জাতিসংঘের অভিযোগ: ইয়েমেনে সব পক্ষই যুদ্ধাপরাধী!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ইয়েমেনে বেসামরিক নাগরিক নিহত হওয়া কমাতে ন্যূনতম চেষ্টা করছে না কোনো পক্ষই। নির্বিচারে বেসামরিক এলাকা, স্কুল, হাসপাতাল ও বাজারের ওপর বিমান হামলা ও গোলা ছুড়ছে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট।

অন্যদিকে গোলার জবাব গোলা দিয়ে দিচ্ছে সরকারবিরোধী হুথি বিদ্রোহী বাহিনী। এতে মারা পড়ছে হাজার হাজার বেসামরিক ইয়েমেনি নাগরিক। এর মাধ্যমে যুদ্ধাপরাধ করছে দুই পক্ষই।

universel cardiac hospital

যুদ্ধাপরাধ সম্পর্কিত নতুন এক প্রতিবেদনে ইয়েমেনে ‘সম্ভাব্য’ যুদ্ধাপরাধের জন্য সব পক্ষকেই দায়ী করেছে জাতিসংঘ মানবাধিকার সংস্থা। প্রতিবেদনটি আগামী মাসে প্রকাশ করা হবে। খবর আলজাজিরা ও বিবিসির।

ইয়েমেনে সৌদি জোটের বিমান হামলাকে এর আগেও যুদ্ধাপরাধের শামিল বলে অভিহিত করেছে জাতিসংঘ। তবে এবারই প্রথম সব পক্ষের বিরুদ্ধেই সম্ভাব্য যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ করা হল।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইয়েমেনের সরকারি বাহিনী ও তাদের সহযোগী সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট বেসামরিক নাগরিকদের হত্যার সংখ্যা কমাতে বিন্দুমাত্র চেষ্টা করছে না। যুদ্ধে সরাসরি বেসামরিক নাগরিকদের ওপর বিমান হামলা চালাচ্ছে। সৌদি জোটের ইয়েমেনের বন্দর ও আকাশ অবরোধ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের লঙ্ঘন বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি। যুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইন মানছে না হুথি বিদ্রোহীরাও।

২০১৫ সালে ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট মনসুর হাদিকে উচ্ছেদ করে রাজধানী দখলে নেয় ইরান সমর্থিত হুথি বিদ্রোহীরা। সৌদি রাজধানী রিয়াদে নির্বাসনে যেতে বাধ্য হন হাদি। হুথিদের ক্ষমতা দখলের পর থেকেই হাদির অনুগত সেনাবাহিনী হুথিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করে।

একই বছরের মার্চ থেকে হুথি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে মিত্রদের নিয়ে ‘অপারেশন ডিসাইসিভ স্টর্ম’ নামে সামরিক অভিযান শুরু করে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। সৌদি জোটের অভিযান শুরুর পর এ পর্যন্ত প্রায় ১০ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে ২ হাজার ২০০ শিশু রয়েছে।

আলজাজিরার তথ্য মতে, ১৬ হাজার বিমান হামলার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ বেসামরিক স্থাপনায় চালানো হয়েছে।

এসব হামলার অধিকাংশই বিয়ের অনুষ্ঠান, হাসপাতাল, বিদ্যুৎ ও পানি উৎপাদন কেন্দ্রে চালানো হয়েছে। এতে হাজার হাজার মানুষের হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।

দাতব্য সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেন জানাচ্ছে, যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট দুর্ভিক্ষ ও রোগে প্রতিদিন ১৩০টি শিশু মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে।

সোমবার সৌদি জোট অভিযোগ করেছিল ইয়েমেনি শিশুদের হত্যা তদন্ত ও নিন্দা জানানোয় জাতিসংঘ পক্ষপাতমূলক আচরণ করেছে।

জোটের মুখপাত্র তুর্কি আল মালিকি বলেন, জাতিসংঘের এ তথ্য মূলত বিদ্রোহীদের কাছ থেকে শোনা। ইয়েমেনে যুদ্ধ ও অবরোধের কারণে ২ কোটিরও বেশি মানুষ মানবেতর জীবনযাপন করছে। তাদের কাছে পর্যাপ্ত মানবিক সহায়তা পৌঁছাচ্ছে না।
###

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে