আ’লীগের শেষ বছর: বি. চৌধুরী

ডেস্ক রিপোর্ট

সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিকল্পধারা বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেছেন, ‘পাকিস্তান আমলে আইয়ুব খান ছিল বড় স্বৈরাচার। ১০ বছরের বেশি টেকেনি। দ্বিতীয় স্বৈরাচার হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। কত বছর টিকেছে? আশ্চর্যজনক, ১০ বছর টিকেছে। এখন যে স্বেচ্ছাচারী সরকার আছে তাদের মেয়াদও ১০ বছর। অনেক সহ্য করেছি, ১০ বছর হয়ে গেছে, এবার চলে যাও। আমার মনে হয়, এটাই আওয়ামী লীগের শেষ বছর।’

তিনি বলেন, ‘এক স্বেচ্ছাচারীর পরিবর্তে অন্য স্বেচ্ছাচারীকে আমরা ক্ষমতায় আসতে দেব না। যারাই গণতন্ত্রের পক্ষে, আমরা তাদের সঙ্গে থাকব। শুধু মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে যারা ছিল আমরা তাদের সঙ্গে যাব না, এটা পরিষ্কার। আমরা চাই এ সরকার নির্বাচনকালীনের জন্য একটি নিরপেক্ষ সরকারের ব্যবস্থা করবে। আমরা নির্বাচন বর্জনের কথা বলি না, সরকারকে বাধ্য করব নিরপেক্ষ সরকারের ব্যবস্থা করতে।’

দেশের পরিস্থিতি এমন দিকে যাচ্ছে যে, নির্বাচন নাও হতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেন ড. কামাল হোসেন।
তিনি বলেন, ‘আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য নির্বাচন হওয় প্রয়োজন। আর নির্বাচন হলে যেন ভোট চুরি না হয় সেদিকে নজর রাখতে হবে। যারা নির্বাচনকে অন্যদিকে প্রভাবিত করে সুশাসনের পরিবর্তে কুশাসন সৃষ্টি করতে চায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।’

শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জেএসডি আয়োজিত ‘গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার : প্রেক্ষিত ও করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় অধ্যাপক ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী ও ড. কামাল হোসেন এসব কথা বলেন।

জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রবের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন সংবিধানপ্রণেতা ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন, নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না এবং জেএসডির সভাপতি তানিয়া রব। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক রতন মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

বি. চৌধুরী বলেন, ‘আমরা একটা কথা প্রায়ই শুনি, বাংলাদেশে নাকি ষড়যন্ত্রের রাজনীতি হচ্ছে। বিদেশিদের সঙ্গে বসে নাকি ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। দেশে একটি অন্যরকমের সরকার, সংবিধানের বাইরের সরকারের জন্য নাকি ষড়যন্ত্র হচ্ছে। আমরা স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিতে চাই, আমরা কোনো ষড়যন্ত্রের অংশীদার নই। অসাংবিধানিক কোনো সরকারকে আমরা স্বীকৃতি দেব না। অগণতান্ত্রিক সরকারকে আমরা মেনে নেব না।’

ভোট চুরি এবং মানুষের দৃষ্টি অন্যদিকে সরিয়ে নিতে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) নিয়ে সরকার ষড়যন্ত্র করছে- দাবি করে বি. চৌধুরী বলেন, ‘শেষ পর্যায়ে এসে কত লাখ বা কোটি ভুয়া ভোটার তারা তৈরি করেছে তা আমরা জানি না। আমরা ওইদিকে যাইনি। আমরা তো ইভিএম নিয়ে মেতে আছি।’

তিনি বলেন, ‘ইভিএমে দুই ধরনের ষড়যন্ত্র আছে। একটি হলো- ভোট চুরির ষড়যন্ত্র। অপরটি হলো- মানুষের দৃষ্টি কেড়ে নিয়ে রাত-দিন খালি ইভিএম নিয়ে পড়ে থাকা। ছেলেমেয়ে ও বাচ্চাদের ওপর যেসব জুলুম হয়েছে সেটা যেন মানুষ ভুলে যায় সে ব্যবস্থা করা’।

সংসদ ভেঙে দেয়ার দাবি জানিয়ে বি. চৌধুরী বলেন, ‘সংসদ ভেঙে না দিলে নির্বাচন নিরপেক্ষ হবে না। তাই নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে সংসদ ভেঙে দিতে হবে এবং নির্বাচন কমিশনকে নিরপেক্ষ হতে হবে। সেই সঙ্গে সামরিক বাহিনীকে ব্যবহার করতে হবে। সামরিক বাহিনীকে নির্বাচনের এক মাস আগেই ব্যবহার করতে হবে এবং তাদের ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিতে হবে।’

সভাপতির বক্তব্যে আ স ম রব বলেন, ‘যুক্তফ্রন্ট-গণফ্রন্ট মিলে যে ঐক্য হয়েছে আমরা এটাকে বৃহত্তর জাতীয় ঐক্যে নিয়ে যাব। স্বৈরাচার সরকার ও স্বাধীনতাবিরোধীরা ছাড়া বাংলাদেশের সবাইকে আহবান জানাব আমাদের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য।’

 

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে