জাতীয় ইহুদি রাষ্ট্র আইন: হাজার হাজার লোকের বিক্ষোভ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

বিতর্কিত ইহুদি জাতীয় রাষ্ট্র আইনের প্রতিবাদে তেলআবিবে হাজার হাজার লোকের বিক্ষোভ হয়েছে। শনিবার রাতে ওই আইনের প্রতিবাদে আয়োজিত বিক্ষোভ কর্মসূচিতে ফিলিস্তিনি আরবদের পাশাপাশি ইহুদিরাও অংশ নেন। এ সময় আইনটি বাতিলেরও দাবি জানান তারা। এর আগে গত সপ্তাহে একই ইস্যুতে বিক্ষোভ করে দ্রুয়েজ সম্প্রদায়ের লোকেরা।

কিন্তু বিশ্লেষকরা বলছেন, এর ফলে অন্যরা দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হিসেবে গণ্য হবেন। এ ছাড়া সেখানকার ১৮ লাখ ফিলিস্তিনি আরবসহ অন্যান্য সম্প্রদায়ের লোকরা কোণঠাসা হয়ে পড়বেন।

universel cardiac hospital

উল্লেখ্য গত ১৯ জুলাই ইসরাইলি পার্লামেন্ট নেসেটে বিলটি পাস হয়। এই আইনের ফলে ইসরাইল ইহুদি রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিতি লাভ করবে। যদিও ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলছেন, সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে ইসরাইল ইহুদি রাষ্ট্র হলেও এখানে সবার অধিকার নিশ্চিত করা হবে।

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া এক ইহুদি বলেন, আইন অনুযায়ী ইসরাইলের সব নাগরিকের অধিকার সমান হওয়া উচিত।

পরিচয় প্রকাশ না করা এক বিক্ষোভকারী আলজাজিরাকে বলেন, ‘সত্যিই বিস্ময়কর। আমার মনে হয়, এই প্রথম ইহুদি ও ফিলিস্তিনিরা কোনো ইস্যুতে এক হয়েছে। সত্যিকার অর্থেই এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত তাদের জন্য যারা গণতন্ত্র ও সমতায় বিশ্বাস করেন।’

ডেন মেইরি নামের ওই ইহুদি বলেন, ‘আমরা অনেক ইসরাইলি ইহুদি আছি যারা বিশ্বাস করি, অন্যদেরও (সংখ্যালঘু) অধিকার আমাদের সমান এবং সেটা শিক্ষা, আর্মি, বিশ্ববিদ্যালয়, পার্লামেন্ট এবং সকল ক্ষেত্রে।’

আইনটি পাস হওয়ার পর থেকেই নেতানিয়াহু এর পক্ষে সাফাই গেয়ে যাচ্ছেন। তিনি বলছেন, সংখ্যাগরিষ্ঠ ইসরাইলিদের নিজস্ব সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার রয়েছে। তবে ইসরাইলি গণতন্ত্রে সকলের অধিকার সুরক্ষার নিশ্চয়তা থাকবে বলেও জানান নেতানিয়াহু।

প্রসঙ্গত, সদ্য পাস হওয়া এই আইন অনুযায়ী ইসরাইলের রাষ্ট্রীয় ভাষা হবে হিব্রু। অথচ এর আগে হিব্রু ও আরবি দুটোই রাষ্ট্রীয় ভাষা ছিল। এর ফলে ইসরাইলে আরবি ভাষা গুরুত্বহীন হয়ে পড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। এ ছাড়া এই ‘ন্যাশন-স্টেট বিল’র কারণে দখলকৃত ফিলিস্তিনি ভূমিতে ইসরাইলি বসতি স্থাপনকে জাতীয়ভাবে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করা হবে এবং রাষ্ট্রীয়ভাবে এটিকে অবশ্যই উৎসাহিত করতে হবে।

দ্রুয়েজ সম্প্রদায়ের লোকরা আরবি ভাষাভাষী। তবে ধর্ম ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে তাদের নিজস্ব ঐতিহ্য রয়েছে। ইসরাইলের ৮৮ লাখ জনসংখ্যার ২ শতাংশ দ্রুয়েজ। তারা মূলত ইসরাইলের উত্তরাঞ্চলীয় গালিলী ও কার্মেল এলাকায় বাস করেন।

উল্লেখ্য, এর আগে গত সপ্তাহে ওই বিলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছে দেশটির সংখ্যালঘু দ্রুয়েজ সম্প্রদায়ের লোকজন। এ সময় তারা ‘সকল নাগরিকের সমান অধিকার’ দাবি করেছেন।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে