তৃতীয় দিনের তৃতীয় সেশনে সাউদাম্পটনের পিচে সেভাবে নিজেদের মেলে ধরতে পারলেন ভারতের বোলাররা। সবমিলিয়ে প্রথম ইনিংসে যতটা সহজে ইংরেজ ব্যটসম্যানদের মাটি ধরাতে পেরেছিল ভারতের পেস অ্যাটাক, দ্বিতীয় ইনিংসে ততটা সহজ হল না কাজটা। গোটা দিন ৮৮ ওভার হাত ঘুরিয়েও ইংল্যান্ডের সবকটি উইকেট তুলে নিতে ব্যর্থ বুমরা-সামি-ঈশান্তরা।
প্রথম ইনিংসের ধাক্কা সামলে দ্বিতীয় ইনিংসে নিজেদের বেশ ভালভাবেই মেলে ধরলেন ইংরেজ ব্যাটসম্যানরা। তৃতীয়দিনের শেষে ইংল্যান্ডের রান ৮ উইকেটে ২৬০। সৌজন্যে অধিনায়ক রুটের ৪৮ ও বাটলারের ৬৯। যোগ্য সহায়তা করলেন জেনিংস (৩৬)। দিনের শেষে ৩৭ রানে ক্রিজে রয়েছেন প্রথম ইনিংসের সবচেয়ে সফল ব্যাটসম্যান কুরান। ক্রমেই দলের জন্য অপরিহার্য হয়ে উঠছেন এই অলরাউন্ডার।
সিরিজে ঐতিহাসিক সমতা ফিরিয়ে আনতে চলতি সাউদাম্পটন টেস্টে জয় ছাড়া কোন গতি নেই কোহলিদের। সেই লক্ষ্যে বোলারদের বদান্যতায় এবং পূজারার লড়াকু ব্যাটিংয়ে ভর করে প্রথম ইনিংসে ২৭ রানে এগিয়ে যায় ভারত।
দ্বিতীয় ইনিংসে আরও একবার রুটদের চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিতে বোলারদের শরণাপন্ন হতে হয় কোহলিদের। সেই লক্ষ্যে তৃতীয় দিনের শুরুটা ভালোই করেন বুমরা-সামিরা। ৩৩ রানের মধ্যেই ইংল্যান্ডের দু’টি উইকেট তুলে নেন তাঁরা। সিরিজে খারাপ ফর্ম অব্যাহত ওপেনার অ্যালেস্টার কুকের। ১২ রানে বুমরার বলে কট বিহাইন্ড হয়ে ফেরেন তিনি।
এরপর মাত্র ৯ রানে ঈশান্ত শর্মার বলে আউট হয়ে ফেরেন মঈন আলি। তবে প্রাথমিক ধাক্কা সামলে ইংল্যান্ডের ইনিংসে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন জেনিংস এবং অধিনায়ক রুট৷ চতুর্থ উইকেটে ৫৯ রান যোগ করে তৃতীয়দিন মধ্যাহ্নভোজের ঠিক আগের ডেলিভারিতেই আউট হন জেনিংস। সামির বলে এলবিডব্লু হয়ে ফেরেন তিনি। ৯২ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে এদিন মধ্যাহ্নভোজের বিরতিতে যায় ইংল্যান্ড।
বিরতির থেকে ফিরে এসে প্রথম বলেই ফের উইকেট হারায় ইংরেজরা। সামির দুরন্ত ইনস্যুইঙ্গারে ঠকে যান বেয়ারস্টো। প্রথম বলেই শুন্য রানে ক্লিন বোল্ড হয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন তিনি। উল্টোদিকে যদিও ক্রিজ আঁকড়ে পড়েছিলেন রুট। কিন্তু ব্যক্তিগত ৪৮ রানের মাথায় রান আউট হয়ে খেলার রং কিছুটা পাল্টে দেন ইংরেজ অধিনায়ক। ১২২ রানে পঞ্চম উইকেটের পতন হয় ইংল্যান্ডের। ৫ উইকেটে ১৫২ রান নিয়ে চা বিরতিতে যায় ইংল্যান্ড।
ফিরে এসে তৃতীয় সেশনের শুরুতেই স্টোকসের উইকেট হারায় ইংল্যান্ড। দলের ব্যাটিংয়ের হাল ধরেন বাটলার-কুরান জুটি। সপ্তম উইকেটে ৫৫ রান যোগ করে ভারতকে ব্যাকফুটে ঠেলে দেয় এই জুটি। অর্ধশতরান পূর্ণ করে বাটলার ৬০ রানে আউট হলেও দিনের শেষ অবধি টলানো যায়নি কুরানকে। ৩৭ রানে অপরাজিত তিনি। দিনের শেষ বলে সামির ডেলিভারিতে ১১ রানে আউট হন রশিদ।
তৃতীয় দিনের শেষে ইংল্যান্ডের রান ৮ উইকেটে ২৬০। ভারতের থেকে তারা এগিয়ে ২৩৩ রানে। সবমিলিয়ে চলতি সিরিজে চতুর্থ ইনিংসে ভারতের যা ব্যটিং পারফরম্যান্স তাতে চতুর্থ দিনের শুরুতেই ইংল্যান্ডের বাকি দুটি উইকেট না তুলে নিতে পারলে ম্যাচে কোণঠাসা হয়ে পড়বেন কোহলিরা। ফলে টাইটানিকের শহরে রুটদের ডুবিয়ে সিরিজে সমতা ফেরানোর স্বপ্ন অধরাই রয়ে যাবে ভারতের। পাশা পাল্টে চতুর্থদিন ম্যাচের রাশ ফের নিজেদের দখলে নিতে পারেন কিনা কোহলিরা, এখন সেটাই দেখার।