কলমাকান্দায় লেংগুরা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোশারফ হোসেন ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি রফিকুল ইসলাম গোলাপের বিরুদ্ধে লাইব্রেরিয়ান পদে নিয়োগ নিয়ে অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভুগীদের অভিযোগ আর কত জন আবেদন করলে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে?
গত মঙ্গলবার লাইব্রেরিয়ান পদে আবেদনকারী শিল্পী রানী সাহা জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবরে এক লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। স্থানীয় সংসদ সদস্য, জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে এর অনুলিপি দেয়া হয়।
ওই পদে আবেদনকারী শিল্পী রানী সাহা স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেন, লেংগুরা উচ্চ বিদ্যালয়ে লাইব্রেরিয়ান পদে নিয়োগ সংক্রান্ত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি পেয়ে আমিসহ ওই পদে আরো ১০-১২ জন আবেদন করি। কিন্তু ওই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন না করেই প্রধান শিক্ষক মোশারফ হোসেন ও সভাপতি রফিকুল ইসলাম গোলাপ ৯ জানুয়ারি পুনঃ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। আর ওই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয় যে, পূর্বের আবেদনকারীদের নতুন করে আবেদনর প্রয়োজন নেই।
পত্রিকায় দুইবার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেও তাদের কাঙ্খিত অর্থ প্রদানকারী প্রার্থী না পেয়ে ১৯ আগস্ট তৃতীয় বারের মতো নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রদান করেন। দ্বিতীয় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছিল যারা পূর্বে আবেদন করেছেন তাদের নতুন করে আবেদনের প্রয়োজন নেই। কিন্তু তৃতীয় পর্যায়ের বিজ্ঞপ্তিতে এমনটি উল্লেখ নেই। তিনি আরও আক্ষেপের সহিত বলেন আর কতজন আবেদন করলে এ নিয়োগ পক্রিয়া সম্পন্ন হবে ?
শিল্পী রানী সাহার স্বামী নির্মল কর স্থানীয় সাংবাদিকদের জানান, আবেদনের পর বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও পরিচালনা কমিটির সভাপতি তার স্ত্রীর কাছে চাকরির জন্য ৫ লক্ষ টাকা দাবি করেন। এসময় তার স্ত্রী টাকা দেয়ার বিষয়ে অপারগতা প্রকাশ করলে সভাপতি বলেন, টাকা না দিলে চাকরি হবে না। এ পরিস্থিতিতে তিনি বাজারদরের চেয়ে কম মূল্যে জমি বিক্রি করে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি রফিকুল ইসলাম গোলাপকে ৫ লক্ষ টাকা দিয়েছেন। এছাড়াও আরও তিন জনের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়েছেন প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি।
ওই পদে আবেদনকারী রিক্তা রানী সরকার ও শুভরঞ্জন একই রকম মন্তব্য করে বলেন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, পরিচালনা কমিটির সভাপতি যে নিয়োগ বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন তা অবিলম্বে সংশ্লিষ্ট বিভাগের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক মোশারফ হোসেন ও সভাপতি রফিকুল ইসলাম গোলাম তৃতীয় পর্যায়ে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে পূর্বে আবেদনকারীদের আবেদন নি®প্রয়োজন এমনটি উল্লেখ নেই স্বীকার করেন। তবে তাদের বিরোদ্ধে আনিত অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেন।
এ ব্যাপারে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ওয়ালিউল্লাহ প্রতিনিধিকে বলেন, লেংগুরা উচ্চ বিদ্যালয়ের লাইব্রেরিয়ান পদে নিয়োগ সংক্রান্ত জটিলতা নিরসন করতে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সভাপতিকে আমার কার্যালয়ে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম। কিন্তু তারা সাড়া দেয়নি। অভিযোগের ভিত্তিতে বিষয়টি তদন্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
স্থানীয় সংসদ সদস্য ছবি বিশ্বাস মত ও পথ প্রতিনিধিকে বলেন, বছরখানেক ধরে ওই বিদ্যালয়ে নিয়োগ সংক্রান্ত জটিলতা ও বিভিন্ন অনিয়মের বিষয় স্থানীয় লোকজন থেকে শুনেছি। বর্তমান সরকার যেখানে শিক্ষার মানোন্নয়নে সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সেখানে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও পরিচালনা কমিটির সভাপতির নিয়োগ বাণিজ্য কোনো ভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।