বিশেষ প্রতিনিধি
এবছর কুরবানিতে অধিকাংশই জবাই হয়েছে দেশি গরু। ফলে ভালো ও উন্নত মানের চামড়া পাওয়া যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন ট্যানারি মালিকরা। তবে তারা সরকার নির্ধারিত দামে পশুর চামড়া কেনার কথা বললেও পাড়া-মহল্লার মৌসুমী ব্যবসায়ীরা বলছেন, তারা ভালো দাম পাচ্ছেন না।
সকালে কুরবানির পর রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে চলছে পশুর চামড়া সংগ্রহ। চামড়া কিনতে তাই ব্যস্ত সময় পার করছেন ট্যানারি মালিকরা।
রাজধানীর বেশ কয়েকটি পাড়া-মহল্লা ঘুরে দেখা গেছে, সস্তা দরে চামড়া কিনছেন চামড়া ব্যবসায়ীরা। এ কারণে বেশি দামে চামড়া কিনে লোকসান গুনতে হচ্ছে খুচরা ক্রেতাদের। রাজধানীর লালবাগের পোস্তা এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
এবছর ঢাকায় গরুর চামড়ার দাম ফুটপ্রতি ৪৫ থেকে ৫০, ঢাকার বাইরে ৩৫ থেকে ৪০, খাসি ১৮ থেকে ২০ এবং বকরির চামড়ার দাম ১৩ থেকে ১৫ টাকা নির্ধারণ করে দেয় সরকার।
ট্যানারি মালিকরা বলছেন, যেসব ব্যবসায়ীদের অভিজ্ঞতা আছে তারা চামড়া বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন।
প্রতিবছর সারা দেশ থেকে দুই কোটির ওপর পশুর চামড়া পাওয়া যায়। এর মধ্যে অর্ধেকই আসে কুরবানির সময়।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরকার নির্ধারিত প্রতি বর্গ ফুট ৩০ টাকা দরে চামড়া কিনছেন তারা। তবে মহল্লা থেকে বাড়তি দামে চামড়া কিনে বিপাকে পড়েছেন অনেক মৌসুমী ব্যবসায়ী।
রাজধানীর পোস্তা এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বর্গ ফুট হিসেবে নয়। ব্যবসায়ীরা চামড়া কিনছেন আকারের উপর ভিত্তি করে। এক্ষেত্রে ছোট চামড়া বিক্রি হচ্ছে ৩শ থেকে ৫শ টাকা দরে। মাঝারি চামড়া ৫শ থেকে ৮শ টাকা এবং বড় আকারের চামড়া ব্যবসায়ীরা কিনছেন সর্বোচ্চ হাজার থেকে ১২শ টাকা দরে।
লালবাগের চামড়া ব্যবসায়ী মো. আমির হোসেন বলেন, ‘মহল্লা থেকে দুই হাজার, বাইশ শ টাকা দামে চামড়া কিনা আমগো কাছে আনলে কি আমরা ওই দাম দিমু? লবন ছাড়া মালের দাম ৩০ টাকা। আমরা ওই আন্দাজে মাল কিনতাছি।’
৪০ বছরের চামড়া ব্যবসার অভিজ্ঞতা সম্পন্ন এই ব্যবসায়ী আরো বলেন, ‘এরা বেশি দামে চামড়া কিনলে আমগো কি? হেরা লস খাইবো দেইখা আমরাও লস খামু নাকি?’
এদিকে এবার কাচা চামড়ার আনাগোনা কম বলছেন ব্যবসায়ীরা। চামড়া ব্যবসায়ী মো. ইসতে হানিফ বলেন, ‘প্রতি বছর এই টাইমে চামড়া দিয়া রাস্তা ভরা থাকে। এইবার চামড়া কম। ট্যানারি মালিকরা বাহিরে থাইকা সরাসরি চামড়া কিনতাছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘গত বছরের টাকা এখনো পায় নাই, এমন অনেক ব্যবসায়ী আছে। গেলে একটা চেক দেয়, ঐ ভাঙ্গাইতে ১ বছর।’
চামড়ার দাম কমানো নিয়ে আক্ষেপ আছে অনেক ব্যবসায়ীর। ব্যবসায়ী জাহিদ হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, দামটা এত কমানো ঠিক হয় নাই৷ আর একটু বাড়ানো দরকার ছিল। এখন যে দাম দিছে, আমরা ঐ হিসাবে মাল কিনতাছি। বেশি দাওয়ার তো সুযোগই নাই।’
তিনি বলেন, লবনের বস্তা ছিল ৭শ টাকা, এখন সেই বস্তা ১৭শ টাকা। তিনটা চামড়ায় এক বস্তা লবণ শেষ।