শুধু ‘নিরাপদ সড়ক’ নয়, ‘নিরাপদ বাংলাদেশের লক্ষ্যে’ দেশকে স্বাধীন করতে চান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আর এ জন্য তিনি দেশবাসীর প্রতি আহ্বানও জানিয়েছেন। শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের মিলনায়তনে এক আলোচনায় এসব বলেন ফখরুল। ‘সাংবাদিক নির্যাতনবিরোধী’ এ সংহতি সমাবেশের আয়োজন করে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশ ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশ।
নিরাপদ সড়কের দাবিতে ছাত্র আন্দোলনের সময় ফেসবুকে আওয়ামী লীগের ধানমন্ডি কার্যালয়ে হত্যা ও ধর্ষণের গুজব ছড়িয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশের গ্রেপ্তার অভিযানেরও সমালোচনা করেন ফখরুল। আর এ কথা বলতে গিয়েই দেশকে স্বাধীন করার বিষয়ে আহ্বান আসে।
বিএনপি নেতা বলেন, ‘রাতের আঁধারে মেয়েদের তুলে নিয়ে যাচ্ছে। তাদের অপরাধ তারা নাকি ছেলেদের আন্দোলনে উস্কানি দিচ্ছে। আমাদের বিরুদ্ধে উস্কানির অভিযোগ তো সব সময় করে তারা। আজকেও তারা মানববন্ধন করে বলেছে আমরা নাকি উস্কানি দিচ্ছি।’
‘আমরা তো প্রথম দিন থেকেই সমর্থন দিয়েছি। প্রকাশ্যে ছাত্রদের এই ন্যায়সঙ্গত, যুক্তিসঙ্গত আন্দোলনকে সমর্থন করেছি। সেই সমর্থন অব্যাহত রেখেছি। আমরা ছাত্রদের এই কোটা আন্দোলন, নিরাপদ সড়কের দাবির আন্দোলনকে অবশ্যই সমর্থন জানাব এবং জনগণকে আহ্বান জানাব যে শুধু এই নিরাপদ সড়ক নয়, নিরাপদ বাংলাদেশের জন্য আপনারা এগিয়ে আসুন, আপনারা জেগে উঠুন এবং আপনার দেশকে স্বাধীন করুন।’
ছাত্র আন্দোলন চলাকালে দুই জনকে হত্যা এবং এক জনের চোখ তুলে নেয়ার মিথ্যা অভিযোগ নিয়ে ফেসবুক লাইভে আসা অভিনেত্রী কাজী নওশাবা আহমেদকে জামিন না দেয়ারও সমালোচনা করেন ফখরুল। বলেন, ‘একটা মেয়ের বেইল পিটিশন করেছে, সেটা কোর্ট থেকে রিজেক্ট করেছে। তার কী অপরাধ? সে কি খুনি না ডাকাত? সেকি ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করে নিয়ে গেছে? তার আজকে আপনি জামিন আবেদন বাতিল করে দিচ্ছেন।’
জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “অবশ্যই আমাদের দেশকে, দেশের মানুষকে রক্ষা করার জন্য আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। রাজনৈতিক দল গুলোর দায়িত্ব সবচেয়ে বেশি, এজন্য আমরা প্রথম থেকে বারবার বলে আসছি। আমাদের নেত্রী জেলে যাওয়ার পূর্বে মিটিংয়ে বলে গেছেন, ‘আসুন আমরা দল মত নির্বিশেষে এক হয়ে এই যে দানব আমাদের বুকের ওপর ভর করে বসে আছে এই দানবকে আমরা সরিয়ে দেই’।”
‘এরপরও আপনারা সরকারে আছেন?’
আরেকটি এক এগারোর ষড়যন্ত্র হচ্ছে বলে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বক্তব্য রাখার পরও আওয়ামী লীগ কীভাবে সরকারে আছে, তাও বুঝতে পারেন না ফখরুল।
“এরপরও আপনারা সরকারে আছেন? এখনও পদত্যাগ করছেন না? এই এক এগারোর বেনিফিশিয়ারি (সুবিধাভোগী) কিন্তু আওয়ামী লীগ। এতটাই বেনিফিশিয়ারি যে তাদের নেত্রী বিদেশ যাওয়ার আগে বলেছিলেন, ‘আমরা এই ফখরুদ্দিন-মঈনুদ্দিন সরকারের সব কর্মকান্ডের বৈধতা দেব’।”
‘দিয়েছিল, পার্লামেন্ট এ আইন পাস করেছে। এরপর আপনারা এক এগারোর বিষয়টি শুনতে পারছেন কেন?’- কাদেরের প্রতি প্রশ্ন রাখেন বিএনপি মহাসচিব।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, বিএফইউজের (একাংশ) সভাপতি রুহুল আমিন গাজী প্রমুখ এ সময় বক্তব্য রাখেন।