বাংলার মেয়েরা আজ গ্রুপের দ্বিতীয় এবং শেষ খেলায় মুখোমুখি হবে। নেপালের বিপক্ষে বাংলাদেশের অনূর্ধ্ব-১৫ দলের খেলা শুরু হবে সন্ধ্যা ৭টায়। গত বছর ঢাকায় অনুষ্ঠিত মেয়েদের সাফ অনূর্ধ্ব-১৫ চ্যাম্পিয়নশিপের প্রথম আসরে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হয়। এবার দ্বিতীয় আসর হচ্ছে ভুটানে।
নেপাল এবং বাংলাদেশ এরই মধ্যে সেমিফাইনালে উঠা নিশ্চিত করেছে। কারণ ভুটানে অনুষ্ঠানরত মেয়েদের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে (অনূর্ধ্ব-১৫) নিজেদের গ্রুপের প্রথম খেলায় বি গ্রুপে বাংলাদেশ ১৪-০ গোলে পাকিস্তানকে হারিয়ে সেমির পথে অনেকটা এগিয়ে ছিল। গ্রুপের দ্বিতীয় খেলায় নেপাল ৪-০ গোলে পাকিস্তানকে হারানোর কারণে পাকিস্তান টুর্নামেন্ট হতে বিদায় নিয়েছে আর নেপাল জয় পাওয়ায় সেমিফাইনালে উঠে গেছে। বাংলাদেশও সেমিফাইনালের টিকিট পেয়ে যায়।
কাগজে-কলমে আজ ভুটানের থিম্পুর মাঠে বাংলাদেশ এবং নেপালের লড়াইটা হবে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লড়াই। বাংলাদেশের পরিষ্কার জবাব গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হতে হবে। কোনো ম্যাচ হারা চলবে না। নেপালের বিপক্ষে বাংলাদেশের মেয়েরা আগেও জিতেছে। এবারও জয় নিয়ে মাঠ ছাড়বে এমন কথা বলা হলেও ফুটবলররা আজ নেপালকে নিয়ে খুব সিরিয়াস। তারা পাকিস্তানকে ১৪ গোলে হারালেও সেই জয়ের কথা ভুলে গিয়েছে।
গোলকিপার মাহমুদা, তহুরা, মনিকা, নীলা, রিতু পর্ণা, নাজমা, আঁখী, আনাই মগিনি, মারিয়া মান্ডারা সব সব ভুলে গিয়ে নতুন করে নেপালকে হারানোর জন্য ভুটানের চাংলিমিথান স্টেডিয়ামে নামবে আজ। ডিফেন্ডার আঁখী তার সতীর্থ খেলোয়াড়দের পক্ষেই বললেন, ‘পাকিস্তানের বিপক্ষের জয়টা প্রথম ম্যাচের জয়। যে কোনো টুর্নামেন্টের প্রথম খেরায় একটা জয় দরকার। যেন শুরুটা ভালো করা যায়। সেটা হয়েছিল পাকিস্তানকে হারিয়ে। এখন আমরা সেটা ভুলে গিয়ে নতুন অভিযানে নামব আজ।’
দীর্ঘদেহী ডিফেন্ডার আঁখী পাকিস্তানের বিপক্ষে দুর্দান্ত একটা গোল করেছিলেন। এই ফুটবলার নিজের ডিফেন্স লাইন ছেড়ে গিয়ে উপরে উঠে যান। মোহামেডানের ডিফেন্ডার কায়সার হামিদের মতো প্রতিপক্ষের রক্ষণভাবে গিয়ে গোল করেন আঁখী। নেপালের বিপক্ষেও আক্রমণে জোগান দেবেন বলে জানিয়েছেন। গোলের সুযোগ এলে গোল করবেন। তার মতে নিজের গোলের চেয়ে দলের জয়টাই আগে।
গত ৯ আগস্ট বাংলাদেশ হারায় পাকিস্তানকে। মাঝে তিনটি দিন গেলেও একটি দিনও বসে ছিল না মেয়েরা। কোচ গোলাম রাব্বানী ছোটন দিন-রাত বাংলার মেয়েদের নিয়ে কাজ করে গেছেন। তার লক্ষ্য শিরোপা ধরে রাখতে একটা একটা করে বাধা অতিক্রম করবে। ছোটন বলেছেন নেপালের বিপক্ষেও আমরা জয় ছাড়া অন্য কিছু ভাবছি না।’ স্ট্রাইকার তহুরা বলেন, ‘সবাই আমাদের দোয়া করবেন যেন আমরা আরেকটা জয় এনে দিতে পারি। গোল করতে পারি। ভালো খেলতে পারি। নেপাল পাকিস্তানের চেয়েও শক্তিশালী দল। তাদের দলে পুরোন কিছু খেলোয়াড়ও আছেন যাদের সঙ্গে আমরা আগেও খেলেছি।’
আনাই মগিনিও পাকিস্তানের বিপক্ষে গোল করেছিলেন। ভুটানের ফুটবল একাডেমীর মাঠে অনুশীলন করে গতকাল ভুটানে সংবাদ মাধ্যমকে আনাই মগিনি বলেন, ‘আমরা পাকিস্তান নেপাল খেলাটা দেখেছিলাম। নেপাল শক্তিশালী হলেও তাদের অনেক কিছু আমরা আমাদের নোট বুকে টুকে নিয়েছি। যেটা আজকে আমরা মাঠে কাজে লাগাতে পারব।’
নেপালের কোচও বাংলাদেশকে শক্তিশালী বলেছেন। এখন মাঠে প্রমাণ করার পালা। ভুটানে অনূর্ধ্ব-১৫ মেয়েদের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে দুই গ্রুপে ৬টি দল খেলছে। বি গ্রুপে বাংলাদেশ, নেপাল ও পাকিস্তান এবং ‘এ’ গ্রুপে ভারত, ভুটান ও শ্রীলঙ্কা খেলছে। ভারত ১২-০ গোলে শ্রীলঙ্কাকে, ভুটান ৬-০ গোলে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে তারাও সেমিফাইনালে উঠা নিশ্চিত করেছে। বাংলাদেশ ও নেপাল মাঠে নামার আগেই ভারত ও ভুটান খেলা শেষ হয়ে যাবে।