২০৩০ সালের মধ্যেই বাংলাদেশ ৫ম এশিয়ান টাইগার হবে : পরিকল্পনামন্ত্রী

বিশেষ প্রতিনিধি

২০৩০ সালের মধ্যেই বাংলাদেশ ৫ম এশিয়ান টাইগার হিসাবে আবির্ভূত হবে মন্তব্য করেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বলেছেন, আমরা যে লক্ষ্যে যাচ্ছি, যেভাবে যাচ্ছি তাতে ওয়াল্ড ইকোনোমিক ফোরাম ও বিজনেস ইনসাইডারের গবেষণায় বেরিয়ে এসেছে ৫ম এশিয়ান টাইগার হবে বাংলাদেশ।

বৃহস্পতিবার ঢাকার ওয়েস্টিন হোটেলে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সংগঠন বাংলাদেশ-জার্মান চেম্বার অব কমার্স এন্ড এন্ডাস্ট্রি (বিজিসিসিআই) আয়োজিত ব্যবসায়িক নেটওয়ার্কিং বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এসব কথা বলেন।

পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, আমাদেরকে চারটি এশিয়ান টাইগারের সাথে পাল্লা দিয়ে চলতে হবে। কেননা যে চারটি এশিয়ান টাইগার রয়েছে তাদের কেউই ৩০ বছরের বেশী সময় নেয়নি। সময় এখন বাংলাদেশের আমরা সেটাই প্রমাণ করার চেষ্টা করব। ৫ম এশিয়ান টাইগার হতে হলে বাকি চারটি এশিয়ান টাইগার কি করেছে সেটা জানা দরকার। তারা প্রথম দশ বছরে ৭% প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে, পরবর্তী দশ বছরে ৮% এবং পরবর্তী দশ বছরে ৯% প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। সেই একইভাবে আমরা আমাদের অর্থনীতিকে সাজিয়েছি। আমরা প্রথমে ছয় থেকে সাতে এবং এই বছরের শেষ নাগাদ প্রবৃদ্ধি ৮% এর উপরে অর্জন করব। ৮-৯% শতাংশের মধে থাকবো পরবর্তী পাচ বছর। ২০২৫ পর্যন্ত আমরা থাকবো ৯ থেকে সাড়ে ৯ এর মাঝে। পরবর্তী পাঁচ বছরে আমরা অর্জন করব সাড়ে ৯ থেকে ১০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি। যদি আমরা এই কাজটি করতে পারি ২০৩০ সালের মধ্যেই আমরা ৫ম এশিয়ান টাইগার হিসাবে আমরা আবির্ভূত হবো ।

পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, আমাদের অর্থনৈতিক এলাকার আশি ভাগের উপরে বেসরকারি খাত। আমাদের ভবিষ্যৎ চিন্তা আমরা বেসরকারি খাতকে উজ্জীবিত করে, তাদেরকে সকল রকমের সুযোগ সুবিধা প্রদান করবো। এখন আমরা যাবো অধিক শিল্পায়নে যেখানে এখনো আমরা পিছিয়ে আছি। এর মাধ্যমে আমরা কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবো। দারিদ্র কমানো এবং রাজস্ব আদায়ের খাত তৈরি করব। শিল্পায়নে যখন যাব সে সময়ে আমরা লক্ষ্য রাখব যে শিল্পখাতে এমন শক্তিশালী প্রণোদনা দেব পৃথিবীর কোন দেশ দিতে পারবে না এবং আমাদের সাথে প্রতিযোগিতাও করতে পারবে না। ট্যাক্স হলিডে, শুল্ক ছাড়সহ যত ধরনের প্রণোদনা আছে সকল ধরনের প্রণোদনার ক্ষেত্রে আমরা যেকারো থেকে এগিয়ে থাকব। আমরা সকল ক্ষেত্রে এভাবে প্রণোদনা দিব যেটা একটি কাঠামোতে চলে আসবে এবং বছরে বছরে আলাদা রকমের হবে না। ন্যূনতমপক্ষে আমরা মিডটার্ম ভিত্তিতে করব যাতে সবাই জানতে পারে পরবর্তী দশ বছর সে কিভাবে লাভবান হবে। এখন তারা যখন একটি কারখানা বা প্রতিষ্ঠান করে দেখা যাচ্ছে লাভ আছে কিন্তু পরে লাভ থাকে না।

মন্ত্রী বলেন, এটা একটি অনিশ্চয়তা, এর মাঝে শিল্প কারখানা টিকে থাকতে পারে না। সেজন্য সেরকম কিছু হবে না, মাঝারি থেকে লম্বা সময়ের জন্য পরিকল্পনা গ্রহণ করা হবে। আমরা শুনে এসেছি এদেশ থেকে বহু বিনিয়োগ বাইরে চলে গেছে, আমাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে আমরা আমাদের অর্থনীতিকে এমনভাবে সাজাবো যাতে যেসকল বিনিয়োগ বাইরে গিয়েছে সে সমস্ত বিনিয়োগও আবার ফিরে আসবে। সুযোগ সুবিধা পেলে ব্যবসায়ীরা অবশ্যই তারা আবার এদেশে বিনিয়োগ করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন মন্ত্রী। বলেন, আমাদের কাজটি হবে বিনিয়োগ বান্ধব, রফতানি বান্ধব- আমাদের শক্তিশালী অর্থনীতি গড়ে তোলা।

‘আইএমএফ-ওয়াল্ড ব্যাংক যেটি অনুসরণ করে সেই ক্রয়ক্ষমতা সমতার দিক থেকে (পারচেজিং পাওয়ার প্যারিটি- পিপিপি) ২০২৩ সালের মধ্যে বাংলাদেশ দক্ষিণ আফ্রিকা, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সিংগাপুরের, ইরাক, কলম্বিয়ার মত দেশগুলোকে পিছে ফেলে অর্থনৈতিকভাবে সামনের দিকে এগিয়ে যাবে।’

মুস্তফা কামাল আরো বলেন, এখন আমরা র‌্যাংকিংয়ে ৩২ নম্বরে আছি এবং ২০৩০-এ আমরা ৩০ নম্বরে যাবো। এটি নিঃসন্দেহে একটি অসাধারণ অর্জন এদেশের মানুষের জন্য।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে