ব্রিটিশ পররাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক উন্নয়নবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী অ্যালিস্টার বার্ট বলেছেন, বাংলাদেশে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সবার অংশগ্রহণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যুক্তরাজ্য আশা করে, বাংলাদেশে আগামী নির্বাচন সম্পূর্ণ অংশগ্রহণমূলক হবে।
তিনি বৃহস্পতিবার ঢাকায় ব্রিটিশ হাইকমিশনের ক্লাবে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিমত ব্যক্ত করেন। এ সময় ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার অ্যালিসন ব্লেক উপস্থিত ছিলেন।
রোহিঙ্গা সংকটের বছর পূর্ণ হওয়া উপলক্ষে ব্রিটিশ প্রতিমন্ত্রী অ্যালিস্টার বার্ট এই সফরে আসেন। তিনি কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেন। ঢাকায় তিনি পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এম. শাহরিয়ার আলমের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বাধীন একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গেও তিনি বৈঠক করেছেন বলে বিএনপির একটি সূত্র জানায়।
ব্রিটিশ সাহায্যপুষ্ট প্রকল্পও পরিদর্শন করেন ব্রিটিশ এই প্রতিমন্ত্রী।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের সঙ্গে বৈঠকে তারেক রহমান ইস্যুতে কোনো আলোচনা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে বার্ট বলেন, কোনো ব্যক্তিবিশেষের বিষয়ে আলোচনা করিনি। ব্যাপক ও বিস্তৃত বিষয়ে আলোচনা করেছি। নির্বাচনের ব্যাপারে যুক্তরাজ্যের অবস্থানে কোনো পরিবর্তন হয়নি। নির্বাচনে সবার অংশগ্রহণ জরুরি বলে মনে করি।
অ্যালিস্টার বার্ট বলেন, রোহিঙ্গা সংকটের এক বছরপূর্তিতে এ সফর করেছি। এ সংকটের ব্যাপারে যুক্তরাজ্যের প্রবল আগ্রহ আছে। এই সংকট নিয়ে আমরা খুবই উদ্বিগ্ন। রোহিঙ্গাদের জোর করে মিয়ানমার থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বাংলাদেশে তাদের জন্য মানবিক সহায়তা হিসেবে যুক্তরাজ্য সর্বপ্রথম ১২ কোটি ৯০ লাখ পাউন্ড বরাদ্দ দিয়েছে। রোহিঙ্গাদের খাদ্য, পানি, স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও কাপড়ের ব্যবস্থা করার লক্ষ্যে এই সাহায্য।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের অবশ্যই নিরাপদে নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে। পাশাপাশি, রোহিঙ্গাদের ওপর যারা নিষ্ঠুরতা চালিয়েছে তাদের দায়মুক্তি দেয়া যাবে না। তাদের অবশ্যই জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। পাশাপাশি, রোহিঙ্গাদের জীবনযাপনের ব্যবস্থা করতে হবে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের পাশে থাকবে যুক্তরাজ্য।
অ্যালিস্টার বার্ট বলেন, জাতিসংঘ ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন নানা প্রমাণ পেয়েছে তাতে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিষয় নিয়ে আলোচনার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি আইনি তবে বিশ্বের সামনে এক বিরাট চ্যালেঞ্জ।
রোহিঙ্গাদের ওপর দমনপীড়নের জন্যে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে দায়ী করা হলেও বেসামরিক সরকারকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কিছুই বলছে না কেন জানতে চাইলে ব্রিটিশ প্রতিমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাজ্য মনে করে স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চির অনেক কিছু করার আছে। তার জাতিসংঘ ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের বক্তব্যের ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া দেখানো প্রয়োজন। যুক্তরাজ্য রোহিঙ্গা সংকটের বিষয়ে বাংলাদেশকে সমর্থন দিয়ে যাবে। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিষয়ে মিয়ানমারের প্রতিক্রিয়ার বিষয়ে আমাদের অপেক্ষা করতে হবে।
ব্রিটিশ প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, রোহিঙ্গা সংকট একটি জটিল সমস্যা। রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর বিষয়ে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার যে চুক্তি করেছে তার ওপর ভিত্তি করে আরও অনেক কিছু করতে হবে। রোহিঙ্গাদের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলতে হবে। প্রত্যাবাসনে তারা যাতে নিরাপদবোধ করে সেই ব্যবস্থা করতে হবে।