শনিবার দুপুর আড়াইটায় চট্টগ্রামের কর্ণফুলী গ্যাস কোম্পানির পাইপলাইনে প্রাকৃতিক গ্যাস এলএনজির সরবরাহ শুরু হয়।এর মধ্য দিয়ে এলএনজির যুগে প্রবেশ করল বাংলাদেশ। জ্বালানি বিভাগ থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
প্রাথমিকভাবে শুধু চট্টগ্রামের কর্ণফুলী গ্যাস কোম্পানির পাইপলাইনে এলএনজি সরবরাহ করা হয়েছে।
গত শুক্রবার জ্বালানি সচিব আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমের নেতৃত্বে উচ্চপর্যায়ের এক সভায় জাতীয় গ্রিডে এলএনজি সরবরাহের সিদ্ধান্ত হয়।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, তীব্র গ্যাস-সংকটের সমাধানে এ গ্যাস দেশবাসী ও শিল্প কারখানা মালিকদের আশার কথা শোনাবে।
প্রতিদিন ২৮৩ কোটি ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা পেট্রোবাংলা। দেশে গ্যাসের চাহিদা এর চেয়ে অনেক বেশি। গ্যাসের অভাবে দেশের শিল্পকারখানা পুরোদমে উৎপাদনে যেতে পারছে না।
সারা দেশে সাড়ে ৩ হাজারের বেশি শিল্পকারখানায় গ্যাস সংযোগের অনুমতি দিয়েও সংকটের কারণে গ্যাস দিতে পারছে না সরকার। এ সংকট সমাধানে সরকার এলএনজি আমদানির পরিকল্পনা করে।
এদিকে শনিবার থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এলএনজি সরবরাহ শুরু হলেও এখনও বিভিন্ন শিল্পকারখানায় গ্যাস সরবরাহের জন্য সঞ্চালন লাইন স্থাপনের অনুমতি দেয়নি সরকার।
পেট্রোবাংলা সূত্রে জানা গেছে, এলএনজি দিয়ে চট্টগ্রামের চাহিদা মিটে গেলে দেশের অন্যান্য স্থানে গ্যাসের চাপ বেড়ে যাবে। বিশেষ করে সিলেট হবিগঞ্জ এলাকায় গ্যাস উদ্বৃত্ত থাকবে।
এ গ্যাস বিক্রি করার মতো এখন পর্যাপ্ত শিল্প গ্রাহক নেই। যারা আছেন তাদের আঙ্গিনায় গ্যাস পৌঁছে দেয়ার মতো সঞ্চালন লাইনও নেই। দীর্ঘদিন ধরে এ সঞ্চালন লাইন নির্মাণ বন্ধ রয়েছে।
পেট্রোবাংলার শীর্ষ কর্মকর্তাদের বক্তব্য, সরকারকে দ্রুত সময়ের মধ্যে সঞ্চালন লাইন নির্মাণের অনুমতি দেয়ার সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
জানা গেছে, সঞ্চালন লাইন নির্মাণের জন্য প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরীর নেতৃত্বে বিশেষ কমিটির অনুমোদন লাগে। কোনো কোম্পানি নিজস্ব অর্থায়নে তাদের আঙ্গিনা পর্যন্ত সঞ্চালন পাইপলাইন নির্মাণ করতে চাইলেও বিশেষ কমিটির অনুমতি লাগবে।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, সরকারের এ বিশেষ কমিটি যদি সঞ্চালন লাইন নির্মাণের দ্রুত অনুমতি না দেয় তাহলে এলএনজি আমদানির মতো বিশাল সাফল্য ও উদ্যোগ ভেস্তে যাবে। একই সঙ্গে সরকার মাসে হাজার হাজার কোটি টাকার ক্ষতির মুখে পড়বে।
এলএনজি প্রকল্পের দায়িত্বে নিয়োজিত আরপিজিসিএলের এক কর্মকর্তা জানান, ১৫ বছরের চুক্তির আওতায় এলএনজি রিগ্যাসিফিকেশন করে এ গ্যাস সরবরাহ করবে এক্সিলারেট এনার্জি। এলএনজি আমদানির দায়িত্ব পেট্রোবাংলার। প্রাথমিক অবস্থায় ২৫ থেকে ৩০ কোটি ঘনফুট গ্যাস নেয়া হবে। অক্টোবরের পর নতুন আরেকটি পাইপলাইন বসলে ৫০ কোটি ঘনফুট গ্যাস পাওয়া যাবে।