ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও জ্যেষ্ঠ বিজেপি রাজনীতিক অটলবিহারী বাজপেয়ী দেশটির রাজধানী নয়াদিল্লীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ৯৩ বছর বয়সী সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বৃহস্পতিবার বিকেল ৫ টা ৫ মিনিটে নয়াদিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সেস (এইমস) হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
ভারতের দশম প্রধানমন্ত্রী বাজপেয়ী কিডনি-সংক্রান্ত অসুস্থতা নিয়ে গত ১১ জুন হাসপাতালে ভর্তি হন। তখন থেকে টানা হাসপাতালেই ছিলেন তিনি। হাসপাতালের এক বুলেটিনে বলা হয়, বুধবার দুপুর থেকেই অটলবিহারী বাজপেয়ীর শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত সঙ্কটজনক হতে শুরু করে। তাকে লাইফ-সাপোর্টে রাখা হয়।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ, বস্ত্রমন্ত্রী স্মৃতি ইরানি, রেলমন্ত্রী পীযুষ গয়াল, বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ, কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীসহ আরো অনেকেই গত কয়েক দিন ধরে তার শারীরিক অবস্থার নিয়মিত খোঁজ-খবর নিচ্ছিলেন।
১৯৯৬, ১৯৯৮, ১৯৯৯ সালে তিনবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন অটল বিহারী বাজপেয়ী। প্রথম দফায় ১৩ দিন, দ্বিতীয় দফায় ১৩ মাস আর তৃতীয় দফায় পূর্ণ মেয়াদ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেশের দায়িত্বভার সামলেছেন তিনি। ২০১৪ সালে মোদির সরকার ক্ষমতায় আসার পরে বাজপেয়ীকে ভারতরত্ন সম্মাননা দেয়া হয়।
বাজপেয়ী ছিলেন তুখোর রাজনীতিক, দুর্দান্ত সাংসদ, অসাধারণ বাগ্মী এবং কবি। বাজপেয়ীর জন্ম ১৯২৪ সালে গোয়ালিয়রে। বাবা কৃষ্ণবিহারী বাজপেয়ী ও মা কৃষ্ণা দেবী। ১৯৭৭ সালে জনতা পার্টি সরকারে মন্ত্রী হন তিনি। কিন্তু পরে সংঘপন্থী অন্য নেতাদের সঙ্গে বাজপেয়ীও জনতা পার্টি ছেড়ে বেরিয়ে আসেন, গঠিত হয় ভারতীয় জনতা পার্টি।
১৯৮০ সালে প্রতিষ্ঠিত ভারতীয় জনতা পার্টির প্রথম সভাপতিও হন বাজপেয়ী। তার ১৬ বছর পরে প্রথমবার দেশের প্রধানমন্ত্রী হন। ২০০৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএর হার হয়। পরাজয়ের দায় নিজের কাঁধে নিয়ে প্রধান বিরোধী দলনেতার পদ নিতে অস্বীকার করেন তিনি। পরে নিজেকে ক্রমশ সক্রিয় রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে নেন।