প্রস্তুত জাতীয় ঈদগাহ

বিশেষ প্রতিনিধি

আর মাত্র একদিন পর ২২ আগস্ট, বুধবার পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত হবে। ওই দিন রাজধানীর বৃহত্তম ঈদ জামাত হবে সুপ্রিম কোর্টসংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহে। সে উপলক্ষে এরই মধ্যে প্রস্তুত করা হয়েছে ঈদগাহ ময়দান।

জাতীয় ঈদগাহে সকাল ৮টায় ঈদুল আজহার প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এতে অংশ নেবেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, মন্ত্রিসভার সদস্য, বিচারপতি, কূটনীতিক, সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা। তবে বড় ধরনের কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলে সকাল ৯টায় বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে।

universel cardiac hospital

জাতীয় ঈদগাহে ঈদুল আজহার নামাজে ইমামতি করবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের জ্যেষ্ঠ পেশ ইমাম মাওলানা মুহাম্মদ মিজানুর রহমান। বিকল্প ইমাম হিসেবে থাকবেন ঢাকার মিরপুরের জামেয়া আরাবিয়ার শায়খুল হাদিস মাওলানা সৈয়দ ওয়াহিদুয্যামান।

এ ছাড়া বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে পর্যায়ক্রমে পাঁচটি ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে প্রথম জামাত সকাল ৭টা, দ্বিতীয় জামাত সকাল ৮টা, তৃতীয় জামাত সকাল ৯টা, চতুর্থ জামাত সকাল ১০টা এবং পঞ্চম ও সর্বশেষ জামাত সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে অনুষ্ঠিত হবে।

এসব জামাতে যথাক্রমে ইমামতি করবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম মুফতি মাওলানা মুহিব্বুল্লাহিল বাকী নদভী, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মুহাদ্দিস মাওলানা ওয়ালিয়ুর রহমান খান, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পরিচালক ড. মাওলানা মো. আবদুস সালাম, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মুফতি মাওলানা মোহাম্মদ আবদুল্লাহ এবং পঞ্চম ও সর্বশেষ জামাতের ইমামতি করবেন মহাখালী হোসাইনিয়া কামিল মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল ড. মাওলানা নজরুল ইসলাম আল মা’রূফ।

সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে ঈদের নামাজ আদায়ের জন্য বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে পর্যাপ্ত পানি ও নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। নিরাপত্তার জন্য ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা বসানো হয়েছে। চারটি কন্ট্রোল রুম বসানো হয়েছে। নিরাপত্তার চাদরে ঘিরে ফেলে হয়েছে জাতীয় ঈদগাহ ও এর আশপাশের এলাকা। নির্বিঘ্নে ঈদের নামাজ আদায়ে পুরো ঈদগাহের চারপাশে পোশাকে ও সাদা পোশাকের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান নিয়েছেন। জাতীয় ঈদগাহের পূর্ব দিকে সর্বসাধারণের জন্য দৃষ্টিনন্দন গেট করা হয়েছে। পশ্চিম দিকে থাকছে ভিআইপিদের গেট। এ ছাড়া পূর্ব দিকে পানির পাম্পসংলগ্ন ছোট গেট রাখা হয়েছে নারীদের জন্য।

প্রত্যেককে মেটাল ডিটেক্টর এবং আর্চওয়ে নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে ঈদগাহে প্রবেশ করতে হবে। পূর্ব দিকে ফুটপাতসংলগ্ন অজুর ব্যবস্থা করা হয়েছে। শেষ হয়েছে ঈদগাহ মাঠের সীমানাপ্রাচীর ও আশপাশের গাছে রং করার কাজও। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে আশপাশের রাস্তা ও ফুটপাত। ময়দানের সামনের মিনারে রং লাগানো শেষ। মাঠের ঘাসও এরই মধ্যে কেটে সমান করা হয়েছে।

ঈদগাহ মাঠের ব্যবস্থাপনায় নিয়োজিত আছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। নিরাপত্তার দিকটি দেখছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) ও র্যা পিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যা ব)। স্পেশাল ব্রাঞ্চের (এসবি) কন্ট্রোল রুমও রয়েছে। পুলিশ ও র্যা ব বলছে, জাতীয় ঈদগাহে জায়নামাজ ও ছাতা ছাড়া অন্য কিছু আনা যাবে না। থাকছে সিসি ক্যামেরা, ডগ স্কোয়াড, বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল, সোয়াট। মুসল্লিদের জন্য প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা, খাবার পানি, টয়লেটের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

ঈদগাহ মাঠ প্রস্তুতে নিয়োজিতদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শুধু ঈদগাহ মাঠের ভেতরেই বসানো হয়েছে ৬৪টি সিসিটিভি ক্যামেরা। রাষ্ট্রপতিসহ বিশিষ্টজন ঈদের নামাজ পড়তে আসবেন হাইকোর্টের ফটক দিয়ে। সর্বসাধারণের জন্য খোলা থাকবে ঈদগাহ ময়দানের ফটক। তবে নিরাপত্তা তল্লাশির পরই সবাই ঈদগাহ ময়দানে প্রবেশ করতে পারবেন। মাঠ প্রস্তুতে দুই সপ্তাহ ধরে ঈদগাহে দিন-রাত পরিশ্রম করে চলেছেন দুই শতাধিক শ্রমিক।

জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে লাখো মুসল্লি একসঙ্গে ঈদের নামাজ আদায় করতে পারবেন। এর মধ্যে শামিয়ানার ভেতরে ৮৫ হাজার পুরুষ ও পাঁচ হাজার নারী নামাজ আদায় করতে পারবেন। দুই লাখ ৬০ হাজার বর্গফুটের জাতীয় ঈদগাহ মাঠ প্রস্তুতের সার্বিক তত্ত্বাবধানে রয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে