টম ক্রুজ নামটি শুনলেই চোখে ভেসে ওঠে ধুন্ধুমার অ্যাকশন হিরোর প্রতিচ্ছবি। কখনো উড়োজাহাজের চাকা ধরে ঝুলছেন, আবার কখনো তাঁকে দেখা যায় উঁচু ভবনের ছাদ থেকে লাফ দিতে। আর ভিলেনকে ধরতে বা কখনো ‘চাচা আপন প্রাণ বাঁচা’বলে দৌড়াদৌড়ি তো আছেই। চরিত্রাভিনেতা হিসেবেও টম ক্রুজকে খারাপ বলা যাবে না। একই সঙ্গে অ্যাকশনবিহীন চলচ্চিত্রেও স্বচ্ছন্দ তিনি।
তবে সব চলচ্চিত্রের ব্যবসায়িক সফলতা সমান হয় না। স্বাভাবিকভাবেই অ্যাকশন, থ্রিলার ছবির বাজারমূল্য বেশি। চিত্তের বিনোদনের জন্য বেশির ভাগ দর্শক এসব ছবিকে বেছে নেন। ফলে টম ক্রুজও এমন চলচ্চিত্রে অভিনয় করতে আগ্রহী হবেন, সেটিই স্বাভাবিক।
চলচ্চিত্রের রেটিং দেওয়া প্রতিষ্ঠান রটেন টম্যাটোস সম্প্রতি জানিয়েছে, যে চলচ্চিত্রে টম ক্রুজ যত বেশি দৌড়ান, সেই ছবির ব্যবসা তত বেশি হয়! এর বিস্তারিত ফিরিস্তিও দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
রটেন টম্যাটোস বলছে, সিনেমা হলের পর্দায় ঘণ্টায় গড়ে ১০ মাইল গতিতে দৌড়ান টম ক্রুজ। আরও নির্দিষ্ট করে বললে, প্রতি সেকেন্ডে ১৪ দশমিক ৭ ফুট পেরিয়ে যান টম। তিনি ন্যূনতম ১ হাজার ফুট দৌড়েছেন এমন চলচ্চিত্রের একটি তালিকা করেছে রেটিং দেওয়া প্রতিষ্ঠানটি।
তাতে দেখা গেছে, টম ক্রুজের অত্যধিক দৌড়াদৌড়িতে বক্স অফিস ভালোই জমে। এতে প্রযোজকের পকেট ফুলেফেঁপে যেমন ওঠে, সমালোচকেরাও দেন স্টার মার্কস।
মেন্টাল ফ্লসের এক খবরে বলা হয়েছে, যেসব চলচ্চিত্রে টম ক্রুজ ১ হাজার ফুটের বেশি দৌড়েছেন, ওই সব ছবি বিশ্বজুড়ে গড়ে ৫৩৮ মিলিয়ন ডলারের ব্যবসা করে থাকে। সমালোচকেরাও সেগুলোকে দিয়েছেন ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া। অবশ্য কিছু ব্যতিক্রম আছে। ২০১২ সালের ফ্র্যাঞ্চাইজি ছবি ‘জ্যাক রিচার: নেভার গো ব্যাক’, গত বছরের ‘দ্য মামি’ বা ২০০১ সালের ‘ভ্যানিলা স্কাই’-এ দৌড়-মারধর কম করেননি টম। কিন্তু সেগুলো তুলনামূলকভাবে সমালোচকদের বেশি প্রশংসা পায়নি। বক্স অফিসও পাত্তা দিয়েছে কম।
রটেন টম্যাটো অবশ্য বলছে, কিছু ব্যতিক্রম বাদ দিলে, টম ক্রুজের দৌড় মানেই ছবি সুপারহিট। সম্প্রতি এই তারকার নতুন চলচ্চিত্র মুক্তি পেয়েছে, ‘মিশন ইম্পসিবল: ফলআউট’। বলা হচ্ছে, সাম্প্রতিক ছবিগুলোই নাকি সবচেয়ে বেশি দৌড়েছেন টম ক্রুজ। মিশন ইম্পসিবল সিরিজের ষষ্ঠ কিস্তি এরই মধ্যে বিশ্বজুড়ে ৪৩৮ মিলিয়ন ডলার ব্যবসা করেছে।
সিনেটের খবরে বলা হয়েছে, মিশন ইম্পসিবল সিরিজের তৃতীয় কিস্তিতে ৩ হাজার ২১২ ফুট দৌড়েছেন টম ক্রুজ। এই ছবি আয় করেছে ১৩ কোটি ৩৪ লাখ ডলার। একই সিরিজের ‘ঘোস্ট প্রটোকল’-এ ৩ হাজার ৬৬ ফুট দৌড়ানোয় প্রযোজকের পকেটে ঢুকেছে ২০ কোটি ৯৩ লাখ ৬৪ হাজার ৯২১ ডলার। ‘ওয়ার অব দ্য ওয়ার্ল্ডস’-এ ভিনগ্রহের প্রাণীদের ভয়ে ১ হাজার ৭৫২ ফুট দৌড়েছেন টম ক্রুজ। তাতে আয় হয়েছে ২৩ কোটি ৪১ লাখ ৪১ হাজার ৮৭২ ডলার। এই তিন ছবিতেই সবচেয়ে বেশি দৌড়েছেন ৫৬ বছর বয়সী হলিউড তারকা।
বিজনেস ইনসাইডারের বিচারে টম ক্রুজের সেরা দশ:
১. বর্ন অন দ্য ফোর্থ অব জুলাই (১৯৮৯) ২. দ্য কালার অব মানি (১৯৮৬) ৩. ম্যাগনোলিয়া (১৯৯৯) ৪. আ ফিউ গুড ম্যান (১৯৯২) ৫. জেরি ম্যাগুইরে (১৯৯৬) ৬. রেইন ম্যান (১৯৮৮) ৭. টপ গান (১৯৮৬) ৮. এজ অব টুমরো (২০১৪) ৯. ইন্টারভিউ উইথ দ্য ভ্যাম্পায়ার (১৯৯৪) ১০. মিশন ইম্পসিবল (১৯৯৬)