পাক-ভারত ম্যাচ বলতে যে রকম টান টান উত্তেজনার ম্যাচ বুঝায়, তেমনটি দেখা যায়নি আজ সাফ ফুটবলের সেমি-ফাইনালে। ভারতের অনুর্ধ-২৩ দলটিই কোনঠাসা করে রেখেছে পাকিস্তান জাতীয় দলকে। চির প্রতিদ্বন্দ্বি দলটিকেকে ৩-১ গোলে হারিয়ে সাফ সুজুকি কাপের ফাইনালে উঠেছে ভারত।
বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় সেমি-ফাইনালে মানবীর সিংয়ের জোড়া গোলে বড় জয় পায় ভারত। দলের হয়ে বাকী গোলটি করেছেন ভারতের আরেক ফরোয়ার্ড সুমিত পাসি। পাকিস্তানের হয়ে ব্যবধান ঘোঁচানো একমাত্র গোলটি করেন হাসান বশির। এ নিয়ে এগারো বারের মতো ফাইনাল খেলার ছাড়পত্র পেলো ভারত। শুধুমাত্র ২০০৩ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত আসরের সেমি ফাইনাল থেকেই বিদায় নিতে হয়েছিল ভারতীয়দের।
ম্যাচের ৭ম মিনিটে প্রথম আক্রমন রচনা করে পাকিস্তান। মেহমুদ খানের ক্রসের বলে সতীর্থ মোহাম্মদ রিয়াজ হেড করলে সেটি বার ঘেষে মাঠের বাইরে চলে যায়। পরের মিনিটে হাসান বশিরের ডান পায়ের শটটিও বক্সকে পাশে রেখে সাইড লাইন পেরিয়ে যায়।
৯ম মিনিটে প্রতি আক্রমনে যায় ভারত। আশিক কুরুনিয়ানের ক্রসের বলে মানবীর সিং শট নিলে সেটি খুঁজে পায়নি পাকিস্তানের জাল। ১৬ ও ১৮তম মিনিটে পর পর দুটি গোলের সুযোগ সৃষ্টি করেও সফল হয়নি ভারত। সারতাক গুলুই ও মানবীর সিংয়ের শট দুটি লক্ষ্য ভ্রস্ট হয়। ২৩ ও ২৫তম মিনিটে ফের সুযোগ পেয়ে কাজে লাগাতে পারেনি ওই দুই ভারতীয়। ২৭তম মিনিটে ভারতের হয়ে গোল করতে ব্যর্থ হয়েছেন আশিক কুরুনিয়ান। ম্যাচের ৪৪তম মিনিটে পাকিস্তানী ফরোয়ার্ড হাসান বশিরের শটের বলও খুঁজে পায়নি ঠিকানা। ফলে গোল শুন্য ড্র নিয়েই বিরতীতে যায় দল দুটি।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই আক্রমণ শানিত করে ভারত। এ অর্ধে যথারীতি ক্লান্ত হয়ে পড়ে পাকিস্তানের খেলোয়াড়রা। সুযোগটি কাজে লাগিয়ে তিনটি গোল আদায় করে নেয় ভারতীয় দলটি। ম্যাচের ৪৮তম মিনিটে পরিশ্রমের সুফল ঘরে তুলে মানবীরর সিং। আশিক কুরুনিয়ানের ক্রসের বলে ডান পায়ের শট দিয়ে গোল করেন তিনি (১-০)। ৬৯তম মিনিটে বিনিত রায়ের বাড়িয়ে দেয়া বল থেকে চমৎকার কৌনিক শটে গোল করে ভারতকে দ্বিগুন ব্যবধানে পৌছে দেন মানবীর (২-০)। ম্যাচে এটি ছিল তার দ্বিতীয় গোল। এরপর ৮৪তম মিনিটে সুমিত পাশির গোলে নিরাপদ অবস্থানে পৌঁছে যায় ভারত। ডান প্রান্ত দিয়ে আশিকের ক্রসের বল ডি বক্সে দর্শণীয় হেডের সাহায্যে জালে জড়িয়ে দেন সুমিত (৩-০)।
এর পরপরই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে দুই দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে। ৮৬তম মিনিটের সময় হাতাহাতিতে লিপ্ত হন পাকিস্তানী ফরোয়ার্ড মহসিন হোসেন এবং বদলী হিসেবে মাঠে নামা ভারতীয় ডিফেন্ডার লালিয়ানজুয়ালা চাংতে। ফলে দুইজনকেই লাল কার্ড দেখিয়ে মাঠ ছাড়া করেন কর্তব্যরত থাইল্যান্ডের রেফারি সিভাকরন পু-উদম।
এর দুই মিনিট পর একটি গোল পরিশোধ করতে সক্ষম হয় পাকিস্তান। ৮৮তম মিনিটে হাসান বশিরের কাছ থেকে বল পেয়ে ডি বক্সের বাইরে থেকেই শট নেন পাকিস্তানি ফরোয়ার্ড মোহাম্মদ আলী। বলটি ভারতের গোল রক্ষক বিশালকে ফাকি দিয়ে জালে আশ্রয় নেয় (৩-১)। ফলে ভারতের কাছে ৩-১ গোলের পরাজয় নিয়ে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নেয় পাকিস্তান।
এদিকে, দিনের প্রথম সেমি ফাইনালে নেপালকে ৩-০ গোলে উড়িয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করে মালদ্বীপ। আগামি ১৫ সেপ্টেম্বর শিরোপা নির্ধারনী ম্যাচে মুখোমুখি হবে ভারত-মালদ্বীপ।
সাফ ফুটবলের ফাইনালে ভারত
ক্রীড়া ডেস্ক