দুই প্রধান দলের বাইরে গিয়ে তৃতীয় শক্তি হওয়ার বাসনায় গঠিত রাজনৈতিক জোট যুক্তফ্রন্ট আগামী সেপ্টেম্বর মাসজুড়ে নানা কর্মসূচির মাধ্যমে মাঠে থাকার ঘোষণা দিয়েছে। এই জোট সেপ্টেম্বরজুড়ে গণসংযোগ, জনসভা ও গণসমাবেশ করবে। এর মাধ্যমে তারা নির্বাচনের আগে নিজেদের শক্তির জানান দিতে চায় বলে সূত্রে জানা গেছে।
অগণতান্ত্রিক শক্তির বিরুদ্ধে জনগণের সম্মিলিত শক্তিকে জোরদার করার লক্ষ্যে এই কর্মসূচি পালিত হবে বলে জানিয়েছেন জোট নেতারা।
১৫ আগস্ট দুপুরে যুক্তফ্রন্টের চেয়ারম্যান ও বিকল্পধারার প্রেসিডেন্ট সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক এ.কিউ.এম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর সভাপতিত্বে তার বারিধারার বাসভবনে যুক্তফ্রন্টের এক অনির্ধারিত বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়।
জানা গেছে, বৈঠকে যুক্তফ্রন্টের কার্যক্রম নিয়ে বিশদ আলোচনা হয়। পরে সিদ্ধান্ত হয় সেপ্টেম্বর মাসজুড়ে বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে গণসংযোগ, জনসভা ও গণসমাবেশ করবে সরকারবিরোধী এই জোট।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, বৈঠকের শুরুতেই যুক্তফ্রন্ট নেতারা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং ১৫ আগস্টে নিহত তার পরিবারের অন্য সদস্যদের রুহের মাগফেরাত কামনা করেন।
বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্তে বলা হয়, যুক্তফ্রন্টের উদ্দেশ্য হলো, দেশের সমস্ত জনগণকে একতাবদ্ধ করা, অত্যাচার, স্বৈরাচার এবং গণতন্ত্রবিরোধী কার্যকলাপের বিরুদ্ধে জাতীয় চেতনা সৃষ্টি, জনগণকে ভবিষ্যতে ইতিবাচক রাজনীতিতে উদ্বুদ্ধ করা এবং এই মতবাদ ও মর্মে যারাই বিশ্বাসী এই ধরনের সমস্ত রাজনৈতিক দল, পেশাজীবী ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের যুক্তফ্রন্টে স্বাগত জানানো।
নিরাপদ সড়কের দাবিতে ছাত্র আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে আটককৃত ছাত্রদের মুক্তির দাবি জানান যুক্তফ্রন্ট নেতারা। তারা বলেন, রাজনীতির বাইরেও একজন মা হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে ঈদের আগেই অবিলম্বে ছাত্রদের মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।
বৈঠকে বক্তব্য দেন জেএসডির সভাপতি আ.স.ম আবদুর রব, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, বিকল্পধারার মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নান, জেএসডির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন ও বিকল্পধারার সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার ওমর ফারুক।
আলোচিত পাঁচ রাজনীতিক গণফোরাম সভাপতি কামাল হোসেন, বিকল্পধারার সভাপতি এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি আবদুল কাদের সিদ্দিকী আবদুল কাদের সিদ্দিকী ও নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদর রহমান মান্না গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে জোট গঠনের উদ্যোগ নেন।
গত ডিসেম্বরের শুরুর দিকে কামাল হোসেনকে বাইরে রেখে জোটের ঘোষণা দেন বাকি চার নেতা। নাম দেয়া হয় যুক্তফ্রন্ট। সে সময় কামাল হোসেন দেশের বাইরে থাকায় তিনি এই জোটে আসেননি বলে জানানো হয়। তবে দেশে ফিরে কামাল হোসেন জোটে যোগ দেননি। ড. কামাল না আসায় পরবর্তী সময়ে কাদের সিদ্দিকীও জোটে নিষ্ক্রিয় হয়ে যান।
জোট গঠনের পর থেকেই যুক্তফ্রন্টের অবস্থান সরকারি দল আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে। তারা বিএনপির সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন। আগামী নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট বিএনপির কাছে ১৫০টি আসন দাবি করেছে। যদিও বিএনপি নেতারা এটাকে ‘অবাস্তব আবদার’হিসেবে দেখছেন।