নায়করাজের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী আগামীকাল

বিনোদন ডেস্ক

বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি নায়ক,শক্তিমান অভিনেতা, প্রযোজক ও পরিচালক নায়করাজ রাজ্জাকেরর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী আগামীকাল। নায়করাজ রাজ্জাকের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিভিন্ন সংগঠন, প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে নানা কর্মসূচি পালনের মধ্যদিয়ে এই কীর্তিমান অভিনেতাকে স্মরণ করা হবে। গত বছরের এই দিনে সন্ধ্যা ৬টা ১৩ মিনিটে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি পরলোকগমন করেন। তাঁকে বনানী কবরস্থানে দাফন করা হয়।

বাংলা চলচ্চিত্র জগতে দীর্ঘ সাড়ে ছয় দশক জনপ্রিয় অভিনেতা সবার মন জয় করেন। দর্শকের ভলোবাসা তাকে নায়করাজের আসনে বসায়। অভিনেতা রাজ্জাক ১৯৪২ সালের ২৩ জানুয়ারি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার টালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। কলকাতার খানপুর হাইস্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে অধ্যয়নকালে সরস্বতি পূজা চলাকালীন মঞ্চ নাটকে অভিনয়ের জন্য তার শিক্ষক রবীন্দ্রনাথ চক্রবর্তী তাকে বেছে নেন । এতে তিনি নায়ক অর্থাৎ নাটকের কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেন। শিশু-কিশোরদের নিয়ে লেখা এ নাটকের শিরোনাম ছিল ‘বিদ্রোহী’ । এতে অভিনয়ের মধ্য দিয়েই নায়করাজের অভিনয় জীবন শুরু। চলচ্চিত্রে বিশেষ অবদানের জন্য তিনি সাতবার চলচ্চিত্রে শ্রেষ্ঠ অভিনেতা হিসেবে জাতীয় পুরস্কার, চলচ্চিত্রের জন্য আজীবন সম্মাননাসহ অসংখ্য পুরস্কার লাভ করেন।

universel cardiac hospital

১৯৬৪ সালে রাজ্জাক তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে চলে আসেন। চলচ্চিত্রকার আবদুল জব্বার খানের সাথে সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ শুরু করেন। পরে ‘তের নম্বর ফেকু ওস্তাগার লেন’ ছবিতে ছোট একটি চরিত্রে প্রথম অভিনয় করেন। এর পর ‘কার বউ’ ও ‘ডাক বাবু’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। নায়ক হিসেব তার প্রথম চলচ্চিত্র হচ্ছে জহির রায়হান পরিচালিত ‘ বেহুলা ’। সেই থেকে তিনি ৩ শতাধিক চলচ্চিত্রে নায়ক হিসেবে অভিনয় করেন। প্রযোজনা ও পরিচালনা করেন ১৬টি চলচ্চিত্র।

নায়ক রাজ্জাকের অভিনয় করা উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রগুলো হচ্ছে, বেহুলা,আগুন নিয়ে খেলা, এতুটুকু আশা, নীল আকাশের নিচে, ক খ গ ঘ ঙ, জীবন থেকে নেয়া, নাচের পুতুল, অশ্রু দিয়ে লেখা, ওরা ১১ জন, অবুঝ মন, রংবাজ, আলোর মিছিল, কি যে করি, গুন্ডা, অনন্ত প্রেম, অশিক্ষিত, ছুটির ঘন্টা, মহানগর, বড় ভাল লোক ছিল, রাজলক্ষèী শ্রীকান্ত,স্বরলিপি, বাদী থেকে বেগম, বাবা কেন চাকর প্রভৃতি।

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার বলেন, রাজ্জাক আমাদের চলচ্চিত্রের নায়ক, অভিনেতা ও নির্মাতা হিসেবে বাতিরঘর ও দিকপাল। তিনি দীর্ঘকাল এই জগতে নেৃতত্ব দিয়ে আমাদের চলচ্চিত্রকে উত্তম-সূচিত্রা পরবর্তী সময়ে সমৃদ্ধ করেছেন। তিনি অভিনয়ের পাশাপাশি অসংখ্য সিনেমার প্রযোজনা ও পরিচালনা করেছেন। তিনি হচ্ছেন,বাংলা চলচ্চিত্রের অমর শিল্পী।

দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি আগামী ৩১ আগস্ট নায়করাজ রাজ্জাক স্মরণে সকাল ১১টায় এফডিসির ভিআইপি হলে মিলাদ মাহফিল এবং স্মরণসভার আয়োজন করেছে। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম। এ ছাড়া বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির পক্ষ থেকে দিবসটিতে নায়করাজ রাজ্জাকের সমাধিতে পুষ্পার্ঘ অর্পণ করে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন এবং স্মরণ সভার কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। বিটিভি এবং বেসরকারি বিভিন্ন টেলিভিশন দিবসটিতে নায়করাজ অভিনীত চলচ্চিত্র সম্প্রচার করবে। চ্যানেল-আই নায়করাজের ওপর নির্মিত প্রামাণ্য চিত্র প্রচার করবে।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে