সরকারের নির্দেশেই খালেদা জিয়া বন্দি : রিজভী

ডেস্ক রিপোর্ট

ফাইল ছবি

‘বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়টি আওয়ামী লীগ নয়, নির্ভর করছে আদালতের ওপর……’ ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বিএনপি বলছে, সরকারের নির্দেশেই বেগম জিয়া কারাগারে আটকে আছেন। তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জামিন বার বার বাধাগ্রস্ত করছে সরকার। তিনি একের পর এক মামলায় উচ্চ আদালত থেকে জামিন পেলেও আবার তা নানা কায়দায় আটকে দিচ্ছে সরকার। সরকারের নির্দেশেই বেগম জিয়া কারাগারে আটকে আছে।

আজ রোববার সকালে নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এসব বলেন।

universel cardiac hospital

এছাড়া গতকাল ঢাকা সহ সারাদেশে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর জনসভা শান্তিপূর্ণভাবে সফল করায় সংশ্লিষ্ট নেতাকর্মীদেরকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানিয়েছেন বলে জানান রিজভী।

গতকাল রাতে বিএনপির জনসভার বক্তব্য নিয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘আইনি প্রক্রিয়া ছাড়া বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি সম্ভব নয়, এক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করবে না সরকার। একইসঙ্গে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে বিএনপির সরকার পদত্যাগের দাবিকে নাকচ করে দিয়ে কাদের বলেন, সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে।

এই প্রতিক্রিয়ায় রিজভী বলেন, ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। জনগণ আওয়ামী লীগের বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করেছে। গতকালের জনসভায় বিপুল মানুষের সমাগমেই প্রমাণিত হয়েছে জনগণ এ সরকারকে আর চায় না।

তিনি সরকারের উদ্দেশে বলেন, নির্বাচন নিয়ে সংবিধানের দোহাই দিচ্ছেন আওয়ামী মন্ত্রীরা। কিন্তু সংবিধান তো পরিবর্তন করেছেন আপনারা। আজীবন ক্ষমতায় থাকার জন্য ত্রয়োদশ সংশোধনী আইন বাতিলের মাধ্যমে আপনারা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করেছেন। সুতরাং গতকালের ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য অগ্রহণযোগ্য ও সত্যের অপলাপ।

রিজভী বলেন, যতই ষড়যন্ত্র ও অপচেষ্টা ও অপলাপ করুন না কেনো আপনাদের এবার বিদায় নিতেই হবে। অবিলম্বে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে। সরকারকে পদত্যাগ করে সংসদ ভেঙ্গে নির্বাচন দিতে হবে। নির্বাচনে সেনা মোতায়েন করতে হবে। নির্বাচন নিয়ে সংবিধানের দোহাই দিয়ে কোনো গড়িমসি চলবে না। জনগণের ভোট জনগণ দিতে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের কোনো বিকল্প নেই। শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচন জনগণ হতে দিবে না।

রিজভী বলেন, জালিয়াতির মেশিন ইভিএম ব্যবহার নিয়ে নীলনকশা বন্ধ করুন। পৃথিবীর অন্যান্য স্বল্প সংখ্যক দেশে যারা ইভিএম চালু করেছিল তারাও এ পদ্ধতি নিষিদ্ধ করেছে। অথচ সকল প্রতিবাদ উপেক্ষা করে কেনো এ গণবিরোধী সরকার ইভিএম মেশিন দিয়ে ভোট করতে চায়, সেটি এখন জনগণ টের পেয়ে গেছে। সারাবিশ্বব্যাপি ইভিএম নিয়ে সন্দেহ প্রবণ এ মাধ্যম বন্ধ করে দিচ্ছে তখন বাংলাদেশের ভোটারবিহীন সরকার এ মেশিন চালু করতে এতো উৎসাহি কেনো তা সুস্পষ্ট। এক শুভঙ্করের ফাঁক দিয়ে তিনি বাজিমাত করতে চান। তবে তার দুরভিসন্ধি জনগণের কাছে ধরা পড়ে গেছে। ভোট ডাকাতির বিপক্ষে ও অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের পক্ষেই বাংলাদেশের জনগণ।

সারাদেশে বিভিন্ন স্থানে বিএনপির নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের চিত্র তুলে ধরে রিজভী আরো বলেন, গতকাল বিএনপির ৪০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দেশব্যাপী আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিএনপির নেতাকর্মীদেরকে গ্রেফতার, বাড়ীতে-বাড়ীতে হানা ও কর্মসূচী স্থলে আসার পথে ব্যাপকভাবে বাধা দিয়েছে। গতকাল ঢাকার বিশাল জনসমাবেশে আসার সময় পথে গাড়ী আটকে দিয়ে নেতাকর্মীদের নামিয়ে দেয়া হয়েছে এবং ঢাকার প্রবেশ পথে বিএনপি নেতাকর্মীদের বহনকারী যানবাহনকেও সমাবেশ স্থলে ঢুকতে দেয়া হয়নি।

এছাড়া গতকাল বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বগুড়া, নাটোর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, শেরপুর, নেত্রকোনা, নওগাঁর আত্রাইসহ বিভিন্নস্থানে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে বাধা দিয়েছে এবং হামলা করেছে পুলিশ ও সরকার দলীয় সন্ত্রাসীরা। পুলিশী বাধা উপেক্ষা করেও প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মস–চি পালন করে বিএনপি। আমি বিএনপির পক্ষ থেকে গ্রেফতার ও হামলার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে আটককৃতদের মুক্তি দাবি করছি।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে