যুক্তফ্রন্ট নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর হাসিঠাট্টার জবাবে যা বললেন ড. কামাল

ডেস্ক রিপোর্ট

বাংলাদেশে নতুন একটি রাজনৈতিক জোট এবং তাদের নেতাদের নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে যেভাবে ঠাট্টা তামাশা করেছেন- তা বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

যুক্তফ্রন্ট নামে সদ্য গঠিত ওই জোটের নেতাদের নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য নিয়ে পত্রপত্রিকায়, সোস্যাল মিডিয়ায় বেশ চর্চা চলছে।

যেমন নতুন জোটের অন্যতম নেতা ড. কামাল হোসেন সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেন, তিনি যখন গরম বক্তৃতা দেবেন, তখন ধরে নেবেন তার প্লেন রেডি।

তার ও তাদের জোট সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীর এ ধরনের মন্তব্যকে তিনি কিভাবে দেখছেন জানতে চাইলে ড. কামাল হোসেন বিবিসিকে বলেছেন, এসব নিয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করতে চান না। তবে তিনি বলেছেন, শেখ হাসিনা যে নতুন জোটকে স্বাগত জানিয়েছেন, সেটি ইতিবাচক।

জনগণের কাছে নতুন এ জোটের গ্রহণযোগ্যতার ব্যাপারে যে প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন তুলেছেন, সে বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা তো ওনার সমর্থনে কিছু করিনি, স্বাধীনভাবে করেছি, তাই এ বিষয়ে তো তিনি প্রশ্ন তুলতেই পারেন।’

ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘মানুষ এটি ভালোভাবেই জানে যে ২০০৮ সালে আমরা কী করেছিলাম। আমাদের জোটে যারা আছেন, ২০০৮ সালে নির্বাচন হওয়ার ব্যাপারে তাদের কী অবদান সেটি সবাই জানেন।’

‘ভোটার তালিকা বাতিল করার জন্য আমি মামলা করেছিলাম। তখন এক কোটি ৪৪ লাখ ভোট বাতিল করা হলো। নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করালাম। ইয়াজউদ্দিন আহমদকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারপ্রধানের পদ থেকে সরালাম। তখন আমাদের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার মামলা হলো। এসব অবদানের কথা তো অনস্বীকার্য’- বলেন তিনি।

যুক্তফ্রন্টের এই নেতা বলেন, তাদের নতুন জোট চাইছে বাংলাদেশে সত্যিকার অর্থে কার্যকর গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে। যদি জনমত নেয়া যায় তাহলে দেখবেন যে শতভাগ সমর্থন এর পক্ষে আছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে গত চার-পাঁচ বছরে গণতন্ত্রের কথা বলা হয়েছে কিন্তু সে রকম কিছুই করা হয়নি। মনোনীত লোকজনদের নিয়ে সংসদ বানানো হয়েছে কিন্তু সংসদীয় গণতন্ত্রের নাম-গন্ধ কেউ পায়নি।

এটি করার জন্য নতুন জোটের সেই শক্তি কী আছে- এ প্রশ্নের জবাবে ড. কামাল হোসেন বলেন, আমাদের শক্তি শূন্য বলে ধরে নিচ্ছি, কিন্তু জনগণের সেই শক্তি আছে। আমাদের কথাবার্তা তো জনগণের কাছে নিয়ে যাচ্ছি। জনমত যাচাই করে দেখেন তারা পরিবর্তন চাচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নতুন এই জোটের কয়েকজন নেতাকে নিয়ে হাসিঠাট্টা করেছেন। তাদের নিয়ে ছড়াও কেটেছেন।

যুক্তফ্রন্টের নেতাদের ইঙ্গিত করে সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, বাংলাদেশে কিছু মানুষ আছে যারা গণতন্ত্রের কথা বলেন কিন্তু তারা অগণতান্ত্রিক উপায়ে ক্ষমতায় আসার চেষ্টা করেন। তারা উত্তর পাড়ার (ক্যান্টনমেন্ট) দিকে তাকিয়ে থাকেন- এ মন্তব্যের জবাবে কামাল হোসেন বলেন, এ বক্তব্য তাদের ব্যাপারে প্রযোজ্য নয়।

শেখ হাসিনা বলেছিলেন, ‘আদৌ নির্বাচন হবে কি না যারা বলেন তারা হয়তো বসে আছেন… কোনো কিছু হলে সব উত্তর পাড়ার দিকে তাকিয়ে বসে থাকে। এটিই তো বাস্তবতা। যেমন আমার বাবাকে হত্যা করেছে। যিনি এই দেশটা স্বাধীন করে দিয়ে গেলেন তাকে যারা খুন করতে পারে তো সে দেশে কি না হতে পারে!’

এর জবাবে কামাল হোসেন বলেছেন, ‘২০০৮ সালে আমরা যা করেছি সেটি তো গোপনে করিনি। আমি মামলা করে সব ভুয়া ভোটার বাতিল করলাম, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করলাম- এসব উত্তর পাড়ার কোনো ব্যাপার নয়। তাদের সাথে আমাদের কোনো দিন সম্পর্ক ছিল না।’
বিএনপির সাথে যুক্তফ্রন্টের কোনো রাজনৈতিক ঐক্য হওয়ার সম্ভাবনা আছে কি না জানতে চাইলে ড. কামাল হোসেন বলেন, এ বিষয়ে বিএনপির সাথে তাদের কোনো কথা হয়নি। তবে এ বিষয়ে নীতিগত ইস্যুতে আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে।যদি হয় তখন দেখা যাবে।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে