লর্ডসে ভারতীয়দের ব্যাটিং ব্যর্থতায় আজ ব্যাপক সমালোচনা করেছে দেশটির গণমাধ্যম। সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে একদিন বাকি থাকতেই স্বাগতিকদের কাছে ইনিংস ব্যবধানে পরাজিত হয় সফরকারী ভারত। এই পরাজয়ে ৫ ম্যাচের সিরিজে ০-২ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়েছে ক্রিকেট পাগল দেশটি।
মেইল টুডে পত্রিকা ভারতীয় দলের পারফরমেন্সকে ‘অপমানকর পরাজয়’ বলে অভিহিত করেছে। সফরকারীরা দুই ইনিংসে যথাক্রমে ১০৭ ও ১৩০ রানে অল আউট হবার পর দ্য হিন্দু শিরোনাম করেছে, ‘আরেকটি ভয়ঙ্কর ব্যাটিং প্রদর্শনী ভারতকে সর্বনাশের দিকে ঠেলে দিয়েছে।’ ভারতীয় রিপোর্টাররা তাদের ব্যাটসম্যানদের সমালোচনার পাশাপাশি প্রশংসা করেছে ম্যাচে ৯ উইকেট শিকার করা ইংলিশ পেসার জেমস এন্ডারসনের।
হিন্দুস্তান টাইমস লাল ব্যানারে তাদের শিরোনামে লিখেছে, ‘ব্যাটসম্যানদের ফের আত্মসমর্পনে লর্ডসে লজ্জিত হল ভারত’। এতে বলা হয়, বিশ্বের শীর্ষ টেস্ট দলের আগ্রাসী হয়ে খেলা উচিত ছিল। বিদেশের কন্ডিশনে ব্যাটিং সংকটে ছিন্নভিন্ন হবার আগে সেটিই ছিল উত্তম পন্থা।’ দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়ার শিরোনামে লেখা হয়েছে ‘লর্ডসে নিঃস্ব হয়ে গেল ভারত।’ এতে ইংল্যান্ডের এন্ডারসনকে ‘চিত্তাকর্ষক রচয়িতা’ বলে অভিহিত করা হয়।
এদিকে ভারতের কিংবদন্তী ব্যাটসম্যান শচিন টেন্ডুলকার অপরাজিত ১৩৭ রান সংগ্রহকারী ইংলিশ ব্যাটসম্যান ক্রিস ওকস এবং পেসারদের প্রশংসা করেছেন। নিজের টুইট বার্তায় তিনি বলেন, ‘ইংল্যান্ড অলরাউন্ড পারফর্ম করেছে। পেস বোলার জিমি (৯ উইকেট) ও স্টুয়ার্ট ব্রড (৮ উইকেট) যেমন অসাধারণ পারফর্ম করেছে, তেমনি ব্যাটসম্যান ক্রিস ওকসের পারফর্মেন্সও ছিল অসাধারণ। এখন আরো ভাল ক্রিকেট উপহার দিয়ে ভারতকে এই হতাশা কাটাতে হবে।’
এদিকে ভারতীয় অধিনায়ক বিরাট কোহলি এই আত্মসমর্পনের কোন অজুহাত দেখাননি। ভারতীয় ধারাভাষ্যকাররা বেশী করে উপস্থাপন করেছে চার ইনিংসে ভারতের টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতার চিত্র। এতে উল্লেখযোগ্য ছিল ওপেনার মুরালি বিজয়ের জোড়া শূন্য ও টেস্ট বিশেষজ্ঞ চেতেশ্বর পুজারার ব্যর্থতা।
সাবেক টেস্ট ব্যাটসম্যান ভিভিএস লক্ষ্মন টুইট বার্তায় বলেন, ‘অপরিচিত কন্ডিশনে কাট করতে গিয়ে, প্রতিপক্ষ কি রকম বল করছে সেটি পড়তে না পারার কারণে লর্ডস টেস্টে কোন লড়াই ছাড়া হার মেনেছে ভারত। আশা করি এখান থেকে দ্রুত শিক্ষা নিয়ে ব্যাটসম্যানরা তা কাজে লাগাবে এবং দলকে এগিয়ে নিতে সহায়তা করবে।’
বিশিষ্ট ধারাভাষ্যকার হার্ষা ভোগলে বলেন, ‘বিদেশের মাটিতে নতুন বল একটি বড় ফ্যাক্টর। যখন ওপেনাররা নতুন বলে ব্যর্থ হয়, তখন এর চাপ গিয়ে পড়ে মিডল অর্ডারে। ভারত তাদের ওপেনারদের কাছ থেকে কিছুই পায়নি। যে কারণে তারা লড়াইয়ে ফিরতে পারেনি। অন্তত একজনকে হলেও ভাল শুরু করতে হয়।’ আগামী শনিবার নটিংহ্যামের ট্রেন্টব্রিজে শুরু হবে সিরিজের তৃতীয় টেস্ট।