৎপরতা চালাতে থাকেন বলে তথ্য আছে সে দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর।

২০১৪ সালের ২ অক্টোবর ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বর্ধমান শহরের খাগড়াগড়ের একটি দোতলা বাড়িতে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে দুই জঙ্গি নিহত এবং একজন আহত হয়।

ভারতের জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা-এনআইএ জানতে পারে, খাগড়াগড়ে জঙ্গি প্রশিক্ষণের অন্যতম হোতা বোমারু মিজান। তিনি পশ্চিমবঙ্গে অবস্থান নিয়ে জঙ্গি কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। পরে খাগড়াগড় মামলার আসামি হিসেবে বোমারু মিজানকে ধরতে ১০ লাখ রুপি পুরস্কার ঘোষণা করা হয়।

এর আগে ২০০৯ সালের ১৫ মে কাফরুলের তালতলা বাসস্ট্যান্ড থেকে বোমারু মিজানকে গ্রেপ্তার করা হয়। বোমা মিজানকে সঙ্গে নিয়ে তার মিরপুরের বাসায় যায় র‌্যাব। তখন বাসার ভেতরে থাকা বোমারু মিজানের স্ত্রী হালিমা র‌্যাবকে লক্ষ্য করে বোমা বিস্ফোরণ ঘটান। পরে ওই বাসা থেকে বোমা ও বিস্ফোরকসহ হালিমাকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। এ ঘটনায় মিজান ও তার স্ত্রীকে ২ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে ভারতে বিভিন্ন চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা আশ্রয় নিয়েছে। তাদের ফেরত আনার ব্যাপারে আমাদের কথাবার্তা চলছে। সন্ত্রাসীদের ফেরত আনার বিষয়টি চলমান। তাদের সেখানে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ফেরত দেওয়ার সম্মত হলে আমরা তাদের ফিরিয়ে নিয়ে আসবো। তবে খুব শীঘ্রই ভারতে গ্রেপ্তার হওয়া বোমারু মিজানকে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে।’

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, হিজরা সম্প্রদায়ের জীবন মান উন্নয়নে সরকার একটি রূপরেখা তৈরি করেছে। এরআগে, রাস্তাঘাট, পার্ক কিংবা অন্যান্য জায়গায় আর চাঁদাবাজি না করার শপথ নেন হিজরা সম্প্রদায়ের নেতারা। এসময় হিজরা সেজে মানুষকে হয়রানীকারীদের আইনের আওতায় আনতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সহায়তাও কামনা করেছেন তারা।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে