ডেস্ক রিপোর্ট
আওয়ামী লীগ নিজেদের সুবিধামতো অসংখ্যবার সংবিধান কাটছাঁট করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, এখন সবচেয়ে বড় সংকট নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার।
মির্জা ফখরুল বলেন, অবাধ নিরপেক্ষ সরকার ব্যবস্থার কথা নাকচ করে দিয়ে তিনি (প্রধানমন্ত্রী) বলেছেন- সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে। দলের সুবিধামতো সংবিধানতো অসংখ্যবার তারা কাটছাঁট করেছেন।
প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে সোমবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতিতে একটি অনুষ্ঠানে যোগদান শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
বাংলাদেশ ইয়ুথ পার্লামেন্ট-২০১৮ এ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি মহাসচিব। ইয়ুথ ফোরাম আয়োজিত এই অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন দেয়ার কোনো ইচ্ছা বর্তমান সরকারের নেই। সামনে নির্বাচন, অথচ আজ বিরোধীপক্ষের নেতাকর্মীদের ধরপাকড় শুরু করছে। আর এর মাধ্যমে তারা একটা নির্বাচন করতে চাইছে।
‘প্রধানমন্ত্রী বলছেন, দেশে গণতন্ত্র আছে। এটি কোন গণতন্ত্র? যেখানে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার, নির্যাতন করা হবে আর সরকারি দল নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাবে। এভাবেতো সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না’ যোগ করেন তিনি।
সংলাপের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এর আগে ২০১২-১৩ সালেও তারা সংলাপের দাবি উপেক্ষা করেছিল, পরে সংলাপে বাধ্য হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা জনগণের দাবি নিয়ে লড়াই করছি। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন, জনগণের রায় প্রদান এসবতো বিএনপির দাবি নয়, জনগণের দাবি। আমরা জনগণের ভোটাধিকার, গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিতে লড়াই করে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, আমরা সংসদে জনগণের প্রতিনিধিত্ব চাই, আর সেটি জনগণেরই দাবি। আমরা শুধু জনগণের দাবির প্রতি সমর্থন রেখে একটি প্রতিনিধিত্বশীল সংসদের জন্য আন্দোলন করছি। যেখানে সবাই জনগণের কাছে জবাব দিতে বাধ্য থাকবে।
‘আর এ জন্যই খালেদা জিয়া কারাগারে। বিরোধী রাজনৈতিক দলের অনেক নেতাকর্মী কারাগারে আছে। এ অবস্থার পরিবর্তনের জন্য জনগণই ব্যবস্থা নেবে, তারাই সেটির জবাব দেবে’ যোগ করেন মির্জা ফখরুল।
ইয়ুথ পার্লামেন্ট ২০১৮-এর অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, আজ যারা যুবক আছে, তারা আগামী প্রজন্মকে স্বপ্ন দেখাবেন। দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন। আগামীর বাংলাদেশ হবে সত্যিকারের একটি সুখী-সমৃদ্ধ গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ।
ফখরুল বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাদের সামনে স্বপ্ন ছিল- সুখী, গণতান্ত্রিক, সমৃদ্ধ ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার। দুঃখের বিষয় ৪৮ বছর পরও সেই স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করা তো দূরের কথা, দেখতেও পাচ্ছি না।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক মাহবুব উদ্দিন খোকন, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক মুভমেন্টের চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জুনায়েদ সাকি প্রমুখ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ইয়ুথ পার্লামেন্টের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম মুনীর। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ইয়ুথ পার্লামেন্টিয়ানরা উপস্থিত ছিলেন।