পিতৃস্বীকৃতির দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে যমজ সন্তানের জননী

কলমাকান্দা (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি

যমজ দুই সন্তানের পিতৃস্বীকৃতির দাবিতে সালেহা আক্তার৤ মামলার পর অভিযুক্তের আত্মসর্মপণ

নেত্রকোনার কলমাকান্দায় যমজ সস্তানের জননী সালেহা আক্তার (২২) তার যমজ সন্তানদের নিয়ে প্রেমিকের বাড়িতে অবস্থান করছেন। তিনি গত বুধবার থেকে উপজেলার কৈলাটী ইউনিয়নের বেলতলী গ্রামের আফসর উদ্দিনের ছেলে মজনু মিয়ার (২৫) বাড়িতে স্ত্রীর অধিকার ও যমজ সন্তানের পিতৃ পরিচয়ের দাবিতে অবস্থান করছেন।

এ ঘটনায় কলমাকান্দা থানায় সালেহার বাবা সাফাজ্জল হোসেনের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ শনিবার রাতে প্রেমিক মজনু মিয়ার মা জাকিয়া আক্তার শোভাষকে আটক করেছে।

universel cardiac hospital

সালেহার পরিবার ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, সামাজিক ও পারস্পরিক আলোচনার মাধ্যমে প্রায় ছয় মাস পূর্বে উপজেলার কৈলাটী ইউনিয়নের বেলতলী গ্রামের সাফাজ্জল হোসেনের মেয়ে সালেহা আক্তারের সঙ্গে একই ইউনিয়নের বীর সিধলী গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে বিল্লাল হোসেন (৩০) এর বিয়ে সম্পন্ন হয়। গত ২১ জুলাই শনিবার সালেহা তার পিত্রালয়ে যমজ দুই ছেলে সন্তানের জন্ম দেন। এরপর এনিয়ে ওই এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়।

সালেহা আক্তারের স্বামী বিল্লাল হোসেন জানান, তিনি চলতি বছরের ১৫ ফ্রেরুয়ারি সালেহা আক্তারের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। আর তাদের বিয়ের বয়স ছয় মাস কিন্তু সালেহা যে যমজ দুই সন্তানের জন্ম দিয়েছে তাদের বয়স নয় মাস। তাই তিনি ওই দুই সন্তানের পিতা নন।

জমজ সন্তানের জননী সালেহা আক্তার জানান, বিয়ের আগে একই গ্রামের আফসর উদ্দিনের ছেলে মজনু তাকে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। এ প্রস্তাবে সারা দিয়ে তিনি মজনুর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলেন। এরই এক পর্যায়ে মজনু তাকে বিয়ে করবে বলে তার সঙ্গে দৈহিক সম্পর্কে লিপ্ত হয়। এই দুই যমজ সন্তানের বাবা মজনু। সালেহার গর্ভে চার মাসের সন্তান থাকাকালীন সময়ে তার পরিবার সামাজিকভাবে উপজেলার কৈলাটী ইউনিয়নের বীর সিধলী গ্রামের বিল্লালের সঙ্গে বিয়ে দেয়।

তিনি আরো জানান, গত বুধবার থেকে তিনি ও তার সন্তানদের অধিকারের দাবিতে মজনুর বাড়িতে অবস্থান করছেন। কিন্তু মজনুর পরিবারের কেউ তাকে ও তার সন্তানদের মেনে নিচ্ছে না। উল্টো বাড়ি থেকে যমজ সন্তানসহ তাকে মারপিট করে টেনে হেঁছড়ে বের করে দিতে চাইলে প্রতিবেশিরা তাতে বাধা দেয়।

সালেহার মা জুবেদা খাতুন বলেন, সালেহার প্রেমের কথা জানা ছিলো না। আর তার গর্ভে যে সন্তান রয়েছে শরীর দেখে আমি তা বুঝতে পারিনি। বিষয়টি না জেনেই আমরা সালেহাকে বিল্লালের সঙ্গে বিয়ে দিই। সালেহার যমজ সন্তান প্রসবের পর বিল্লাল ওই সন্তানের পিতা নয় বলে অস্বীকার করে। এই বিষয়টি নিয়ে সালেহাকে আমরা জিজ্ঞাসা করলে মজনু ওই যমজ সন্তানের পিতা বলে জানায়।

এ বিষয়ে মজনুর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যানি। তবে মজনুর বোন মিতু আক্তারের দাবি সালেহার গর্ভে যে  সন্তান জন্ম হয়েছে ওই সন্তানদের পিতা তার ভাই মজনু নয়।

কলমাকান্দা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) একেএম মিজানুর রহমান অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মজনুর মাকে আটক করা হয়েছে। এলাকাবাসী বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা চালাচ্ছে।

 

 

 

 

 

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে