বিশ্বের বন্দরগুলোর মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরের অবস্থান এখন ৭০ তম। এক বছরে এক ধাপ এগিয়ে এই অবস্থানে উন্নীত হয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর।
২০১৭ সালে বিশ্বের বন্দরগুলোর কনটেইনার পরিবহনের সংখ্যা হিসাব করে এই তালিকা করা হয়েছে। তালিকাটি সম্প্রতি প্রকাশ করেছে লন্ডনভিত্তিক শিপিং-বিষয়ক বিশ্বের সবচেয়ে পুরোনো সংবাদমাধ্যম ‘লয়েডস লিস্ট’।
কনটেইনার পরিবহনের বৈশ্বিক ক্রমতালিকায় দেখা যায়, ২০০৮ সালে চট্টগ্রাম বন্দরের অবস্থান ছিল ৯৫ তম। এক দশকের ব্যবধানে বন্দর এগিয়েছে ২৫ ধাপ। মূলত কনটেইনার পরিবহনের সংখ্যা বৃদ্ধিই তালিকায় এগিয়ে যাওয়ার বড় কারণ। বিকল্প বন্দর না থাকায় প্রতিবছর চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে কনটেইনার পরিবহন বাড়ছে।
লয়েডস লিস্ট যে তালিকা প্রকাশ করেছে, সেখানে শুধু কনটেইনার পরিবহনের সংখ্যা বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে, সেবার মান বিচার করা হয়নি। তাই তালিকায় বন্দর এগোলেও সেবার মানের সূচকে পিছিয়ে রয়েছে। সেবার মান যাচাইয়ের অন্যতম সূচক হলো জাহাজ আসার পর পণ্য হাতে পেতে ব্যবসায়ীদের কত সময় লাগে, সেটি।
সেই সূচকের বিবেচনায় গত এক দশকে চট্টগ্রাম বন্দরের সেবার মানের তুলনা করে দেখা যায়, ২০০৮ সালে বন্দরে জাহাজ আসার পর জেটিতে ভিড়তে সময় লাগত গড়ে সাড়ে ১১ ঘণ্টা। ২০১৭ সালে এসে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ১০৪ ঘণ্টায়। অর্থাৎ জাহাজ আসার পর পণ্য হাতে পেতে এক দশক আগের চেয়ে ৯২ ঘণ্টার বেশি সময় লাগছে।
এর বড় কারণ এক দশকে বন্দরকেন্দ্রিক মূল উন্নয়ন না হওয়া। বন্দর সূত্রে জানা গেছে, এক দশক আগের মূল অবকাঠামো ব্যবহার করে কনটেইনার পরিবহন করছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। ফলে পণ্য হাতে পেতে সময় লাগছে। দুই বছরের বেশি সময় ধরে কনটেইনার জাহাজের জটও স্থায়ী রূপ নিয়েছে বন্দরে।
লয়েডস লিস্টের তালিকা প্রসঙ্গে গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, ক্রমতালিকায় এগিয়ে যাওয়ার বিষয়টি ইতিবাচক। সমুদ্রপথে আমদানি-রপ্তানির বড় অংশ এই বন্দর দিয়ে পরিবহন হওয়ায় ক্রমতালিকায় প্রতিবছর এগিয়ে যাচ্ছে। তবে এটি একই সঙ্গে চ্যালেঞ্জও। কারণ, পণ্য পরিবহন বাড়লেও এই বন্দর সম্প্রসারণে দীর্ঘ সময় ধরে মনোযোগ দেওয়া হয়নি। ফলে বন্দরে জাহাজজট হচ্ছে।
তালিকা অনুযায়ী সেরা ১০০ বন্দরের মধ্যে শীর্ষস্থানে আছে চীনের সাংহাই বন্দর। গত বছর বন্দরটি দিয়ে ৪ কোটি কনটেইনার পরিবহন হয়। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা সিঙ্গাপুর বন্দর দিয়ে ২০১৭ সালে কনটেইনার পরিবহন হয় ৩ কোটি ৩৭ লাখ।
সেরা ১০০ বন্দরের মধ্যে বিশ্বের বড় দুই অর্থনীতির দেশ চীনের ২১টি এবং যুক্তরাষ্ট্রের ৮টি বন্দর রয়েছে। এ ছাড়া স্পেনের ৭ টি, জাপানের ৫টি বন্দর আছে তালিকায়।