ঘোষিত ২৪ ঘণ্টা সময়ের মধ্যে নগরীর শতভাগ কোরবানির বর্জ্য অপসারণ সম্পন্ন করেছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি)। ডিএনসিসি প্যানেল মেয়র জামাল মোস্তফা আজ বিকেল ৩টায় নগর ভবনে কোরবানীর বর্জ্য অপসারণ সংক্রান্ত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান।
প্যানেল মেয়র বুধবার বেলা ২টায় উত্তরা ১৫ নম্বর সেক্টরের ২ নম্বর ব্রিজের পশ্চিমে অস্থায়ী পশুর হাট থেকে কোরবানি পশুর বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
লিখিত বক্তব্যে মেয়র বলেন, ‘নগরবাসীর সহযোগিতায় এ বছর কোরবানি পশুর বর্জ্য অপসারণ ব্যবস্থাপনার মতো একটি চ্যালেঞ্জিং কাজ ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন পূর্ব ঘোষিত ২৪ ঘন্টার মধ্যেই সাফল্যের সাথে সম্পন্ন করতে পেরেছে।’
তিনি বলেন, বিগত বছরগুলোর তুলনায় এবছর নির্ধারিত স্থানে পশু কোরবানিতে জনগণের সাড়া ছিলো উৎসাহব্যঞ্জক। নির্ধারিত স্থানে পশু জবাইয়ের সংখ্যা গত বছরের তুলনায় অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে।
তিনি জানান, এ বছর ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের এলাকাসমূহে প্রথমদিনে আনুমানিক ২ লাখ ১৫ হাজার পশু কোরবানি হয়েছে। ডিএনসিসি এলাকায় ১৮৩টি পশু জবাইর স্থান নির্ধারণ করা হয়েছিল। এছাড়া সরকারি ও ব্যাক্তি মালিকানাধীন আবাসিক কমপ্লেক্সের অভ্যন্তরে উপযুক্ত স্থান হিসেবে চিহ্নিত ৩৬৬টি স্থানসহ মোট ৫৪৯টি স্থানে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক পশু কোরবানি দেয়া হয়েছে।
প্যানেল মেয়র বলেন, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্ন কর্মীরা এবং প্রাথমিক বর্জ্য সংগ্রহ সেবায় নিয়োজিত ভ্যান সার্ভিসের কর্মীরা মানুষের বাসাবাড়ি থেকে বর্জ্য সংগ্রহ করে সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশন (এসটিএস) এবং কন্টেইনারে জমা করে প্রতিটি ওয়ার্ডকে বর্জ্যমুক্ত করেছে।
তিনি জানান, বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার মধ্যে ওয়ার্ড নম্বর ৭, ২৭ ও ৩১-এর কাউন্সিলররা তাদের নিজ নিজ ওয়ার্ডকে কোরবানি পশুর বর্জ্যমুক্ত ঘোষণা করেছেন। এরপর ক্রমান্বয়ে অন্যান্য ওয়ার্ডকেও বর্জ্যমুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। এসটিএস এবং নির্ধারিত স্থানে কন্টেইনারে বর্জ্য জমা হওয়ার পরপরই তা ল্যান্ডফিলে পরিবহনের কাজ শুরু হয়।
প্যানেল মেয়র বলেন, ১ হাজার ৫৪৫টি ট্রিপে ৮ হাজার ৫০০ টন বর্জ্য ল্যান্ডফিলে পরিবহন করা হয়েছে। এই স্বল্প সময়ে বিপুল পরিমাণ বর্জ্য অপসারণ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং সড়ক পরিচ্ছন্নতা কাজে ২৮০টি বিভিন্ন ধরনের যান-যন্ত্রপাতি নিয়োজিত ছিল। ডিএনসিসি থেকে কোরবানি বর্জ্য অপসারণে নিজস্ব ২ হাজার ৭শ’জন পরিচ্ছন্ন কর্মীসহ সর্বমোট ৯ হাজার ৫শ’জন পরিচ্ছন্ন কর্মী নিরলস পরিশ্রম করে ঢাকা শহরকে আবর্জনা মুক্ত করেছেন।
তিনি বলেন, এ বছর কোরবানি বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় কয়েকটি বিষয় পরিলক্ষিত হয়। সেগুলো হলো-জনগণ আগের চেয়ে বেশি দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়েছেন, বর্জ্য ব্যাগ এবং ব্লিচিং পাউডারের ব্যবহার বেড়েছে,বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় ডিএনসিসির সক্ষমতা বেড়েছে, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং উদ্ভাবনী পদক্ষেপে জনগণ যত্রতত্র স্থানে কোরবানি করা হতে বিরত থেকেছে, কোরবানির পশুর বর্জ্য ল্যান্ডফিলে সনাতনী ডাম্পিংয়ের পরিবর্তে বর্জ্যকে সম্পদে রূপান্তর করা।
সংবাদ সম্মেলনে ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মেসবাহুল ইসলাম, ওয়ার্ড কাউন্সিলর আফসার উদ্দিন, তারেকুজ্জমান রাজিব, ডা. জিন্নাত আলী, দেওয়ান আব্দুল মান্নান, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা স্থায়ী কমিটির সভাপতি ওয়ার্ড কাউন্সিলর জাকির হোসেন বাবুল উপস্থিত ছিলেন।