বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছেন, বিএনপি আগামীতে ক্ষমতায় গেলে কমিশন গঠন করে গুম ঘটনার তদন্ত ও বিচার করবে। যদি না পারি এর চাইতে বড় ব্যর্থতা আমাদের জন্য আর কিছু হতে পারে না।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। আন্তর্জাতিক গুম দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করে বিএনপি।
ব্যারিস্টার মওদুদ বলেন, ‘দেশে অব্যাহতভাবে অন্যায়-নির্যাতন-গ্রেফতার-গুম-বিচারবহির্ভূত হত্যা চলছে। পত্রিকায় দেখা যায় একেবারে ছোট পর্যায়ের মাদক ব্যবসায়ী বন্দুকযুদ্ধে মারা গেছে। মানুষ হত্যা করাটা এখন একটা নিয়মিত ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আরপিও সংশোধন করে যে ইভিএম ব্যবহারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে তাতে নির্বাচন কমিশনও একমত নয়। একজন কমিশনারের আপত্তি সত্ত্বেও আরপিও সংশোধন প্রস্তাব পাস করার ঘটনার নিন্দা জানাই।
তিনি বলেন, ‘এ দেশের মানুষ ইভিএম চায় না, শুধু আওয়ামী লীগ চায়। তারা যন্ত্রের মাধ্যমে নির্বাচন নিয়ন্ত্রণ করতে চায়, ভোট চুরি করে নির্বাচন করতে চায়।’
মোশাররফ হোসেন বলেন, গুম দিবসটি আমাদের কাছে শোক দিবস। যখনই গুমের প্রশ্ন ওঠে, তখন বিএনপির নেতাকর্মীরা ভারাক্রান্ত হৃদয়ে থাকেন। এই দলের অসংখ্য নেতাকর্মী গুমের শিকার হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, জাতিসংঘ স্বীকৃত এই গুম দিবসটি সরকারের পালন করার কথা থাকলেও তারা পালন করছে না। তারা নিশ্চুপ। কেননা বাংলাদেশে সেই ১৯৭২-৭৫ এবং ২০০৯ থেকে অদ্যাবধি যে গুম হচ্ছে তার পেছনে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা রয়েছে। সরকারের ইচ্ছা, সরকারের প্রয়োজনে এই গুম করা হচ্ছে। রাষ্ট্রীয় যন্ত্র ব্যবহার করে তারা (সরকার) এই কাজ করছে, যা গর্হিত অপরাধ ও মানবাধিকার লঙ্ঘন। বিএনপি আগামীতে সুযোগ পেলে অবশ্যই এসব ঘটনার বিচার করবে।
স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, গুম দিবসটি আমাদের নয়, সরকারের পালন করা উচিত ছিল। কিন্তু তাদের সেই সাহস নেই। কারণ গুমের মহাসড়কে এই সরকার নাম লিখিয়েছে।
সরকারকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, গুম হওয়া পরিবারের শিশুদের হাত থেকে আপনারা রেহাই পাবেন না। এই শিশুরা একদিন বিচারপতি হবে, ডিবি অফিসার হবে, তাদের মুখোমুখি একদিন আপনার হতে হবে। এজন্য প্রস্তুত থাকুন।
দলের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমানের সভাপতিত্বে এবং প্রচার সম্পাদক শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানী ও সহ-প্রচার সম্পাদক আমীরুল ইসলাম আলিমের পরিচালনায় সভায় আরও বক্তব্য দেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন, মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান, সহসাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, শহীদুল ইসলাম বাবুল, মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার প্রমুখ।
এ ছাড়াও গুম হওয়া পরিবারের কয়েক সদস্যও বক্তব্য দেন।